ananda_72630বাংলাদেশের প্রতি আমেরিকার নরম মনোভাবে খুশি নয়াদিল্লি। ভারত এটিকে নয়াদিল্লির সাফল্য হিসেবেই দেখছে। নয়াদিল্লি মনে করছে বাংলাদেশের প্রতি যুদ্ধং দেহি মনোভাব থেকে কিছুটা সরে এসেছে আমেরিকা। এ নিয়ে আনন্দবাজার পত্রিকায় একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত।
প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন বিদেশ দফতরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিভাগের সহ-সচিব নিশা দেশাই বিসওয়াল সিনেট-এর একটি বৈঠকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও বাড়াতে হবে। আওয়ামী লীগ সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব প্রত্যাহার করারও প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশের বিদেশসচিব সাইদুল ইসলাম এই মুহূর্তে আমেরিকায়। সে দেশে নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসিনা সরকার কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সে সম্পর্কে বিশদে তিনি ব্যাখ্যা করছেন মার্কিন কর্তাদের কাছে। গোটা বিষয়টির দিকে সতর্ক ভাবে নজর রাখছে নয়াদিল্লি।
সম্প্রতি গ্যারি বাস রচিত ‘দ্য ব্লাড টেলিগ্রাম’ গ্রন্থ প্রকাশিত হওয়ার পর আমেরিকার মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধী ভূমিকার বিষয়টি ফের সামনে এসেছে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে আমেরিকার সেই ‘নিক্সন-নীতির’ সত্যিই কোনও পরিবর্তন হল কিনা, তা-ই আগে খতিয়ে দেখতে চাইছে সাউথ ব্লক।
এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন কূটনীতিক এবং ভারত-মার্কিন সম্পর্কের অন্যতম রূপকার রণেন সেন  বলেন, এ’টি অবশ্যই ইতিবাচক ঘটনা। তবে বিষয়টি আচমকা ঘটেনি। বাংলাদেশে ভোট হয়ে যাওয়ার পর থেকেই ওয়াশিংটনের তরফে কিছু ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। একটু দেরিতে হলেও আমেরিকা অনুধাবন করছে যে জামাতে ইসলামির সঙ্গে আইএসআই-ই ছাড়াও ইসলামি জঙ্গি সংগঠনগুলিরও যোগসাজস রয়েছে। মায়ানমারে রোহিঙ্গা উপজাতিদের নিয়ে উদ্ভূত সমস্যাতেও যে জামাত যুক্ত এমন খবরও মার্কিন বিদেশ দফতরের কাছে পৌঁছেছে।’
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শিবশঙ্কর মেনন কিন্তু যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গেই গোটা বিষয়টি দেখতে চাইছেন। তিনি বলেন, কোনও দেশই তার বিদেশনীতি রাতারাতি বদলায় না। কিছু সূক্ষ্ম তারতম্য ঘটায় মাত্র। এ ক্ষেত্রে আমেরিকা কেন হাসিনা সরকারের প্রতি নরম মনোভাব নিচ্ছে, তার কোনও সাময়িক কারণ রয়েছে কি না, গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখে তবেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্তে আসা যেতে পারে।