Gazipur-(2)- 27 May 2015-Murder-2

দৈনিকবার্তা-গাজীপুর, ২৭ মে: গাজীপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন এক যুবক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে কুপিয়ে গৃহবধূ এক বৃদ্ধাকে হত্যা করেছে। এসময় তার এলোপাতাড়ি কোপে ওই বৃদ্ধার স্বামীও গুরুতর আহত হয়েছে। পরে এলাকাবাসির গণ পিটুনিতে হত্যাকারী যুবকটিও নিহত হয়েছে।

জয়দেবপুর থানার এসআই আজিজুল হক ও এলাকাবাসি জানায়, বুধবার সকালে গাজীপুর মহানগরীর ভানুয়া এলাকার বৃদ্ধ আলাউদ্দিন (৭০) দা’ নিয়ে বাড়ির পাশে বাঁশের খুঁটি বানাচ্ছিলেন। তিনি দা’টি সেখানে রেখে বাড়িতে আসেন। তখন তার পাশেই বসে ছিলেন ছোট ছেলে সফিকুল ইসলামের স্ত্রী রাবেয়ার ভাতিজা মোকাররম (২২)। গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার নরুন মসজিদ পাড়া এলাকার মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোকাররম তিন চারদিন আগে তার ফুফু রাবেয়ার বাড়িতে বেড়াতে আসে।

এক পর্যায়ে আলাউদ্দিন বাড়ি থেকে ফিরে গিয়ে মোকাররমের কাছে দা’ চাইলে কোনো কিছু না বলেই মোকাররম ‘আল্লাহু আকবর’ বলে আলাউদ্দিনের ঘাড়ে ও দু’হাতে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। এঘটনায় গুরুতর আহত আলাউদ্দিন চিৎকার দিয়ে দৌঁড়ে পালাতে থাকেন। চিৎকার শুনে তার স্ত্রী আকলিমা (৬৫) সহ বাড়ির অন্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এসময় মোকাররম ওই দা দিয়ে আলাউদ্দিনের স্ত্রী আকলিমা বেগমেরও ঘাড়, মাথা ও বুকে এলোপাতাড়ি কোপায়। এতে আকলিমা ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। ঘটনার সময় বাড়ির অন্যরা এগিয়ে এসে তাকে বাধা দেয়ার চেষ্টা করলে মোকাররম দা’ নিয়ে ‘আল্লাহু আকবর’ বলে তাদেরও ধাওয়া করে। একপর্যায়ে এলাকাবাসি ঘাতক মোকাররমকে আটকে গণপিটুনি দেয় ও বেধে ফেলে।

পরে এলাকাবাসি গুরুতর আহত আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় প্রথমে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরে রাজধানী উত্তরার জাহানারা ক্লিনিকে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে জয়দেবপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত আকলিমার লাশ ও মোকাররমকে উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক গণপিটুনির শিকার মোকাররমকে মৃত ঘোষণা করেন। মোকাররম মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল বলে স্বজনরা জানিয়েছে। আহত আলাউদ্দিন গাজীপুরে ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড কলেজের মালী পদে চাকরি করেন।

মোকাররমের বড় ভাই মোশাররফ জানান, মোকাররম মানসিক ভারসাম্যহীন ছিল। কোরআনের ১৬ পারা’র হাফেজ মোকাররম মাঝে মধ্যেই পাগল হয়ে যায়। মানসিক ভারসাম্যহীন হওয়ায় গত এক বছর আগে হাতে পায়ে শিকল দিয়ে তাকে বেঁধে রাখা হতো।