abul mal muhit

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১২ জুলাই: অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, মাত্র ৬০ হাজার প্রতিষ্ঠান ভ্যাট দেয়। যারা ভ্যাট দেয়ার উপযুক্ত তাদের ধারে-কাছেও নেই এ সংখ্যা। এটি মোটেও সন্তোষজনক নয়। অন্তত ৩ থেকে ৬ লাখ প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে। রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সর্বোচ্চ ভ্যাটদাতাদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এনবিআরের সদস্য মো. ফরিদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর অর্থবিষয়ক উপদেষ্ঠা ড. মসিউর রহমান, অর্থমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমেদ প্রমুখ।এ সময় অর্থমন্ত্রী বলেন, ভ্যাট মোটেও জনপ্রিয় কর নয়। এমনকি কোনো করই জনপ্রিয় নয়।

তবে আমার নিজস্ব মতামত হলো, ভ্যাট সবচেয়ে ভালো কর। যদি হিসাব- নিকাষ ঠিকভাবে রাখা যায়। পণ্যে যতটুকু মূল্য সংযোজন করা হবে তার ওপরই কর দিতে হবে।তিনি বলেন, আরও অধিক প্রতিষ্ঠান ভ্যাটের আওতায় আনা সম্ভব হলে বেশি মানুষকে সুবিধা দেওয়া যাবে। এ জন্য ভ্যাট আদায়ে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।

মূল্য সংযোজন কর(মূসক)দেওয়ার যোগ্য এমন ৩ থেকে ৪ লাখ প্রতিষ্ঠান মূসক দেয় না বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।মুহিত বলেন, দেশে মূসক দেয় মাত্র ৬০ হাজার প্রতিষ্ঠান। যারা মূসক দেওয়ার যোগ্য এই ৬০ হাজার প্রতিষ্ঠান তার ধারে কাছেও নেই। ৩ থেকে ৪ লাখ প্রতিষ্ঠান আছে যারা মূসক দেওয়ার যোগ্য। কিন্তু তারা মূসক দেয় না।আমাদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হলো কি করে করের আওতা বাড়ানো যায়। মানুষের সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর জন্যই করের আওতা বাড়ানো প্রয়োজন বলেন মুহিত।

তিনি বলেন, আমাদের কাছে মূসক জনপ্রিয় না। আসলে কোন করই জনপ্রিয় না। এরমধ্যে মূসক বেশি অজনপ্রিয়। তবে আমাদের ব্যক্তিগত অভিমত মূসক সব থেকে ভালো কর।অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমরা কেউ কর দিতে চাই না। ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদের একজন সদস্য ২০০৯ সাল পর্যন্ত টিআইএন সম্পর্কে জানতেন না।বিনিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের মধ্যে ধারণা বিদ্যুৎ ও অবকাঠামোগত সমস্যার কারণে বেসরকারি বিনিয়োগ হচ্ছে না।

কিন্তু আমাদের বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেক বেড়েছে। রাস্তাঘাটের উন্নয়নও বেশি হয়েছে। তার পারও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়েনি। বেসরকারি বিনিয়োগ না বাড়লে কর আদায়ে তা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এতে সরকারের বিনিয়োগও বাধাগ্রস্ত হবে বলেন আব্দুল রাজ্জাক।

তিনি বলেন আমাদের করের আওতা বাড়াতে হবে। ঢাকা শহরে অনেকে ৮ থেকে ১০ বাড়ি ভাড়া দেন। অথচ তাদের করের পরিমাণ খুবই কম। আমি মনেকরি আমাদের করের আওতা বাড়ানো সম্ভব।রাজস্ব আদায় করতে গিয়ে মানুষ যাতে হয়রানি শিকার না হয় তার আহ্বান জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে ১৮ লাখ টিআইএন ধারী। এরমধ্যে কর দেয় মাত্র ১১ লাখ। গ্রামে কর দেওয়ার মতো অনেকে আছে। তাদেরকে টিআইএন নম্বর দিয়ে কর আদায়ের ব্যবস্থা করলে রাজস্ব আদায় অনেক বাড়বে।

ভ্যাট আদায়ের অটোমেশন সম্পর্কে মশিউর রহমান বলেন, যারা কর দিবেন তাদের অটোমেশন সম্পর্কে জানতে হবে। তা না হলে শুধু ব্যয় বাড়বে। রাজস্ব আদায় বাড়বে না। এ জন্য এনবিআরএ’র কাজ হবে বড় ব্যবসায়ীসহ করদাতাদের অটোমেশনের মধ্যে আনা।মাতলুব আহমদ বলেন, সঠিক ভাবে মূসক আদায় করলে বাজেটের অর্থায়ন অভ্যন্তরীণ উৎস থেকেই করা সম্ভব। বিদেশি অর্থের প্রয়োজন হবে না।অনুষ্ঠানে সর্বোচ্চ ভ্যাট দাতা ১১৯ জনকে পুরস্কৃত করা হয়।