পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার ওপর আমাদের অস্তিত্ব নির্ভর করছে। প্রকৃতি ও পরিবেশ সংরক্ষণে আমাদের আরো অধিক সচেতন হতে হবে। বিশ^ পরিবেশ দিবস ২০২৪ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার বাউবির গাজীপুরস্থ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব সম্মেলন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে “বাংলাদেশ ও বিশ^-পরিবেশ” শীর্ষক সেমিনার ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাউবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার এ কথা বলেন।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ^বিদ্যালয় ও বাউবির শিক্ষক সমিতির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় আলোচক ছিলেন- ওয়াইল্ড টিম এর চেয়ারম্যান এবং আরণ্যক ফাউন্ডেশন এর পরিচালক ইনাম আল হক এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন।

আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাউবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. নাসিম বানু, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মাহবুবা নাসরীন, ট্রেজারার অধ্যাপক মোস্তফা আজাদ কামাল। শিক্ষক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ড. মোঃ আব্দুল হামিদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শহীদুর রহমান। আলোচনা সভায় ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন রেজিস্ট্রার ড. মহা: শফিকুল আলম। বাউবির সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুলের সহকারী অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। সভায় বিভিন্ন স্কুলের ডিন, পরিচালক, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন বাউবির বিভিন্ন আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক কেন্দ্রের কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ ও বাউবির শিক্ষার্থীগণ ।

বাউবি উপাচার্য আরো বলেন, প্রতিনিয়ত পৃথিবীতে কার্বনের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং শিল্প বিপ্লবের সময় থেকে কার্বনডাই অক্সাইডের পরিমান বৃদ্ধি পেতে থাকে। যে হারে কার্বনের পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে মানবকুলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। কার্বনের পরিমান কমাতে বনায়নের পরিমান বাড়াতে হবে। উন্নত জীবন যাপনের জন্য প্রকৃতির ভারসাম্য হারাচ্ছে। এতে দীর্ঘ মেয়াদী ক্ষতি হচ্ছে যা পরবর্তী প্রজন্মের জন্য মারাত্বক হুমকি বয়ে নিয়ে আসছে। তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির আহবান জানান উপাচার্য। মুক্ত প্রতিযোগীতার মাধ্যমে ন্যাচারাল হেজার্ড গেম তৈরি করে স্মার্ট ফোনকে কাজে লাগিয়ে বিশ^ পরিবেশ রক্ষা ও সচেতনা বৃদ্ধির আহবান জানান তিনি।

আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ওয়াইল্ড টিম এর চেয়ারম্যান এবং আরণ্যক ফাউন্ডেশন এর পরিচালক বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্ত ও পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক বলেন, মানুষের টিকে থাকার যোগ্য পরিবেশের প্রধান হুমকি বায়ুমন্ডলে ক্রমবর্ধমান কার্বন-ডাইঅক্সাইড। বর্তমানে পৃথিবীর প্রায় এক তৃতীয়াংশ জমিতে বন রয়েছে। পরিবেশ সংরক্ষণ, বিপর্যয় ও জীববৈচিত্র রক্ষার জন্য বন ও প্রকৃতিকে বাঁচাতে হবে। বনভূমি বৃদ্ধি ও সুন্দরবন রক্ষা ও সম্প্রসারণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।

আলোচনা সভার আলোচক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টি এবং প্রাকৃতিক দৃর্যোগ থেকে পরিত্রান পাওয়ার লক্ষ্যে অধিক হারে বৃক্ষ রোপনের ওপর জোর দেন।

এর আগে সকালে বিশ^ পরিবেশ দিবস উপলক্ষ্যে বাউবি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ উপ কমিটির যৌথ উদ্যোগে বাউবি ক্যাম্পাসে উপাচার্যের নেতৃত্বে শোভাযাত্রা ও বৃক্ষ রোপন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।