01he2ivd-e1405600487578

দৈনিকবার্তা- ঢাকা, ২৯ জানুয়ারি: বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি ১৫.৫ শতাংশ নির্ধারণ করে চলতি অর্থবছরের (জানুয়ারি-জুন) দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে কেন্দ্র্রীয় ব্যাংক৷ তবে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় ৬.৫-৬.৮ এর মধ্যে প্রবৃদ্ধির অর্জনের সম্ভাবনা অনিশ্চয়তায় পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছেন গভনর্র ড. আতিউর রহমান৷বৃহস্পতিবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স রুমে গভর্নর ড. আতিউর রহমান ছয় মাসের এ আগাম মুদ্রানীতি উপস্থাপন করেন৷

গভর্নর বলেন, আমাদের বিনিয়োগ ও উত্‍পাদনে গতিশীলতা আসায় প্রবৃদ্ধি ৬.৫ থেকে ৬.৮ শতাংশ অতিক্রম করার উজ্জল সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল৷ কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত রাজনৈতিক অস্থিরতায় এই প্রবৃদ্ধি সম্ভাবনায় অনিশ্চয়তা ছায়া ফেলেছে৷এদিকে চলতি অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ ধরা হয়েছে৷ এবারও মূল্যস্ফীতির পরিমিতির জন্য প্রয়োজনীয় সংযত ও সতর্ক মুদ্রানীতি ঘোষণা করা হয়েছে৷ যা দেশের আর্থিক খাতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবশেবান্ধব অর্থায়ন যোগানে সচেষ্ট৷বেসরকারি ও উত্‍পাদনশীল খাতে ঋণ প্রবাহ গতিশীল করে বাজেটে নির্ধারিত লৰ্যমাত্রা অর্জন এবং মূল্যস্ফীতি পরিমিত রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক চলতি (২০১৪-১৫) অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের জন্য ‘সংযত মুদ্রানীতি’ ঘোষণা করেছে৷

এ সময় তিনি বলেন, মূল্যস্ফীতি পরিমিতির জন্য প্রয়োজনীয় সংযত ও সতর্ক মুদ্রানীতি ভঙ্গির শৃঙ্খলার মধ্যে থেকেই বাংলাদেশ ব্যাংক সরকারের উন্নয়ন কৌশলের সমর্থনে দেশের আর্থিক খাতে অনত্মর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশবান্ধব অর্থায়ন যোগানে সচেস্ট রয়েছে৷ বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি এখনো ৬ দশমিক ৫ শতাংশের ওপরে রয়েছে, মূল্যস্ফীতির উধর্্বমুখী প্রবণতা এবং চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতাজনিত প্রেক্ষাপটে আগামী ৬ মাসের মুদ্রানীতিতে নতুন কোন শিথিলতা বা কঠোরতা না এনে আগেকার ধারাবাহিকতা বজায় রাখা হচ্ছে৷

তিনি ঘোষিত এই মুদ্রানীতিকে বছরের প্রথমার্ধের ন্যায় বাসত্মবানুগ সংযত মুদ্রানীতি বলে উল্লেখ করেন৷ মুদ্রানীতি প্রোগ্রাম বাসত্মবায়নের জন্য চলমান সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, দূর্ভাগ্যবশত্ রাজনৈতিক অস’িরতাজনিত বিঘ্নের পুনরাবির্ভাব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্ভাবনায় অনিশ্চয়তার ছায়া ফেলেছে৷ যদি এটা দীর্ঘায়িত হয়, তাহলে অর্থনীতির রক্তৰরণ বাড়বে৷ যারা সহিংস কর্মসূচি চালাচ্ছে, সাধারন মানুষের কথা ভেবে তাদের এই কর্মসূচি বন্ধের শুভবুদ্ধির উদয় হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷

নতুন মুদ্রানীতি প্রোগ্রামে সংশোধনী এনে বেসরকারি খাতে ঋণ যোগানের ঊধর্্বসীমা আগেকার ১৬ দশমিক ৫ শতাংশের বদলে কমিয়ে ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে; ব্যাপক মুদ্রার যোগানে প্রবৃদ্ধি সীমা আগেকার মতই ১৬ দশমিক ৫ শতাংশে রাখা হয়েছে৷ পাশাপাশি বেসরকারি খাতের উত্‍পাদনমুখী প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী বৈদেশিক অর্থায়ন ব্যবহারের সুযোগও উন্মুক্ত থাকছে৷

মুদ্রাযোগানে প্রবৃদ্ধির যে পরিসর মুদ্রানীতি প্রোগ্রামে রাখা হয়েছে, তা অনুকূল পরিবেশে সরকার নির্ধারিত জিডিপির উচ্চতর প্রবৃদ্ধির লৰ্যমাত্রা অর্জনে পর্যাপ্ত অর্থায়ন দেয়া সম্ভব হবে বলে গভর্নর আশা প্রকাশ করেন৷তিনি বলেন, মুদ্রানীতির ভঙ্গির ধারাবাহিকতার পাশাপাশি মুদ্রানীতি অনুষঙ্গ ঋণ ও অর্থায়ন নীতি কাঠামোতে বিবিধমূখী বিনিয়োগ ও উত্‍পাদনবান্ধব সংস্কারের ধারাবাহিকতায় বছরের দ্বিতীয়ার্ধে বজায় রাখা হবে৷ জোরদার করা হবে মুদ্রানীতির ট্রান্সমিশন চ্যানেলগুলো৷এক প্রশ্নের উত্তরে গভর্নর বলেন, ঋণ নিয়মাচারের মধ্যে থেকে সব দেশে ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ দেয়া হয়৷ আমরাও সেটা করেছি নিয়মের মধ্যে থেকে ৷ ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ না দিলে যেসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে কেবলমাত্র তারা এর সুযোগ পাবেন৷ কেননা এ সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলে বড় ধরনের বেকারত্ব দেখা দেবে৷

ঘোষিত মুদ্রানীতিতে আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার পাশাপাশি পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়ক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে তিনি উলেস্নখ করেন৷সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আবুল কাশেম, এস কে সূর চৌধুরী ও নাজনীন সুলতানা, চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট এডভাইজার আলস্নাহ মালিক কাজমী, প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. বীরূপাৰ পাল, অর্থনৈতিক পরামর্শক ড. আখতারম্নজ্জামানসহ উধর্্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন৷