sunamganjসুনামগঞ্জ জেলার দোয়ারাবাজারে আগুন লেগে সুরমা নদীতে শতাধিক যাত্রীসহ নৌকাডুবির ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ১১ শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ২৫ জন। তবে নিখোঁজ শ্রমিকদের মধ্য ৬০ জনকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোহালিয়া ইউনিয়নের প্রতাবপুর এলাকায় সুরমা নদীতে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। এদিকে স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, সিলেটের কোম্পানিগঞ্জ উপজেলার বোলাগঞ্জ থেকে কাজ শেষে নারী ও শিশুসহ প্রায় শতাধিক যাত্রী নিয়ে একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকা কিশোরগঞ্জের ইটনায় যাওয়ার পথে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আগুন লেগে নৌকাটি সুরমা নিেদত ডুবে যায়। এরপর রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত স্থানীয়দের সহায়তায় পুলিশ ৬টি লাশ উদ্ধার করে। পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে উদ্ধার কাজ অব্যাহত রেখেছে। তবে ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে রাতে উদ্ধার কাজ ব্যাহত হয়। আজ মঙ্গলবার সকালে আবারো উদ্ধার অভিযান শুরু হলে আরো ৫টি লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়। ফলে এখন পর্যন্ত মোট ১১ জনের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। নিহতদের মধ্যে রোকেয়া নামে আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী এক নারীকে শনাক্ত করা গেছে। উদ্ধারকৃত লাশগুলো এতোটাই পুড়ে গেছে যে শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে নিহতদের মধ্যে অন্তত দুটি শিশু রয়েছে বলে উদ্ধারকারীরা জানান। অন্যদিকে সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. হারুন অর রশীদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আগুনে ডুবে যাওয়া ইঞ্জিনচালিত নৌকাটির শতাধিক যাত্রীর মধ্যে অধিকাংশই ছিল পাথর কেয়ারির শ্রমিক। নৌকায় ১৫ থেকে ২০ জন নারী ও শিশু ছিল। তারা ছাতকের ভোলাগঞ্জ থেকে কিশোরগঞ্জের নিকলী, মিঠামইন ও নেত্রকোণার খালিয়াজুড়ি যাচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ৮টার দিকে রান্না করার সময় চুলার আগুন নৌকায় ছড়িয়ে পড়ে। এতে আতঙ্কিত হয়ে যাত্রীরা হুড়োহুড়ি শুরু করলে নৌকাটি দোহালিযা ইউনিয়নের প্রতাপুর এলাকায় নদীতে ডুবে যায়। ডুবে যাওয়া নৌকা থেকে ৪০/৪৫ জন যাত্রী সাঁতারে তীরে উঠতে পারলেও প্রায় অর্ধশত যাত্রী এখনো নিখোঁজ বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতের সংখ্যা আরো বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। উদ্ধার হওয়া লাশ তাদের আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে। একই সাথে নিখোঁজ শ্রমিকদের লাশ উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে এখনো হতাহতদের পরিচয় সম্পর্কে পুরোপুরি জানা যায়নি।