দৈনিক বার্তা: হুমায়ূন আহমেদ দেশের কিংবদন্ততুল্য কথাসাহিত্যক, নাটক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। আজ ১৯ জুলাই তার মৃত্যুবার্ষিকী। তার কর্মজীবনের সহযাত্রী ও সানি্নধ্যে থাকা মানুষেরা স্মরণ করেছেন তাকে_

untitled-18_73375

আলী যাকের
আমাদের দেশে পড়াশোনার কালচার নেই বললেই চলে। বই পড়াটাও অনেকের কাছে বিলাসিতা। সেই বাস্তবতাকে মাড়িয়ে হুমায়ূন আহমেদ পেঁৗছেছিলেন লাখো পাঠকের মনের ঘরে। পাঠক সৃষ্টিতে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার লেখায় জীবনের প্রতিচ্ছবি খুঁজে পাওয়া যায়। এ কারণেই তার এত সাফল্য, এত মানুষের ভালোবাসার প্রাপ্তি। এখনও তার লেখা পড়ে মনে ভালো লাগার শিহরণ জাগে। একই সঙ্গে এক ধরনের শূন্যতা বোধ করি, তার চিরবিদায়ে।
আসাদুজ্জামান নূর
হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে বলতে গেলে কেবল কথা শুরু করা যেতে পারে, শেষ করা যাবে না। পরিচয়ের সূত্রে ছিলেন কথাসাহিত্যিক ও নাট্যকার। এরপর হলেন সবচেয়ে কাছের মানুষ। দীর্ঘপথ পেরিয়েছি একসঙ্গে। অনেক ঘটনা, অনেক স্মৃতি তাকে নিয়ে। তার চলে যাওয়া তাই মনের মাঝে বার বার আঁচড় কাটে।
আবুল হায়াত
হুমায়ূন আহমেদ নামের একজন ভালো মানুষকে আমরা হারিয়েছি। সেই সঙ্গে হারিয়েছি সময়ের অন্যতম একজন নাট্যকারকে। যে কোনো কাহিনী অনবদ্য করে ফুটিয়ে তুলতেন তিনি। ছোট গল্প রচনায় তাকে আমি সমকালীন শ্রেষ্ঠ লেখকের মর্যাদা দিতে চাই। প্রায়ই মনে পড়ে তাকে ঘিরে থাকা অসংখ্য স্মৃতি। আমাদের সম্পর্কটা কেবল ব্যক্তিগত নয়, অনেকটা পারিবারিক ছিল। তার বেশিরভাগ কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম আমি। তাই স্মৃতির ভাণ্ডারেও জমা আছে অসংখ্য ঘটনা। এসব কারণেই কখনোই তাকে ভুলে থাকা সম্ভব নয়।
তারিক আনাম খান
হুমায়ূন আহমেদকে নিয়ে বলতে গেলে কথা শেষ করা মুশকিল। তার প্রতি আমার বিশেষ আবেগের জায়গা হলো_ মৃত্যুর আগের শেষ দিনগুলোতে তার সঙ্গে থাকা। ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ চলচ্চিত্রের হাজারো স্মৃতি বারবার আমাকে বিষণ্ন করে তোলে। চলচ্চিত্রটি পরবর্তীকালে দেখার সময় তাকে ভীষণ রকম মনে পড়ত। প্রতিটি বিষয়ে গভীর জ্ঞান এবং পরিচ্ছন্ন অন্তর্দৃষ্টি ছিল তার। মনে হয় বড় অসময়েই চলে গেলেন তিনি। মেনে নিতে কষ্ট হলেও মানা ছাড়া উপায় নেই। ভাবতেও খুব খারাপ লাগে।
জাহিদ হাসান
হুমায়ূন আহমেদ লেখক হিসেবে যতটা বড় মাপের, তেমনি বড় মাপের একটি হৃদয় ছিল তার। খুব সহজেই মানুষকে আপন করে নেওয়ার ক্ষমতা ছিল তার। কাজের ধরনও ছিল একেবারে আলাদা। মাটি-ঘেঁষা মানুষ। এ কারণে আমাদের চিরায়ত জীবনধারার পরিচয় মেলে তার নাটক-চলচ্চিত্রে। তার মতো গুণী এবং কাছের একজন মানুষ হারানোর দুঃখ আজীবন থেকে যাবে।
মাহফুজ আহমেদ
যে মানুষটার সঙ্গে সম্পর্কটা ছিল তীব্র ভালোবাসার, তার বিষয়ে অন্য আট-দশজনের মতো করে কিছু বলা সম্ভব নয়। হুমায়ূন আহমেদ আছেন আমার মনের গহিনে। এ কারণে মুখের কথায় অনুভূতিটা প্রকাশ করতে পারব না; প্রকাশ করতেও চাই না।
এস আই টুটুল
যে মানুষটা প্রাণ খুলে হাসতে শিখিয়েছেন, তিনিই আবার কাঁদালেন, আমাদের ছেড়ে চলে গিয়ে। খুব সৌভাগ্যবান মনে হয় নিজেকে এই ভেবে, তিনি আমার গান শুনতে চাইতেন। ভালোবাসতেন আমাদের মাটির গান। ছিলেন সঙ্গীতবোদ্ধাও। আর লেখনী নিয়ে তো কিছু বলার অপেক্ষাই থাকে না। গল্প, উপন্যাস ও নাটক রচনায় তার যে জাদুকরী ক্ষমতা, তার তুলনা মেলা ভার। তাকে ভুলে থাকা সম্ভব নয়।
রিয়াজ
হুমায়ূন স্যারের কথা কখনোই ভুলে থাকা সম্ভব নয়। তার মতো একজন গুণী মানুষের সানি্নধ্যে থেকে কাজ করতে পারাটা সত্যিই সৌভাগ্যের বিষয়। তার ভালোবাসা পেয়েছি। এক জীবনে এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে? আমার কাছে তিনি সব সময়ই অমর।
তানিয়া আহমেদ
হুমায়ূন স্যারের মতো এমন একজন মানুষের সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য সবার হয় না। আমার জীবনের শ্রেষ্ঠতম পাওয়া হিসেবে বিবেচনা করি স্যারের সঙ্গে কাজগুলো। স্যারের সঙ্গে গোমড়া মুখ করে রাখা সম্ভব নয়। স্যার এতটাই প্রাণবন্ত ছিলেন যে, তার কাছে গেলে শত না-পওয়া দুঃখ-কষ্ট নিমিষেই হাওয়া হয়ে যেত। তাকে হারানোর বেদনা অসীম।
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
এককথায় অসাধারণ একজন মানুষ ছিলেন হুমায়ূন আহমেদ। লেখক হিসেবে তিনি যতটা বড় মাপের, মানুষ হিসেবেও তেমনিই বড় মাপের। কাজ করার মধ্য দিয়েই তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছিল। এখন তিনি নেই। তার অভাবটা সংস্কৃতি অঙ্গনেও প্রভাব ফেলেছে।
ফারুক আহমেদ
হুমায়ূন ভাইয়ের কথা খুব মনে পড়ে। নুহাশ পল্লীর আনন্দঘন দিনগুলো আমাকে স্মৃতিকাতর করে তোলে। তার নতুন সব কথা মন্ত্রমুগ্ধের মতো হয়ে শুনতাম।