দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৭ মে: দেশের ৫৬ শিল্পোদ্যোক্তা বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির (সিআইপি-শিল্প) মর্যাদা পেলেন। বেসরকারী খাতে শিল্প স্থাপন, পণ্য উৎপাদন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জাতীয় আয় বৃদ্ধিসহ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার তাদের এই মর্যাদা দিলো শিল্প মন্ত্রণালয়।বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেল এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু সিআইপিদের হাতে কার্ড তুলে দেন।এ সময় তিনি সিআইপি কার্ডপ্রাপ্ত ব্যবসায়ীদের শিল্পখাতের এ্যাম্বেসেডর আখ্যা দিয়ে বলেন, আপনারাদেশে-বিদেশে বাংলাদেশের শিল্পায়নের বার্তা পৌঁছে দেবেন। দেশে গুণগত শিল্পায়নের যে নতুন অভিযাত্রা শুরু হয়েছে, আপনাদের মাধ্যমেই তা বিশ্ববাসী জানতে পারবে।আপনারা মানসম্পন্ন শিল্পপণ্য উৎপাদন করুন এবং বহির্বিশ্বে তা রফতানি করে দেশের ব্র্যান্ডিংয়ের ক্ষেত্রে সহায়তা করুন।
তিনি মনে করেন এই স্বীকৃতি ভবিষ্যতে কর্মস্পৃহা বাড়াতে বিশেষভাবে উৎসাহিত করবে এবং দেশের অন্য শিল্প উদ্যোক্তাদেরও শিল্প উন্নয়নে অনুপ্রাণিত করবে।মন্ত্রী বলেন, শিল্প উদ্যোক্তাদের দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও উদ্যোক্তাসুলভ মানসিকতার কারনে বিএনপির ধ্বংসাত্মক হরতাল-অবরোধের মধ্যেও দেশের অর্থনীতি সচল রয়েছে। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশী পণ্যের সুনাম বাড়াতে সিআইপি মর্যাদা পাওয়া উদ্যোক্তারা বিশেষ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ৭ ক্যাটাগরীতে এই ৫৬ শিল্পোদ্যোক্তাকে ২০১২ সালের জন্য মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। তারা সাত ধরনের রাষ্ট্রীয় সুবিধা পাবেন।
এ বছর সিআইপি মর্যাদা পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১২ জন হয়েছেন পদাধিকার বলে। এরা হলেন- বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি এ কে আজাদ, জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতি বাংলাদেশের (নাসিব) সভাপতি মির্জা নূরুল গণি শোভন, রফতানিমূখী তৈরি পোশাক শিল্প-মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)’র সভাপতি রুপালী হক চৌধুরী, ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)’র সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান খান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই)’র সভাপতি রোকিয়া আফজাল রহমান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিএফএ) সভাপতি তপন চৌধুরী,উইমেন ইন্টারপ্রিনিয়ার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ওয়েব) সভাপতি নাসরীন ফাতেমা আউয়াল, রফতানিমূখী নিট তৈরি পোশাক শিল্প-মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ সভাপতি এ কে এম সেলিম ওসমান, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি সঙ্গীতা আহমেদ ও বাংলাদেশ জুট মিলস্ এসোসিয়েশনের (বিজেএমএ) চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শামস-উজ জোহা।
বৃহৎ শিল্পখাতের ২১ সিআইপি হলেন-জাবের এ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস ছামাদ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, আবদুল মোনেম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল মোনেম, বিআরবি কেবলস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. পারভেজ রহমান, সুপার রিফাইনারি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সেলিম আহমেদ, ফারিহা নিট টেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুল ইসলাম, ইসলাম রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজহারুল ইসলাম, এম আর এস ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামসুর রহমান, পাহাড়তলী টেক্সটাইল এ্যান্ড হোসিয়ারী মিলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা সালমান ইস্পাহানি ও এনভয় টেক্সটাইলস্ লিমিটেডের চেয়ারম্যান কুতুবউদ্দিন আহমেদ।এছাড়া কসমোপলিটন ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের পরিচালক তানভীর আহমেদ, ফুজি-ইংক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান ফারহানা মোনেম, পলো কম্পোজিট নীট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ জলিল, ইউনিভার্সেল জেন্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাছির উদ্দিন, স্কয়ার কনজ্যুমারস প্রোডাক্ট লিমিটেডের অঞ্জন চৌধুরী, বিএসআরএম স্টিলস্ লিমিটেডের চেয়ারম্যান আলী হোসাইন আকবর আলী, এসিআই ফরমুলেশনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এম আনিস উদ দৌলা, প্যাসিফিক জিন্স লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর, জালাল আহমেদ স্পিনিং মিলস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহজাহান, রানার অটোমোবাইলস্ লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান খান, ফার সিরামিকস্ লিমিটেডের চেয়ারম্যান খোদেজা ফরহাদ রুহী ও জেম জুট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী ইনাম আহমেদ।
মাঝারি শিল্পখাতের ৯ সিআইপি হলেন- মেসার্স সিটাডেল এপারেলস্ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাহিদুল ইসলাম খান, বিডি সি ফুড লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ বদরুল হায়দার চৌধুরী, অকো-টেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুস সোবহান, বসুমতি ডিস্ট্রিবিউশন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জেড এম গোলাম নবী, বি আর বি পলিমার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মজিবর রহমান, জেমিনি সি ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী শাহেদ আহমেদ, বিডি ফুডস লিমিটেডের পরিচালক মোহাম্মদ তাফহীম আল-আজমী, এটলাস সি ফুড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মিজানুর রহমান ও ইগলু ফুডস লিমিটেডের পরিচালক এ এস এম মঈনউদ্দিন মোনেম।
ক্ষুদ্র শিল্প খাতের ৬ সিআইপি-কিয়াম মেটাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মিজবার রহমান, বেইলী ইয়ার্ন ডাইং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদ জামান, ফুটবেড ফুটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায়, করিম স্পিনিং মিলস লিমিটেডের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার, আমানত শাহ উইভিং প্রসেসিং লিমিটেডের পরিচালক লুৎফা বেগম ও টেকনোমিডিয়া লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক যশোদা জীবন দেবনাথ।মাইক্রো শিল্পখাতে সিআইপি কার্ড পাওয়া ২ ব্যক্তি হলেন- আরএমএম লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ মাহিন ও এবি ফ্যাশন মেকারের স্বত্বাধিকারী সানাউল হক বাবুল। কুটির শিল্পে সিআইপি কার্ড পেয়েছেন জননী উইভিং ফ্যাক্টরির মালিক মো. রফিকুল ইসলাম।সেবা শিল্প খাতে ৫ উদ্যোক্তাকে সিআইপি মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এরা হলেন- নাভানা রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম, এসটিএস হোল্ডিংস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খন্দকার মনির উদ্দীন, শান্তা প্রপার্টিজ লিমিটেডের পরিচালক জেসমিন সুলতানা, নাভানা লিমিটেডের চেয়ারম্যান শফিউল ইসলাম ও শেলটেক লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌফিক এম সেরাজ।সিআইপি কার্ড প্রদান উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে শিল্পসচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূইয়া, এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরামউদ্দিন আহমেদ, এসিআই গ্রুপের চেয়ারম্যান এম আনিস উদ দৌলা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
