DoinikBarta_দৈনিকবার্তা Tofail

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৫ এপ্রিল: গত তিন মাসের জ্বালাও-পোড়াও ও নৈরাজ্যের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেশবাসীর কাছে জবাবদিহি করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।রোববার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।মন্ত্রী বলেন, অবরোধ-হরতাল দিয়ে দুর্নীতির দুই মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে চাইলেও খালেদা জিয়াকে আদালতে হাজির হতে হয়েছে।নিজের ভুল বুঝতে পেরে আদালতে আত্মসমর্পণ করায় তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনকে ধন্যবাদ জানান।এছাড়া নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপিকে ধ্বংসাত্মক আন্দোলন থেকে বের হওয়ার পথ তৈরি করে দেয়া হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তোফায়েল আহমেদ।হরতাল-অবরোধের কারণে দেশের অর্থনীতির তেমন কোনো ক্ষতি হয়নি এ কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তবে তৈরি পোশাক শিল্পে যা লোকসান হয়েছে তা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।

তিন মাসের অবরোধ-হরতালে নাশকতায় প্রাণহানির দিকে ইঙ্গিত করে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, আন্দোলনের নামে মানুষ হত্যা’ ছাড়া আর কিছু অর্জন করতে পারেননি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।এ উপলব্ধি থেকেই বিএনপি নেত্রী আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিয়ে ঘরে ফিরেছেন বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।তারপরেও মানুষ হত্যার জন্য খালেদা জিয়াকে আইনের মুখোমুখি হওয়ার পাশপাশি জনগণের কাছে কৈফিয়ত দিতে হবে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা তোফায়েল।কোর্টে হাজিরা দিয়ে রোববার খালেদা জিয়া গুলশানের বাড়িতে ফেরার পর সচিবালয়ে সাংবাদিকদের তোফায়েল আহমেদ বলেন, তিন মাসে নিরীহ নিরপরাধ মানুষকে হত্যা ও অগ্নিদগ্ধ করা ছাড়া আর কোনো লাভ হয়নি।জনগণের প্রশ্ন এই ৯২ দিন তিনি কী লাভ করেছেন? দেশের মানুষের ক্ষতি করা ছাড়া তার তথাকথিত আন্দোলনে আর কোনো লাভ হয়নি।গত ৩ জানুয়ারি গুলশান নিজের কার্যালয়ে গিয়ে আটকা পড়েন খালেদা জিয়া। দুই দিন পর পুলিশি বাধায় কর্মসূচি পালনে ব্যর্থ হয়ে সারা দেশে অবরোধের ডাক দেন তিনি।

এরপর অবরোধের পাশাপাশি হরতাল ডাকা হয় বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষ থেকে। অবরোধ-হরতালে গাড়িতে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ, অগ্নিসংযোগসহ নাশকতার নানা ঘটনায় শতাধিক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন, দগ্ধ হয়েছেন কয়েকশ। এ সময় পোড়ানো হয়েছে কয়েক হাজার যানবাহন।তিন মাসের মাথায় রোববার সকালে গুলশানের ওই কার্যালয়ই থেকে আদালতে হাজিরা দিয়ে নিজের বাসায় ফিরেছেন খালেদা জিয়া।অবরোধ-হরতালে ক্ষুদ্র চাষীদের ক্ষতি হয়েছে স্বীকার করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিরীহ মানুষ এবং বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।তবে অবরোধ-হরতালে কারখানায় উৎপাদন এবং রপ্তানি ব্যাহত হয়নি বলে দাবি করেন তিনি।মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে বলে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

খালেদা জিয়া কোর্টে গেলেন, সিটি নির্বাচনে অংশ নিলেন, কিন্তু তাকে কৈফিয়ত দিতে হবে এতগুলো জীবন তিনি কেড়ে নিলেন কেন?দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করলেন কেন? বিশ্বে বাংলাদেশের সুনাম ক্ষতিগ্রস্ত করলেন কেন?এখনো দেশে অবরোধের ঘোষণা থাকলেও তাতে মানুষের সাড়া নেই দাবি করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, জঙ্গি তৎপরতা বন্ধ হয়ে গেছে, নাশকতার খবর নেই, পেট্রোল বোমাও কমে গেছে। এর কারণ যারা কাজগুলো করেছে তাদের অনেকেই ধরা খেয়েছেন।একটা দেশ নিয়ে খালেদা জিয়া তিন মাস খেলা করেছেন। বিশ্ব ইজতেমায় মানুষদের আসতে বাধা দিয়েছেন। একুশে ফেব্র“য়ারি, স্বাধীনতা দিবসে অবরোধ রেখেছেন। ছেলের মৃত্যুর পরেও হরতাল-অবরোধ রেখেছেন। পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত করেছেন। দেশের মানুষ সন্ত্রাস, নাশকতা ও জঙ্গি তৎপরতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমার বিশ্বাস খালেদা জিয়া আর এই পথে যাবেন না।নির্বাচন না করে তিনি যে ভুল করেছেন, তথাকথিত আন্দোলনের নামে দেশের যে ক্ষতি করেছেন তা উপলব্ধি করেই কোর্টে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। এজন্য তাকে অনেক ধন্যবাদ, তার শুভবুদ্ধির উদয় হয়েছে।