jotদৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১৫ মে ২০১৫: বাঙালি সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতেই বর্ষবরণের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নারীদের ওপর বর্বর নির্যাতন করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।শুক্রবার সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নারীর প্রতি নির্যাতনের প্রতিবাদে সাইকেল র‌্যালির আগে এক বিক্ষোভ-সমাবেশে তারা এসব কথা বলেন। পহেলা বৈশাখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যৌন হয়রানির ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে ২৫ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি দেবে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট।শুক্রবার সকাল ১০টায় জাতীয় শহীদ মিনার থেকে এ কর্মসূচির ঘোষণা করেন সংগঠনের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস।গণমাধ্যমে অপরাধীধের ছবি প্রকাশের পরও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী তাদের গ্রেপ্তারে ব্যর্থ হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তারা। এছাড়া নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ-ডিএমপি কার্যালয়ে স্মারকলিপি দিতে গেলে যেসব পুলিশ সদস্য নারীদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন সংস্কৃতিকর্মীরা।পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে সাইকেল র‌্যালিটি দোয়েল চত্বর, কাটাবন হয়ে টিএসসি এসে শেষ হয়। পহেলা বৈশাখে নারী নির্যাতন, বাঙালি সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ষড়ষন্ত্র, ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনকে কলুষিত করার ষড়ষন্ত্রের প্রতিবাদ’ শীর্ষক সমাবেশের আয়োজন করে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। সমাবেশটির সহযোগিতায় ছিল বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদ।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে গোলাম কুদ্দুস বলেন, আমরা বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলাম যাতে করে বাংলাদেশের মানুষ তার নাগরিক ও সাংবিধানিক অধিকার ভোগ করতে পারে।কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে, এ স্বাধীন দেশে কিছু কুচক্রী মহল বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন গোত্রের ওপর নির্যাতন করছে। পহেলা বৈশাখের ঘটনা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ।তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে নারীদের ওপর হামলা পুরো নারী জাতিকে অপমান করেছে। আমরা এ হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। গোলাম কুদ্দুস বলেন, পহেলা বৈশাখে যে নরপশুরা নারীদের ওপর হামলা করেছিলো তারা এখনো গ্রেফতার হয়নি। এটি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। কারণ হামলাকারীদের চেহারা স্পষ্ট। তারপরও কেন পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে পারছে না সেটা আমাদের বোধগম্য হচ্ছে না।

এসময় তিনি ঘটনার সাথে জড়িতদের ধরিয়ে দিতে টেলিভিশনে বিজ্ঞাপন দিতে অনুরোধ করেন।এক পুলিশ সদস্যের বরখাস্তের বিষয়ে তিনি বলেন,শুধুমাত্র একজন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করলেই হবে না। ঘটনাস্থলে যেসব পুলিশ সদস্য তাদের কর্তব্যের অবহেলা করেছে তাদের সবাইকে বরখাস্ত করতে হবে।কেননা গুটিকয়েক পুলিশ সদস্যের জন্য বাংলাদেশের গৌরবের এই বাহিনীকে কোনোভাবেই কলুষিত করা উচিৎ হবে না বলে।কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও ঘটনার সময় কর্তব্যে অবহেলার দায়ে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের বরখাস্ত করার দাবিতে ২৫ মে সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি থেকে মিছিল নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হবে।সমাবেশ শেষে সাইকেল র্যালি অনুষ্ঠিত হয়। র্যালিটি শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে দোয়েল চত্বর, শাহবাগ মোড় ও কাঁটাবন হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনে গিয়ে শেষ হয়।সমাবেশ ও সাইকেল র্যালিতে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন ইউসুফ, সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম শামসুল হুদা, নির্বাহী সদস্য শাহাদাৎ হোসেন নিপু, বাংলাদেশ সাইকেল লেন বাস্তবায়ন পরিষদের সভাপতি আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ পথনাট্য পরিষদ সহ-সাধারণ সম্পাদক আহমেদ গিয়াসসহ বিভিন্ন সাইক্লিস্ট ও স্কেটিংয়ের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।