tofyel-ahomed

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১২ জুলাই: বিদেশি বিনিয়োগ আশানুরুপ না হওয়া প্রসঙ্গে বাণিজ্য মন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, জমি ও গ্যাস স্বল্পতার কারণে চাহিদামতো বিদেশি বিনিয়োগ পাচ্ছি না। জমির স্বল্পতার কারণে স্যামসাং আমাদের দেশে বিনিয়োগ করতে পারেনি। শুধু বিদেশি নয়, দেশেরও অনেকে বিনিয়োগ করতে পারছে না।তিনি আরো বলেন, বিদেশী বিনিয়োগের সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে গ্যাস। বিদেশীদের কথা বাদ দেন, দেশীয় যারা ২০০-৩০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে কারখানা করেছে তাদেরই গ্যাস সংযোগ দিতে পারছি না। এজন্য সম্ভাবনাময় স্থানে গ্যাস উত্তোলনের বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে রবিবার সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা (২০১৬-২০) দলিলের খাতভিত্তিক পরামর্শ সভায় টওধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।তিনি আরো বলেন, পৃথিবীতে কোথাও এ্যাকড এ্যালায়েন্স নেই। অথচ আমাদের দেশে তারা কাজ করছে। এটা দুভার্গ্যজনক।আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী ইমাজ উদ্দিন প্রামাণিক ও প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা মসিউর রহমান। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য ড. শামসুল আলম।

বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রফতানি বাড়াতে পণ্য বৈচিত্র্য ও বাজারের বৈচিত্র্য আনতে হবে। বর্তমানে আমরা পোশাক খাতের ওপর নির্ভর করছি। এছাড়াও আইটি, জাহাজ, চামড়া, কৃষি শিল্পের ওপর জোর দিতে হবে। আগে আমরা রফতানির জন্য কানাডা, আমেরিকা ও ইউরোপিয় ইউনিয়নের ওপর নির্ভর ছিলাম। এখন ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনায় নতুন বাজার সৃষ্টি করেছি।সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ(এফডিআই) প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ পেতে ভিয়েতনাম ফ্রি জমি দিচ্ছে। ভারতের রাজস্থানও ফ্রি জমি দিচ্ছে। অথচ বিদেশের নামি-দামি কোম্পানিকে আমরা জমি দিতে পারছি না।

এতে করে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বিনিয়োগ।মন্ত্রী বলেন, গ্যাস সংকটের কারণেও বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ঈশ্বরদী ইপিজেডে ডেনিম কোম্পানি ২০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিল। কিন্তু তারা গ্যাস না পাওয়ার কারণে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ভোলায় গ্যাস ও জমি আছে, সেখানে বিদেশি বিনিয়োগ হতে পারে। আমাদের উত্তরবঙ্গেও পর্যাপ্ত জমি আছে, সেখানে গ্যাস সংযোগ দিয়ে শিল্প কারখানাগড়ে তোলা যাডিউটি ফ্রি প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, তামাক ও অ্যালকোহল ছাড়া অধিকাংশ পণ্যে আমরা ডিউটি ফ্রি পেয়েছি। চীনে ৫০০টি পণ্যের ডিউটি ফ্রি পেয়েছি। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।

জিএসপি প্রসঙ্গে তোফায়েল বলেন, পৃথিবীতে অনেকে দেশের শিল্প কারখানায় বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অ্যাকওয়ার্ড ও অ্যালায়েন্স করতে হয়নি। কিন্তু রানা প্লাজার ঘটনায় এটি করতে হয়েছে। জিএসপি থেকে আমরা খুব বেশি সুবিধা পাইনি। সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কৃষির সঙ্গে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের সমন্বয় করতে হবে। রফতানি বৃদ্ধির পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বাজারের বিষয়ও নজর দিতে হবে। আর প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রম বাড়াতে হবে। আমেরিকার সঙ্গে ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট করতে হবে।বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর আহ্বানও জানান তিনি।

বাংলাদেশ ইনস্যুরেন্স ডিপ্লোমা এ্যাসোসিয়েশন (বিআইডিএ) মহাপরিচালক কেএস মুর্শিদ বলেন, ইকোনমিক জোন করতেই হবে।শিল্পসচিব মোশারফ হোসেন বলেন, এফডিআই আনতে জায়গা করে দিতে হবে। শিল্প খাতের উন্নয়নে ইন্ডাস্ট্রিয়ান পলিসি করা হচ্ছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে এটি চূড়ান্ত হবে।ঢাকা চেম্বার অব কমার্স এ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট শহীদ চৌধুরী বলেন, বিমানের লাগেজ বিড়ম্বনার কারণে দেশের ইমেজ নষ্ট হচ্ছে। কৃষিভিত্তিক শিল্প স্থাপনা সমস্যাগুলো খুঁজে বের করতে হবে।