Ayman-al-Zawahiri-4_784894aভারতীয় উপমহাদেশ ও পশ্চিমাদের ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের মুসলিম সমাজকে উদ্দেশ করে ইন্টারনেটে একটি ভিডিওবার্তা ছাড়া হয়েছে, যাতে আল-কায়েদা প্রধান আয়মান আল-জাওয়াহিরির নাম ও ছবি সংযুক্ত রয়েছে। মিসরের আল-কায়েদার এই শীর্ষ নেতার ভিডিওবার্তা উল্লেখ করে তা গত বুধবার প্রচার করেছে কাতারের আল-জাজিরা টেলিভিশন। নিজেকে জাওয়াহিরি পরিচয় দিয়ে আরবিতে ওই বার্তাটি পড়া হয়। তার কথার ইংরেজি সাবটাইটেলে দেওয়া হয়েছে।
ওসামা বিন লাদেনের মৃত্যুর পর জাওয়াহিরি আল-কায়েদার কাণ্ডারি। ওই ভিডিওবার্তায় তিনি বলেন, ‘আমার বাংলাদেশের মুসলিম ভাইরা, ভারতীয় উপমহাদেশ ও পশ্চিমারা ইসলামের বিরুদ্ধে, ইসলামের নবির বিরুদ্ধে এবং সকল মুসলমানদের বিরুদ্ধে যে ধর্মীয় যুদ্ধের ঘোষণা করেছে, তাদের প্রতিরোধে এগিয়ে আসার জন্য আমি আপনাদের আহ্বান জানাই। এ যুদ্ধের মাধ্যমে তারা আপনাদের অবিশ্বাসীদের দলে এবং চরম ক্ষমতাশালীর অনুগত দাসে পরিণত করতে পারে।’
বাংলাদেশকে ‘বিরাট জেলখানা’ উল্লেখ করে ওই বার্তায় বলা হয়, এই দেশের মুসলমানদের সম্মান ও সততা আজ হুমকির মুখে। তিনি বলেন, ‘ভারতীয় এজেন্ট, পাকিস্তানের দুর্নীতিগ্রস্ত সেনা সদস্যদের নেতৃত্ব এবং বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের বিশ্বাসঘাতক ও ক্ষমতালোভী  রাজনীতিবিদদের ষড়যন্ত্রের শিকার বাংলাদেশ।’
অনেকবার তিনি বাংলাদেশে গোপন সফরে এসেছেন উল্লেখ করে বলেন, ‘আপনারা ইসলামের সত্যিকার জ্ঞানীদের চারদিকে সমবেত হোন এবং তাদের রক্ষা করুন। সেই সঙ্গে ইসলামবিরোধীদের উত্থান রুখতে দেশজুড়ে ব্যাপক জনমত গড়ে তুলুন।’
‘আমি বাংলাদেশের ইসলামের নেতৃত্ব স্থানীয়দের (উলামায়ে কেরাম) আহ্বান জানাই, ইসলাম তাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পণ করেছে, তা যেন তারা সঠিকভাবে পালন করেন’, বলেন আল-কায়েদা নেতা।
চল্লিশ বছর ধরে স্বাধীন হওয়ার পরও বাংলাদেশ তাদের স্বাধীনতা, গৌরব, সম্মান এবং ব্যক্তিস্বাধীনতা রক্ষায় একটি জাতিসত্ত্বা হয়ে কাজ করেনি বলেও মন্তব্য করেন জাওয়াহিরি।
এদিকে, ভারতের সংবাদমাধ্যম এশিয়া টাইমসে এ বিষয়ে লিখেছেন বি রমন। তিনি এই ভিডিওবার্তাটি জাওয়াহিরির নয় বলে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। রমন বলেন, এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো আল-জাজিরা আল-কায়েদার এই নেতার ভিডিওবার্তা প্রকাশ করল। প্রথম বার্তাটি দেওয়া হয়েছিল গত বছরের ৬ অক্টোবরে।
ভারতের কাউন্টার টেরোরিজম এক্সপার্টরা আল-জাওয়াহিরির কণ্ঠ ও উচ্চারণভঙ্গী সম্পর্কে সচেতন। জাওয়াহিরির সত্যিকার কণ্ঠ রক্ষিত রয়েছে মার্কিন গোয়েন্দাদের কাছে। সাম্প্রতিক ভিডিওবার্তাটির কণ্ঠ জাওয়াহিরির কণ্ঠের চেয়ে অনেক কম বয়সী কোনো ব্যক্তির বলেই মনে হয়। তা ছাড়া তার বাচনভঙ্গী জাওয়াহিরির মতো নয়।
এ ধরনের বার্তার সত্যতা যাচাইয়ের উপায় বক্তার কণ্ঠ এবং বাচনভঙ্গীর পরীক্ষা-নিরীক্ষা। এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে এশিয়া টাইমসে।
সূত্র : ইউটিউব, আল-জাজিরা, এশিয়া টাইমস