indexমহসিন নামে এক সন্দেহজনক  আসামীকে গ্রেফতার করে থানায় এনে ৪৩ ঘন্টা আটকে রেখে  পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে শিবপুর মডেল থানার ওসি কাজী মিজানুর রহমান, ওসি তদন্ত মনিরুজ্জামান ও কনস্টেবল হানিফ’র বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশী হেফাজতে সংঘটিত এই অমানবিক হত্যাকান্ডের এক সপ্তাহের মাথায়  সোমবার সিদ্দিকুর রহমান নামে একই উপজেলার পুবেরগাও গ্রামের এক মানবাধিকার কর্মী নিজে বাদী হয়ে এই হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং- ৬৬/২০১৪। মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরনে উল্লেখ করা হয়েছে একই উপজেলার বাড়ৈগাও গ্রামের মোঃ সুলতান উদ্দিনের ছেলে মহসিন মিয়া রাজমিস্ত্রীর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। পারিবারিক জীবনে তার পিতামাতা, স্ত্রী এবং দুইটি কন্যা সন্তান রয়েছে। গত ১ ফেব্র“য়ারী শিবপুর থানার ওসি তদন্ত মনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ তার বাড়ীতে গিয়ে তাকে ঘুম থেকে তুলে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। পরের দিন পুলিশ পূনরায় মহসিনকে নিয়ে তার বাড়ী গিয়ে শীতের কাপড় ও মোবাইল সেট নিয়ে আসে। বিধান অনুযায়ী গ্রেফতারের ২৪ ঘন্টার মধ্যে তাকে আদালতে প্রেরণ করার কথা থাকলেও থানা পুলিশ তাকে আদালতে প্রেরণ না করে থানার টর্চার রুমে আটক করে দীর্ঘ ৪৩ ঘন্টা তার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালায়। এই ৪৩ ঘন্টা নির্যাতন চালানোর সময় পুলিশ তাকে কোন খাবার খেতে দেয়নি এবং নির্যাতনে গুরুত্বর আহত হলেও তাকে চিকিৎসা বা ওষধ দেয়া হয়নি। যার ফলে সে অব্যাহত নির্যাতন সইতে না পেরে গত ৩ ফেব্র“য়ারী সকাল অনুমান ৭ টায় মহসিন পুলিশ হেফাজতে টর্চার রুমে হ্যান্ডকাপ পরিহিত অবস্থায় মারা যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর বিক্ষুব্ধ জনতা শিবপুর মডেল থানা ঘেরাও করে পুলিশকে অবরোধ করে রাখে। এক পর্যায়ে পুলিশের উপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে পুলিশ জনতার উপর লাঠিচার্জসহ রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। বাদী পক্ষের আইনজীবি এড. খালেদ আহমেদ লিংকন, এড. আব্দুল কাদির টিটু, এড. রসরাজ মল্লিক নয়ন, এড. আজহারুল ইসলাম খান, এড. আসাদ আলী, এড. মনিরুজ্জামানসহ ১০ জন আইনজীবি আর্জির এই বক্তব্য চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট নিতাই চন্দ্র সাহার আদালতে তুলে ধরেন। এরপর সিনিয়র আইনজীবি এড. বদরুদ্দোজা জিলু, এড. শাহজাহান মিয়া, এড. মোজাম্মেল হক মোমেন জুনিয়র আইনজীবিদের বক্তব্যের উপর আলোকপাত করেন। বাদী পক্ষের বক্তব্য শুনানী শেষে বিজ্ঞ সিজেএম নিতাই চন্দ্র সাহা  মামলাটি নিজ দায়িত্বে তদন্ত করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন পেশ করার জন্য নরসিংদীর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ প্রদান করেন। এদিকে মামলা দায়েরের পর বাদী পক্ষের ফাইলিং আইনজীবি এড. খালেদ আহমেদ লিংকন সাংবাদিকদেরকে জানান, মামলা দায়েরের সময় পুলিশ তাদেরকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধমকি দিয়েছে। মামলা দায়েরের কারনে বাদীকে চাঁদাবাজীর মামলায় ফাসিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।