পিনাক-৬ খুঁজতে নতুন পরিকল্পনা-শোক ঢাকা পড়ছে ক্ষোভে

দৈনিকবার্তা : মুন্সীগঞ্জ,৮আগষ্ট : জরিপ-১০,কান্ডারী-২, তিস্তা,সন্ধানী,নৌ-বাহিনীর রেসকিউ বোট, পেট্রোল ক্রাফট, ফায়ার সার্ভিসের রেসকিউ বোট এবংবাংলাদেশ অভ্যন্তরীণনৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডবি্লউটিএ) বোট৷সব মিলিয়ে পূর্ণ শক্তি প্রয়োগ৷তবুও কোনোভাবেই মিলছে না পিনাক-৬ লঞ্চের খোঁজ! লঞ্চডুবির পঞ্চম দিনে লঞ্চটির খোঁজ না পাওয়ায় অনেকটাই হতাশ উদ্ধারকর্মী ও নিঁখোজের স্বজনেরা৷ মাওয়া ঘাট ও শিবচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিখোঁজের স্বজনেরা এখনো অপেক্ষায় আছেন৷ তাদের একটাই দাবি জীবিত না হোক মৃত শরীরটুকু যেন তারা পান৷

বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অভিযানস্থল থেকে ফিরে নৌ-বাহিনী টিমের প্রধান ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম জানান, সব ধরনের প্রযুক্তি দিয়ে ৫০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে উদ্ধার তত্‍পরতা চালানো হয়েছে৷ কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো খোঁজ মেলেনি৷পিনাক-৬ উদ্ধারে নতুন সিদ্ধান্ত নিয়ে, কাজ শুরু করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি৷এদিকে বিকেল সাড়ে ৬টা পযর্্যন্ত নিখোঁজ রয়েছেন ১২৬ জন৷ আর শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৪০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে৷ এর মধ্যে ২৩ জনের পরিচয় মিলেছে৷

পরিচয় না পাওয়া ১৭ জনের মধ্যে ১২ জনকে মাদারীপুর জেলার শিবচর করবস্থানে দাফন করা হয়েছে৷ আর বাকি ৫ জনের লাশ শিবচরের পাঁচ্চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাদারীপুর জেলার প্রশাসনের আওতায় রাখা হয়েছে৷মুন্সিগঞ্জের মাওয়া ঘাটের কাছে পিনাক-৬ লঞ্চডুবির ঘটনায় শুক্রবার এখন পর্যন্ত ৪০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে৷ এরমধ্যে শনাক্ত না হওয়া ১২ জনের লাশ মাদারীপুরের শিবচর পৌর কবরস্থানে দাফন করা হচ্ছে৷

শুক্রবার বেলা দুইটার দিকে শিবচরের পাচ্চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে মরদেহগুলো পৌর কবরস্থানে নিয়ে আসা হয়৷ মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ জেলার ঊধর্্বতন কর্মকর্তারা জানাজায় অংশ নেন৷পরবর্তী সময় শনাক্ত করার জন্য ওই ১২টি লাশের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়৷

পিনাক-৬ লঞ্চডুবির ঘটনা আরও সাতটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে৷ দুর্ঘটনার পাঁচ দিনে এ পর্যন্ত মোট ৪০টি লাশ উদ্ধার করা হলো৷ তবে লঞ্চের খোঁজ এখনো মেলেনি৷উদ্ধার হওয়া লাশগুলোর মধ্যে ভোলা থেকে ১০,শরীয়তপুরে ৮, বরিশালে ১১, চাঁদপুরে ৫, লক্ষ্মীপুরে ১, মাদারীপুরে ১ ও ঘটনাস্থল মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় ৪ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়৷

লৌহজং উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. বদরুদ্দোজা জানান, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে বরিশাল থেকে তিনটি ও শুক্রবার তিনটি এবং মুন্সিগঞ্জের মাওয়া থেকে একটি লাশ উদ্ধার করা হয়৷মাওয়ায় স্থাপিত নিয়ন্ত্রণকক্ষের পুলিশ পরিদর্শক মজিবুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত ২৩ জনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে৷ ১২ জনকে দাফন করা হয়েছে৷ আর দুজনের লাশ শিবচরের পাচ্চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে রয়েছে৷ আরও তিনজনের লাশ মাওয়া ঘাটে নিয়ে আসা হয়েছে৷

