দৈনিকবার্তা_DoinikBarta_mahbub-khondokar-600x400

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ৩ এপ্রিল: সরকার এবং পুলিশের ভয়ে মাঠে নামতে না পারলে দল থেকে সরে দাঁড়াতে বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।তিনি সরকারকে হুঁশিয়ারি করে দিয়ে বলেছেন, আসন্ন সিটি করপোরেশনের নির্বাচন যদি ৫ জানুয়ারির মত প্রহসন হয় তবে তার ভয়াবহ পরিণাম হবে।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে গণতন্ত্র- ভোটাধিকার আইনের শাসন মানবাধিকার ও আজকের বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন। মেডিকেল টেকনোলোজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (এমট্যাব) সভার আয়োজন করে।

খন্দকার মাহবুব বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য বলেন, ‘আপনারা যদি পুলিশকে ভয় করেন, সরকারকে ভয় করেন তবে দল থেকে সরে দাঁড়ান। কারণ দেশের মহা সংকটকালীন সময়ে আপনারা ঘুমিয়ে থাকবেন, আরাম করবেন,পদ রাখবেন এটা হবে না। মাঠে না নামতে পারলে পদত্যাগ করুন।সরকারকে উদ্দেশে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ৫ জানুয়ারির মতো প্রহসনের খেলা যদি আবার আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে খেলতে চান, তবে ঢাকাবাসী ও পেশাজীবী পরিষদকে সঙ্গে নিয়ে আপনাদের কঠোরভাবে মোকাবেলা করা হবে।তিনি বলেন,যখন বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০-দলীয় জোটের আন্দোলন তুঙ্গে, তখন এ সরকার জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন দিকে নিতে সিটি করপোরেশন নির্বাচন দিয়ে শেষ খেলাটি খেললেন।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনা করে এ আইনজীবী নেতা বলেন,দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব ছেড়ে সরকারকে ক্ষমতায় টিকিয়ে রাখার জন্য সবরকম চেষ্টা করছে।

দেশের গণমাধ্যামগুলো সরকার নিয়ন্ত্রিত এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, অগণতান্ত্রিক সরকার গণতন্ত্রের লেবাস পড়ে বিরোধী দলের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। তা যদি গণমাধ্যমগুলো সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারতো, তাহলে এ সরকারের নির্যাতন সম্পর্কে বিশ্ববাসী জানতো। বিএনপির নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য তিনি বলেন, আপনারা যদি পুলিশকে ভয় করেন, সরকারকে ভয় করেন, তবে দল থেকে সরে দাঁড়ান। কারণ দেশের মহা সংকটকালীন সময়ে আপনারা ঘুমিয়ে থাকবেন, আরাম করবেন, পদ রাখবেন এটা হবে না। মাঠে না নামতে পারলে পদত্যাগ করুন।

সালাহ উদ্দিন আহমেদের নিখোঁজের ঘটনা তুলে ধরে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষধের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী বলেন, এই নিখোঁজের ঘটনায় দেশি ও আন্তর্জাতিক মহলের উদ্বেগ সত্ত্বেও রাষ্ট্র সম্পূর্ণ নির্বিকার ভুমিকা পালন করছে। এই ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের মন্ত্রীরা এমন মন্তব্য করেছে যা নিষ্ঠুর পরিহাস ছাড়া কিছুই নয়।গত কয়েক মাসে দেশে গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড নিয়ে দেশে বিদেশী মানবাধিকার সংস্থার পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।তিনি বলেন, রাষ্ট্রের প্রধান দায়িত্ব নাগরিকের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেয়া। এ ব্যাপারে রাষ্ট্র ব্যর্থ হলে নাগরিকরা কোথায় যাবে? সালাহ উদ্দিনকে উদ্ধারের দায়িত্ব সরকারের। কিন্তু উল্টো সরকার পরিহাস করে চলেছে।

সরকার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে একের পর এক গুম আর গুপ্ত হত্যার ঘটনায় মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।তিনি আরো অভিযোগ করেন, পাইকারী হারে হতাকা- চালাতে গিয়ে পুলিশ বাহিনী ঘাতক বাহিনীতে পরিণত হচ্ছে। যার পরিণাম শুভ হতে পারে না। যার ফলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আইনের প্রতি মানুষের আস্থা নষ্ট করার ফল বুমেরাং হতে বাধ্য।আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আয়োজনকে সরকারের অপকৌশল আখ্যা দিয়ে বিএনপিপন্থি এই পেশাজীবী নেতা বলেন, গুম, আর বিচার বহির্ভূত হত্যার পাশাপাশি নীল নকশার অংশ হিসেবে সরকার হঠাৎ করে তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে। তারা পাঁচ জানুয়ারির ভূয়া নির্বাচনের মতো সিটি করপোরেশনকে দখলে নেয়ার অপকৌশল নিয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, বিএনপিকে নির্বাচনী কার্যক্রমে নানাভাবে বাধা দেয়া হচ্ছে। মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা প্রকাশ্যে মাঠে নামতে পারছেন না। কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্নস্থানে প্রায় ৪৪টি কার্যালয় বন্ধ।তিনি অবিলম্বে সিটি করপোরেশনের সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনের স্বার্থে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরীর আহ্বান জানান।

আয়োজক সংগঠনের মহাসচিব বিপ্লবউজ্জামান বিপ্লবের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এ জেড এম জাহিদ হোসেন, দলের গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সানাউল্লা মিয়া, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষধের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজী, ডক্টরর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ড্যাব) মহাসচিব রফিকুল ইসলাম বাচ্চু, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক তানভির আহমেদ প্রমুখ।