news_img

দৈনিকবার্তা-মংলা, ৯ জুলাই: উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট মৌসুমী লঘুচাপের প্রভাবে গত দু’দিনের ভারী বৃষ্টিপাতে মংলা শহর ও শহরতলীর সর্বত্র হাটু পানি বিরাজ করছে। পৌর শহরের সকল ড্রেন ও খাল বন্ধ থাকায় পানি নামতে না পারায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। পানিতে তলিয়ে রয়েছে শহরের সকল সরকারী-বেসরকারী স্থাপনা। হাটু পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে বসত ঘর বাড়ি ও রান্নার ঘর। বন্ধ হয়ে গেছে রান্নাবান্নাসহ সকল কাজ কর্ম। পৌর এলাকা ও বিভিন্ন ইউনিয়নের সব জায়গাতেই একই অবস্থা। পানিতে ভেসে গেছে শত শত মাছের পুকুর ও চিংড়ি ঘের।

এমতাবস্থায়ও জলাবদ্ধতা নিরসনে পৌর কর্তৃপক্ষের তেমন কোন উদ্যোগ নেই। বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় লোকজন ক্ষুদ্ধ হয়ে শহরের ঠাকুরানী খালের বাধের একাংশ কেটে দিলেও প্রবল বৃষ্টির কারণে পানির চাপ কমছে না কিছুতেই। পৌর এলাকার ৩টি খালে বাধ দিয়ে স্লুইস গেট নির্মাণ ও ড্রেন বন্ধ রেখে নতুন রাস্তাসহ ড্রেন নির্মাণের কাজ করায় পানি নামতে না পারায় বৃষ্টির পানিতে সৃষ্টি হয়েছে ভয়াবহ জলাদ্ধতা। লক্ষাধিক পৌরবাসী জলাবদ্ধতার শিকার হয়ে গত কয়েকদিন ধরে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ বিষয়ে পৌর মেয়র মো: জুলফিকার আলী বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হচ্ছে।

এদিকে ভারী বৃষ্টির কারণে বুধবার ভোর থেকে মংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল, হাড়বাড়িয়া এবং বহির্নোঙ্গরে অবস্থানরত সকল দেশী-বিদেশী বাণিজ্যিক জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস কাজ সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে বন্দরের পরিচালক (ট্রাফিক) মো: মোক্তাদের। লঘুটাপের কারণে বৃহস্পতিবারও মংলা বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত বলবৎ রয়েছে। দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া শত শত ট্রলার সুন্দরবনসহ উপকূলীয় বিভিন্ন নদী ও খালে আশ্রয় নিয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।

flooadএদিকে,বাগেরহাটের রামপালে টর্নেডোর আঘাতে ২টি গ্রামের ৪০/৫০টি বাড়ি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকজন আহতও হয়েছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা স্বপন কুমার ব্রহ্ম ও পেড়িখালী ইউনিয়নের ডাকরা ও কুমারখালীর ওয়ার্ড সদস্য শেখ আবু হায়াত জানান, বৃহস্পতিবার সকালে করে ২টি গ্রামে হঠাৎ টর্নেডো আঘাত হানে। এতে ডাকরা ও কুমারখালী গ্রামে প্রায় অর্ধ শতাধিক ঘর বাড়ি বিধ্বস্ত হয়। এ সময় অনিল ডাকুয়া, সুনিখ ডাকুয়াসহ ৫/৬ জন আহত হন। ঝড়ে বেশ কিছু গাছপালা ভেঙ্গে ও উপড়ে পড়ে।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এদিকে আহতদেরকে স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রাফা মোহাম্মাদ আরিফ বলেন, টর্নেডোর আঘাত হানার বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করে ত্রাণ সহায়তা প্রদাণ করা হবে। ক্ষতিগ্রস্তরা দ্রুত যাতে ত্রাণ সহায়তা পান তার জোর দাবি জানিয়েছেন পেড়িখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম বাবুল। এদিকে নি¤œচাপের প্রভাবে ৩ দিনের টানা বর্ষনে উপজেলার নি¤œাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। নি¤œ আয়ের মানুষদের দূর্ভোগ চরমে পৌছেছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দ্বিগুন বেড়ে জিনিসপত্রের দাম।