Image - Ambassador Gousal trying to stay in LEBANON - Community leader tortured - 02

দৈনিক বার্তা- মাঈনুল ইসলাম নাসিম : লেবাননের রাজধানীতে বিতর্কিত রাষ্ট্রদূত গওসোল আযম সরকারকে দায়িত্বমুক্ত করায় ছন্দপতন ঘটেছে বৈরুতের চিহ্নিত দালাল সিন্ডিকেটে। দূতাবাসকে ঘিরে কালো টাকার খণিতে বিস্ফোরন ঘটায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে নিরীহ বাংলাদেশিদের রক্তচোষা অপরাধী চক্রটি। রাষ্ট্রদূতের বিদায়ে ‘হিউম্যান ট্রাফিকিং এন্ড পাসপোর্ট’ বানিজ্যে ধ্বস সুনিশ্চিত হওয়ায় রীতিমতো ঘুম হারাম এখন মুখচেনা দালালদের। দূতাবাসকে কলংকমুক্ত করার নায়ক তথা বৈরুতের কমিউনিটি নেতৃবৃন্দকে নানাভাবে হুমকি ধমকি দেয়া হচ্ছে, পাঠানো হচ্ছে পিস্তল-রিভলবারের ছবিও।

কাউকে একা পেলে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পিছপা হচ্ছেনা দাগী দালালরা। বিবেকবর্জিত দায়িত্বহীন কূটনীতিক গওসোল আযম ও তার অর্থলিপ্সু ‘গডমাদার’ স্ত্রী সাদিয়ার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে লালিত-পালিত দালাল-সর্দার সুমন ভূইয়া ওরফে কালা সুমনের উপস্থিতিতে সহযোগী দালাল ‘বখাটে বাবু’ তার সাঙ্গপাঙ্গদের নিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছে বাংলাদেশ-বৈরুত এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল আবু করিমকে। গওসোল-সাদিয়ার নির্দেশেই করিমকে আক্রমন করে মুখচেনা দালালরা। ফলশ্রুতিতে উত্তেজনা বিরাজ করছে এখন লেবাননের রাজধানীর বাংলাদেশ কমিউনিটিতে।

কালা সুমন ও বখাটে বাবু সহ অন্যদের আসামী করে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে ইতিমধ্যে। এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি লাঞ্ছিত হবার নেপথ্যে ‘হুকুমের আসামী’ হিসেবে গওসোল আযম ও সাদিয়াকে মামলায় আসামী করা হয়নি লেবানিজ সরকার কর্তৃক ইতিমধ্যে তাদেরকে দেশ ছাড়ার আল্টিমেটাম দেয়ার কারণে। তবে সরকারী নির্দেশ অমান্য করে সস্ত্রীক এখনো বৈরুতেই অবস্থান করছেন গওসোল আযম। ঢাকা থেকে জরুরি ভিত্তিতে বৈরুতে আসা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পশ্চিম ও মধ্য এশিয়া উইংয়ের ডিজি নজরুল ইসলাম অবশ্য ইতিমধ্যে দূতাবাসের সব দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন।

[youtube_video id=”i3sOqlM9Uks”]

২০ জুলাই রবিবার সূর্যাস্তের আগে গওসোল-সাদিয়ার লেবানন ছাড়ার বিষয়টি চূড়ান্ত থাকলেও ছলে-বলে কৌশলে তা আরো এক সপ্তাহ বাড়িয়ে নিয়েছেন তারা। নতুন শিডিউল অনুযায়ি এখন ২৭ এপ্রিল রবিবার গওসোল দম্পতি বৈরুত ছাড়বেন, নির্ভরযোগ্য সূত্র এমনটাই জানিয়েছে এই প্রতিবেদককে। লেবানিজ সরকারের ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম অমান্য করায় গওসোল ও তার স্ত্রীর গতিবিধির উপর তীক্ষ নজর রাখছে স্থানীয় প্রশাসন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্যের বিষয়টি লেবানন-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সাথে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছে লেবানিজ মিডিয়া।

বৈরুত ছাড়তে নেক্কারজনক তালবাহানার মধ্য দিয়ে বিতর্কিত এই আনাড়ি কূটনীতিক গওসোল আযম একদিকে যেমন বাংলাদেশ-লেবানন উভয় দেশের সরকারের আদেশ অমান্য করেছেন, পাশাপাশি বাড়িয়ে নেয়া এক সপ্তাহে স্ত্রীর অধীনস্ত দালালদের যোগসাজশে বৈরুতে বেশ কিছু অঘটন ঘটাতে পারেন, এমন আশংকা পোষণ করছেন স্থানীয় কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ। এসোসিয়েশনের সেক্রেটারি আবু করিমকে লাঞ্ছিত করার পর গওসোল দম্পতি এখন সুযোগের অপেক্ষায় আছেন তার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারী কমিউনিটির অপরাপর নেতৃবৃন্দকে কোন না কোন মামলায় ফাঁসাতে।

রাতের অন্ধকারে কুখ্যাত দালালদের উস্কানিমূলক পরামর্শ দিচ্ছেন গওসোল দম্পতি। কালো টাকার গন্ধে আগে থেকেই বেপরোয়া স্ত্রী সাদিয়ার সাথে আর্থিক লেনদেনের বোঝাপড়ার কাজটিও এই সুযোগে সেরে নিচ্ছে কালা সুমন গং। দূতাবাসের কাউন্সিলরের সাথে গওসোল আযমের যে কথিত বিরোধের কথা ঢাকার কয়েকটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, তাও গওসোলেরই সৃষ্টি এমনটাই জানা গেছে অনুসন্ধানে। নিজের ও স্ত্রীর অপকর্ম ঢাকার অংশ হিসেবে কাউন্সিলরকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে অত্যন্ত সুকৌশলে। বহু ঘাটের জল ঘোলা করেও শেষতক অবশ্য কুল রক্ষা হয়নি গওসোল আযম সরকার ও সাদিয়া আযমের।