জলবায়ু পরিবর্তনে বড় ভুক্তভোগী হলো বাংলাদেশ ৷ আর একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগ এর মাত্রাকে বাড়িয়ে দিচ্ছে কয়েকগুণ ৷ উপকূল অঞ্চল শ্যামনগর যেন মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছে না ৷ সিডরের পর থেকে ১০টি প্রাকৃতিক দুর্যোগে এ অঞ্চলের গাছগাছালি সব শেষ করে দিয়ে গেছে৷ এই সব প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে সুন্দরবনেরও অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে ৷ এখন আর সুন্দরবনে উঁচু গাছ দেখা মেলে না ৷

রোববার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানে উপকূলে৷ এরই মধ্যে উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার পথে গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী গ্রামের মৃত নরিম মোড়লের ছেলে শওকাত মোড়ল (৬৫) নামে এক বৃদ্ধ রাস্তায় পড়ে গিয়ে মারা গেছেন ৷

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে কোথাও কোন বেড়িবাঁধ না ভেঙে গেলেও পানি নদীর জোয়ার সাধারণের তুলনায় ৪ ফুট পানি বৃদ্ধির ফলে ১৩টি ঘরবাড়ি পানিবন্দি হয়ে পড়ে ৷

১৩০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে প্রায় ২ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি বৃদ্ধি হয়ে লোকালয়ে প্রবেশ করে।

উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ভুরুলিয়া, কাশিমাড়ী, শ্যামনগর, নুরনগর, কৈখালী, রামজাননগর, মুন্সীগঞ্জ, ঈশ্বরীপুর, বুড়িগোয়ালিনী, আটুলিয়া, পদ্মপুকুর ও গাবুরায় দুর্গত এলাকা থেকে ১৫ লাখ ৭ হাজার ৬শ ৮২ জন মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে গেছেন৷ ১২টি ইউনিয়নে ৫৪১টি ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে৷ এর মধ্যে ৪৪৮টি আংশিক কাঁচা ঘরবাড়ি, ৯৩টি সম্পূর্ণ কাঁচা ঘরবাড়ি।

উপজেলা মৎস্য অফিসার তুষার মজুমদারের তথ্যমতে ৫ শতাধিক মৎস্য ঘের পানিতে ভেসে অনুমানিক ২শ হেক্টর জমিতে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

সারারাতব্যাপী তাণ্ডব চালায় ঘূর্ণিঝড় রেমালে৷ গাছপালা বিদ্যুতের তারের উপর পড়ে কোথাও তার ছিঁড়ে গেছে আবার কোথায় তারের উপর ঝুলে থাকায় প্রায় ১৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে আছে।