লঞ্চডুবির পর থেকে নৌবাহিনীর উদ্ধারকারী দল, কোস্টগার্ড, ফায়ার ব্রিগেড, অনুসন্ধানী জাহাজ কান্ডারি-২ এবং সাইটস্ক্যান সোনার ব্যবহার করে তিস্তা, সন্ধানী, আইটি ৯৭ ও ব-দ্বীপ নামে বেশ কয়েকটি অনুসন্ধান জাহাজ আজ সকাল থেকে ‘পিনাক-৬’-এর অনুসন্ধান করছে৷ নৌবাহিনীর সদর দপ্তরের উপপরিচালক কমান্ডার হাবিবুল আলম জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশের ৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় অনুসন্ধান করার পর এখন নতুন করে অভিযান চালাচ্ছেন তাঁরা৷ ঘটনাস্থলে জরিপ-১০ পৌঁছানোর ফলে অনুসন্ধান কার্যক্রম আরও জোরদার হয়েছে৷

নৌবাহিনীর এই কর্মকর্তা জানান, লঞ্চটি শনাক্ত করার ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী৷লঞ্চডুবির পর থেকেই পদ্মার উভয় পাড়েই স্বজনহারা মানুষের বুকফাটা আর্তনাদ ও দীর্ঘ পাঁচ দিনের অপেক্ষায় এক শোকাবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে৷

মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান জানিয়েছেন, লঞ্চ উদ্ধারের সর্বাত্মক চেষ্টা চলছে৷ তাঁদের তালিকায় এখন পর্যন্ত ১৩০ জন নিখোঁজ রয়েছে৷বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডবি্লউটিএ) চেয়ারম্যান শামসুদ্দোহা খন্দকার জানান, দুর্ঘটনাস্থলে প্রবল স্রোত এবং পানির গভীরতা প্রায় ৮০-৯০ ফুট৷ ঘূর্ণিস্রোতের কারণে সেখানে গর্ত সৃষ্টি ও বালু জমা হচ্ছে৷ তাই লঞ্চটি স্রোতে দূরে সরে বালুর নিচে চাপা পড়ে থাকতে পারে৷ তাই শনাক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছে৷

এদিকে, নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খান শুক্রবার বিকেলে মুন্সিগঞ্জ রেস্ট হাউজে উদ্ধার তত্‍পরতায় নিয়োজিত নৌ বাহিনী ফায়ার সার্ভিসসহ স্থানীয় প্রশাসনের সাথে বৈঠক করেছেন৷ মন্ত্রী এসময় লঞ্চটি উদ্ধারের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন৷ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শুক্রবার রাতে পিনাক-৬ লঞ্চের উদ্ধার অভিযান পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হতে পারে৷

ডুবে যাওয়া লঞ্চের অবস্থান জানতে পদ্মায় ৫০ বর্গ কিলোমিটার এলাকায় চার দিন ধরে নিষ্ফল তল্লাশির পর মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় উদ্ধার অভিযানে যোগ দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের সার্ভে ভেসেল জরিপ-১০৷বিপুল আয়োজন নিয়ে উদ্ধারকর্মীরা নানাভাবে চেষ্টা চালিয়ে গেলেও শুক্রবার সকাল পর্যন্ত পিনাক-৬ নামের লঞ্চটির অবস্থান চিহ্নিত করা যায়নি, ফলে সেটি উদ্ধারের কাজও শুরু করা যায়নি৷

এদিকে গত তিন দিন ধরে দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে পদ্মা, মেঘনাসহ কয়েকটি নদীর ভাটিতে বিভিন্ন স্থানে লাশ ভেসে উঠছে৷তীব্র স্রোতে লাশ পৌঁছে গেছে বঙ্গোপসাগরের কাছাকছি ভোলা পর্যন্ত৷

ডুবে যাওয়া লঞ্চটিও স্রোতের কারণে দুর্ঘটনাস্থল থেকে দূরে সরে গেছে বলে উদ্ধারকর্মীদের ধারণা৷তারা বলছেন, বর্ষা মওসুমে পদ্মায় যে পরিমাণ পলি আর বালি থাকে তাতে চার দিনে নদীর তলদেশে পিনাক-৬ কাদার নিচে ঢাকা পড়ে যেতে পারে৷ সেক্ষেত্রে অবস্থান সনাক্ত করা গেলেও সেটি উদ্ধার করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে৷

বিআইডবি্লউটিএ’র চেয়ারম্যান শামসুদ্দোহা খন্দকার বলেন, দুর্ঘটনাস্থলে প্রবল ঘূর্ণাবর্ত, পানির গভীরতা সেখানে ৮০/৯০ ফুট৷ ঘূর্ণাবর্তের কারণে নদীর তলদেশে গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে, আবার বালু জমা হচ্ছে৷ ফলে লঞ্চটি দূরে সরে গিয়ে বালুর নিচে চাপা পরে থাকতে পারে৷লঞ্চের অবস্থান নিশ্চিত করতে না পারায় উদ্ধারকারী জাহাজ নির্ভীক ও রুস্তম মাঝ পদ্মায় অলস বসে আছে৷ জরিপ-১০ এর সঙ্গে তল্লাশি অভিযানে আছে টাগ বোট কাণ্ডারি-২, অনুসন্ধান জাহাজ সন্ধানী, তিস্তা ও নৌবাহিনীর এলসিটি-০১২৷

নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম বলেন,জরিপ-১০ আকারে ছোট হলেও এর কার্যক্ষমতা বেশি৷ চলার পথে দুই পাশে প্রায় ৩শ’ মিটার পর্যন্ত স্ক্যান করতে পারে৷ পাশাপাশি পানির নিচে পলিমাটি ও কাদামাটিতে ৭০ মিটার এবং বালি মাটিতে ১৮ মিটার গভীর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ চালানোর ক্ষমতা রয়েছে এর৷

সোমবার বেলা ১১টার দিকে কাওড়াকান্দি থেকে তিন শতাধিক যাত্রী নিয়ে মাওয়া ঘাটে যাওয়ার পথে লৌহজং ক্রসিংয়ে পিনাক-৬ ডুবে যাওয়ার পর তাত্‍ক্ষণিকভাবে ১১০ জনকে উদ্ধার করা হয় বলে মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসনের দাবি৷বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত নদীতে মোট ৩৮ জনের লাশ পাওয়া গেছে, যাদের মধ্যে ২৩ জনের পরিচয় জানার পর স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বাদল৷

স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে মাওয়ায় জেলা প্রশাসনের অস্থায়ী নিয়ন্ত্রণ কক্ষ যে তালিকা করেছে, তাতে ১৩০ যাত্রী এখনো নিখোঁজ৷উদ্ধার হওয়া লাশগুলো যাতে স্বজনরা সহজে সনাক্ত করতে পারেন সেজন্য মঙ্গলবার রাত থেকে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি তথ্য ও অভিযোগ কেন্দ্র চালু করা হয়েছে৷

মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক জিএসএম জাফরুল্লাহ জানান, লাশ সনাক্ত করার জন্য ইউএনও ও ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়ে একটি কমিটি করা হয়েছে৷ নিহতদের লাশের ছবি, পোশাকের বর্ণনা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানের চিহ্ন দেখে সনাক্তের পর ফরম পূরণের মাধ্যমে কমিটি স্বজনদের কাছে লাশ হস্তান্তর করছে৷মুন্সীগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার মিয়া মো. কুতুবুর রহমান জানান, এ পর্যন্ত ভোলা থেকে ১০ জন, শরীয়তপুর থেকে আটজন, বরিশাল থেকে আটজন, চাঁদপুরে পাঁচজন, লক্ষ্মীপুরে একজন, মাদারীপুরে একজন ও ঘটনাস্থল মুন্সীগঞ্জের মাওয়া থেকে তিনজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে৷

লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত ও নিখোঁজদের জন্য শুক্রবার জুমার পর মুন্সীগঞ্জ ও মাদারীপুরের সব মসজিদে বিশেষ দোয়া করা হবে৷এ দিকে প্রতিদিনই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চাচাতো ভাইকে পাওয়ার আশায় কখনো মাওয়া ঘাটে আবার কখনো পাঁচ্চুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে উপস্থিত হন হামিদুর রহমান৷ তার চাচাতো ভাইয়ের নাম মিন্টু মোল্লা৷তিনি বলেন, মিন্টু পেশায় ব্যবসায়ী ছিলেন৷ এখনো পরিবারের সবাই তার অপেক্ষায় আছে৷লঞ্চডুবার সংবাদ পাওয়ার পর থেকেই সব জায়গায় খবর নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন জায়গায় যাচ্ছি৷

কিন্তু কোথাও আমার ভাইকে পাচ্ছিনা৷ মিন্টু সিলেটের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন৷ মিন্টু ভাই অনেক ভালো মানুষ ছিলেন বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি!মাওয়া ঘাটের এক ব্যবসায়ীরা জানান, লাশ হস্তান্তরের জায়গা মাদারীপুর জেলার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ ও মাওয়া ঘাটে নিখোঁজের স্বজেনারা উপস্থিত আছেন৷ কিন্তু কেউ কোনো সংবাদ নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না৷মাওয়া ঘাটের কন্ট্রোল রুমের মূল দায়িত্বে আছেন শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মুজিবুর রহমান৷তিনি জানান, লাশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাদারীপুরের পাঁচ্চর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠানো হচ্ছে৷ এখনো লঞ্চটি উদ্ধারের তত্‍পরতা চলছে৷

