টাঙ্গাইল

দৈনিকবার্তা-ময়মনসিংহ,১৮অক্টোবর : দেশের প্রথম মন্ত্রিসভা থেকে শুরু করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার পর্যনত্ম প্রতিটি মন্ত্রিসভাতেই টাঙ্গাইল জেলার প্রতিনিধিত্ব ছিলো৷ সর্বশেষ এ জেলা থেকে মন্ত্রিসভায় ছিলেন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী৷ কিন্তু সমপ্রতি পবিত্র হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে কটূক্তিপূর্ণ বক্তব্য দিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানায় বর্তমান মন্ত্রিসভা থেকে তিনি অপসারিত হয়েছেন৷ আর এর মধ্যে দিয়েই দেশ স্বাধীনের ৪৩ বছর পর মন্ত্রিসভায় প্রতিনিধিত্বহীন হয়ে পড়েছে টাঙ্গাইল জেলা৷এমন প্রেক্ষাপটে মন্ত্রিসভায় এ জেলা থেকে কে নতুন করে অনত্মর্ভূক্ত হচ্ছেন এ নিয়ে যেমন জল্পনা কল্পনা আছে তেমনি আছে কৌতুহল৷ ৷

টাঙ্গাইলের রয়েছে সমৃদ্ধ রাজনৈতিক ইতিহাস৷ অনেক বরেণ্য রাজনীতিকের স্মৃতিধন্য এ জেলা৷ দেশের প্রথম মন্ত্রিসভায় স্বরাষ্ট্র ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান আব্দুল মান্নান৷এরপর খোন্দকার েমোশতাকের মন্ত্রিসভাতেও ছিলেন তিনি৷ ওই সময় মান্নান ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী৷ সেনাশাসক ও বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভাতেও টাঙ্গাইলের দাপট লক্ষ্য করা যায়৷ আব্দুর রহমান গণপূর্ত এবং নূর মোহাম্মদ সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পান৷ আব্দুস সাত্তারের মন্ত্রিসভাতেও এ দু’জনকে মন্ত্রী করা হয়৷

আরেক সেনাশাসক এইচ এম এরশাদের মন্ত্রিপরিষদে স্বরাষ্ট্র ও গণপূর্ত মন্ত্রীর দায়িত্ব পান মেজর জেনারেল (অব:) মাহমুদুল হাসান৷ এ সময় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী ছিলেন নূর মোহাম্মদ খান আর পররাষ্ট্র উপমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন ওয়াজেদ আলী খান৷ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠন করলে শাহজাহান সিরাজ ও লুত্‍ফুর রহমান খান আজাদ মন্ত্রী হন৷ এর মধ্যে শাহজাহান সিরাজ নৌপরিবহন মন্ত্রী আর আজাদ ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী হন৷ ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আবুল হাসান চৌধুরীকে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়৷ ২০০১ সালে জোটবদ্ধ নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি সরকার গঠন করলে টাঙ্গাইলের রাজনীতিকদের জন্য মন্ত্রিত্বের ভাগ্য আরো সুপ্রসন্ন হয়৷ এ সময় দু’জন পূর্ণমন্ত্রী, একজন প্রতিমন্ত্রী ও একজন উপমন্ত্রী হন৷

২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের প্রথম মেয়াদেও মন্ত্রিত্ব বঞ্চিত হয়নি টাঙ্গাইল৷ এ সময় লতিফ সিদ্দিকী বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং ড. আব্দুর রাজ্জাক খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান৷ সর্বদলীয় সরকারেও লতিফ সিদ্দিকী মন্ত্রী হন৷ বাদ পড়েন রাজ্জাক৷ ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি বিএনপিবিহীন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করলে মন্ত্রিপরিষদে টাঙ্গাইলের সবেধন নীলমণি ছিলেন লতিফ সিদ্দিকী৷ এ সময় তাকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়৷

কিন্তু গত ২৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের একটি অনুষ্ঠানে লতিফ সিদ্দিকী হজ ও তাবলিগ জামাত নিয়ে কটূক্তি করে চরম বিতর্কিত হয়ে উঠেন৷ গোটা দেশ তার বিচারের দাবিতে ফুঁসে উঠে৷ তারই ফলস্বরূপ তাকে মন্ত্রিসভা থেকে অপসারণ ও দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়৷