dubai_44427
দুবাইতে রফতানি খাত ছুঁয়েছে ২৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার

রেমিটেন্স পাঠানোর দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাতের সাথে আমদানি-রফতানি সচল থাকলেও বাংলাদেশিদের ভিসা স্থগিত থাকায় অতি সহজে ভিসা পাচ্ছে না ব্যবসায়িরা। এতে বাণিজ্যের দিক থেকে যেমন আগ্রহ হারাচ্ছে নতুন উদ্যোগতারা তেমিন রেমিটেন্স প্রেরণে দ্বিতীয় স্থান ধরে রাখা নিয়েও সংশয় রয়েছে ব্যবাসায়ীদের।

তবে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভিসা বন্ধের সাথে আমদানি-রপ্তানির কোনও সম্পর্ক নেই। এমনকি গত অর্থবছরে দুবাই থেকে রফতানি খাতে আয় বেড়েছে পাঁচ গুণ। পূর্বের তিন বছরে ৫০ মার্কিন মিলিয়ন ডলার এলেও গত অর্থবছরে এই খাতে ২৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে ছুঁয়ে গেছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমানে ৭০টিরও অধিক পণ্য আমিরাতে রফতানি করা হয়। এছাড়া বাংলাদেশের প্যাকেটজাত পণ্যের চাহিদা বাজারের বেশি থাকায় এগুলোর রফতানিও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চামড়াজাত পণ্য, গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, আইটি সেক্টরগুলোতেও রফতানির একটি ভালো সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

গ্লাফ আইটি এক্সপোতে যেমন বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করে ভালো ফলাফল পেয়েছে। তেমনি ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি গ্লাফ ফুড এ অংশগ্রহণে কথা রয়েছে। নতুন নতুন ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্ভবনা সৃষ্টি হওয়ায় ভবিষ্যতে এর মাত্রা আরেও বাড়বে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা।

পণ্যের চাহিদা প্রসঙ্গে আরবের অধিবাসীরা জানান, নিজস্ব পণ্যের প্রচারের ক্ষেত্রে স্বার্থকতা থাকলেও রফতানির ক্ষেত্রে অধিকতর দুর্বল বাংলাদেশ। অথচ পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত, পাকিস্তান ও ইরান থেকে প্রতিনিয়ত দুবাই ও শাহরজা বন্দর হয়ে আমিরাতে আসছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য, প্রসাধনী সামগ্রীসহ সব-ধরনের মালামাল। দাম কম ও বাজারজাত করণে তারা সফল। কিন্তু বাংলাদেশের পণ্য সে তুলনায় নেই বললেই চলে।

তবে ইদানিং কিছু কোম্পানি ও ভালো ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট পাওয়া যাচ্ছে। বাংলাদেশে উৎপাদিত নিত্য ব্যবহার উপযোগী পণ্য রফতানি করা হলে আমিরাতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরাও বাজার ধরতে পারবে বলেও তারা মনে করেন।

দুবাইয়ে নিযুক্ত কর্মাশিয়াল কাউন্সিলর ড. মাহমুদুল হক বলেন, বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের যেমন পণ্য আমাদানি-রফতানির জন্য উত্সাহ দিয়ে আসছি তেমনি আমিরাত সরকারকেও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য আমাদানি জন্য অনুরোধ করেছি। পণ্যের গুণগত মান যাচাই-বাছাইয়ে মাধ্যমে সরকারিভাবে ব্যবসায়ীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করে আসছে কনস্যুলেট।

তিনি বলেন, প্রাণ কোম্পানি তাদের নিজস্ব উৎপাদিত পণ্য নিজেদের তত্ত্বাবধানে বাজারজাতকরণে আমিরাতে বেশ সফল। এছাড়া আরেও কিছু কোম্পানি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এই খাত থেকে আরেও আয় বাড়বে যদি ব্যবসায়ীদের সহজভাবে ভিসা প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাইয়ের কনসাল জেনালের মাসুদুর রহমান জানান, দুবাই থেকে পণ্যের রি-এক্সপোর্ট হবার সুযোগ থাকায় আমিরাতের সাথে ব্যবসা করার জায়গা অনেক। সুতারং ব্যবাসার সম্ভাবনা বেশি। রফতানির বাজারে আমাদের চাহিদা বাড়াতে উদ্যোগতাদের এই অঞ্চলের সাথে ব্যবসা করার জন্য আরেও বেশি উদ্যোগী হতে হবে। তবে ব্যবসায়ীরা দেরিতে হলেও বাজার ধরতে পারায় গত তিন বছরে এর প্রবৃদ্ধি হয়েছে পাঁচ গুণ। আমার বিশ্বাস ভবিষ্যতে আরো ভালো হবে।

প্রবাসী ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমিরাতে নিত্যনতুন বাংলাদেশিদের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার সাথে বাড়ছে পণ্যের চাহিদা কিন্তু সে তুলনায় নেই রফতানি। স্বাভাবিক রীতিতে ব্যবাসায়ীদের ভিসা প্রদান ও নদী পথে যোগাযোগের মাত্রা বাড়ালে নতুন উদ্যোগতারা যেমনি উৎসাহ পাবে তেমনি রফতানি খাতে আরেও বেশি লাভবান হবে বাংলাদেশ।

উল্লেখ্য, অতিসম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নিযুক্ত আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ড. সাঈদ বিন হাজর আল শেহির সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের উপর গুরুত্বারোপ করে বাংলাদেশ থেকে হালাল গোসত ও মাছ আমদানির জন্য আমিরাতের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।

এছাড়া ঢাকা ও মংলা বন্দরের সঙ্গে চট্টগ্রামের স্থল কন্টেইনার ডিপো নিউমুরিং কন্টেইনার টার্মিনালের যোগাযোগর ক্ষেত্রে সরকারি পর্যায়ে দুবাই পোর্ট ওয়ার্ল্ডের সহযোগিতায় সন্তোষ প্রকাশ করেন।