এদিকে, পদ্মানদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চ পিনাক-৬ ডুবে যাওয়ার ঘটনার পাঁচ দিন পর এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর জানা যায়, ২০ হাজার টাকার লোভে ওই ব্যক্তি জীবিত উদ্ধার হওয়ার অভিনয় করেছেন৷শুক্রবার বিকেলে মাওয়া ঘাটে স্থাপিত পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে শ্রীনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মজিবর রহমান মাইকে ঘোষণা দিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করেন৷

মজিবর রহমান বলেন, এর আগে তিনি নিজের নাম সরোয়ার বললেও তার আসল নাম রাসেল সর্দার (২০)৷ তার বাবার নাম আলাউদ্দিন সর্দার৷ তার বাড়ি মাদারীপুরের কুকরাইল এলাকায়৷

পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রাসেল জানান, এক ক্যামেরাম্যান তাকে বলেছিলেন পাঁচ দিন পর জীবিত উদ্ধার দাবী করলে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্য পাওয়া যাবে৷ তাই টাকার লোভে তিনি এ নাটক সাজিয়েছেন৷পরিদর্শক মজিবর বলেন, যখন রাসেল পাঁচ দিন পর জীবিত উদ্ধার হওয়ার দাবি করেছিলেন, তখনই আমাদের সন্দেহ হয়েছিল৷ নানাভাবে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করায় আসল সত্য বের হয়ে আসে৷ তাকে এখন মাওয়া নৌপুলিশ ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে৷বর্তমানে অজ্ঞাত পরিচয় ওই ক্যামেরাম্যানকে খোজাঁ হচ্ছে বলেও জানান পরিদর্শক মজিবর৷

নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন নজরুল জানান, জীবিত উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি উদ্ধারকারী দল প্রথমে ইতিবাচক হিসেবেই দেখেছিল৷ পরে তদন্তে বিষয়টি সাজানো নাটক বলে উদঘাটিত হয়েছে৷জানা যায়, রাসেল একজন মাদকসেবী৷ উত্তাল পদ্মায় পাঁচদিন পেরিয়ে গেলেও খোঁজ মিলছে না পিনাক-৬ লঞ্চটির৷ দেশের সর্বশেষ উন্নত প্রযুক্তি জরিপ-১০ দিয়ে অনুসন্ধান চালিয়েও পাওয়া যাচ্ছে না লঞ্চটি! তাই আসছে না কোনো ফলাফলও!

শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত এমনই হতাশার চিত্র পদ্মা পাড়ে৷ চলছে বিরামহীন অভিযান৷ তবুও কোনো কাজ হচ্ছে না৷জল পথে লঞ্চ উদ্ধারে জরিপ-১০ দেশের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি৷ তবে এ সর্বাধুনিক প্রযুক্তি দিয়ে চূড়ান্ত প্রচেষ্টা চালিয়েও অনুসন্ধানকারী দল কোনো আলামতই পাচ্ছে না লঞ্চটির৷

পাঁচদিন পার হয়ে যাচ্ছে৷ নৌ-বাহিনীর ৩০ জনের অনুসন্ধানকারী দল কাজ চালিয়ে যাচ্ছে৷ এর মূল দায়িত্বে রয়েছেন নৌ-বাহিনীর ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম ও তার কর্মী বাহিনী৷এ ব্যাপারে ক্যাপ্টেন নজরুল ইসলাম বলেন, কান্ডারী-২ এর পর জরিপ-১০ সর্বশেষ ব্যবস্থা৷ এরপর আর দেশে লঞ্চ খুঁজতে কোনো প্রযুক্তি নেই৷এমনকি এই পদ্ধতিগুলো বিদেশেও একইভাবে করা হয় বলে জানান তিনি৷

তিনি বলেন, জরিপ-১০ যে কাজ করছে সেটি কান্ডারী ২ দিয়েও করা সম্ভব৷ তবে জরিপ-১০ কান্ডারী-২ এর চেয়ে একটু ভিন্ন ও আরো শক্তিশালী৷তিনি বলেন, জরিপ-১০ থেকেও সোলার স্ক্যান মেশিন দিয়ে দুই পাশে প্রায় ৩ শ’ মিটার পর্যন্ত স্ক্যান করে অনুসন্ধান করা যায়৷ তবে এর গতি বেশি৷

তিনি বলেন, পাশাপাশি পানির নিচে পলিমাটি ও কাদামাটিতে ৭০ মিটার এবং বালি মাটিতে ১৮ মিটার গভীর পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ চালানোর ক্ষমতা রয়েছে জরিপ-১০ এর৷স্বজনদের অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের তৈরি করা নিখোঁজের সর্বশেষ তালিকা অনুযায়ী এখনো ১২৬ যাত্রী নিখোঁজ রয়েছেন৷