eknek-d

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ : ৭ হাজার ২১৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)৷ এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার অর্থায়ন করবে ৩ হাজার ১১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা৷ বাকি অর্থের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে ১০৪ কোটি টাকা এবং প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিভিন্ন দাতা সংস্থা দেবে ৩ হাজার ৯৯৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা৷মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁও এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়৷সভায় সভাপতিত্ব করেন একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা৷

সভায় অনুমোদিত ৭টি প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭ হাজার ২শ’ ১৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা৷ এর মধ্যে জিওবি ৩ হাজার ১শ’ ১৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ১০৪ কোটি টাকা, প্রকল্প সাহায্য ৩ হাজার ৯৯৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকা৷ সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার প্রকল্পের (ফেজ-৩) মোট ব্যয় ৪ হাজার ৫শ’ ৯৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা৷ এ প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ৪শ’ ৫০ কোটি লিটার ক্ষমতাসম্পন্ন সারফেজ ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট নির্মাণের মাধ্যমে ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের নির্ভরতা কমানো৷

প্রকল্পের মাধ্যমে স্লাজ(ংষঁফমব) ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণের পাশাপাশি ৫৪ কিলোমিটার পানি বিতরণ লাইন স্থাপন করা হবে৷ ৩৩ কেভি ইলেকট্রিক লাইন ও ৫২ দশমিক ৮ কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন নির্মাণ করা হবে৷একনেক সভা পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, সভায় নগরবাসীর পানির চাহিদা পূরণ করার জন্য ৪ হাজার ৫শ’ ৯৭ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সায়েদাবাদ পানি শোধনাগার’ নামে একটি বড় প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৷

তিনি বলেন, রাজধানীতে বর্তমানে মোট জনসংখ্যা প্রায় দেড় কোটি৷ তাদের প্রতিদিনের পানির চাহিদা ২ হাজার ২শ’ মিলিয়ন লিটার পার ডে (এমএলডি)৷ কিন্ত এ চাহিদার মধ্যে ২ হাজার এমএলডি পানি সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে৷ জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে প্রতিনিয়ত এ চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ এভাবে ২০৩৫ সালে প্রতিদিনের পানির চাহিদা হবে ৫ হাজার ২শ’ ৬৮ এমএলডি৷ এসব দিক বিবেচনা করে এ প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে৷ ২০১৫ সালের জুলাই থেকে ২০২০ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে৷পরিকল্পমন্ত্রী বলেন, পানি উত্তোলনের জন্য ওয়াসা মূলত ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরশীল৷ ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ফলে প্রতি বছর পানির স্তর ২-৩ মিটার নিচে নেমে যাচ্ছে৷ যা শুধু পরিবেশেরই জন্য হুমকি নয়, খাবার পানির জন্যও হুমকিস্বরুপ৷ এ কারণে সরকারের পরিকল্পনায় আছে, আমরা ২০৩৫ সালের মধ্যে ভূ-গর্ভস্থ পানি ব্যবহার করবো ৩০ শতাংশ ও ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার করবো ৭০ শতাংশ৷ বৃষ্টি ও অন্যান্য পানি এ শোধনাগারে নিয়ে খাওয়ার উপযোগী করবো৷

অনুমোদিত অন্য প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘বিসিক শিল্প পার্ক প্রকল্প৷ প্রকল্পটি ১শ’ ৬৪ কোটি টাকা ব্যয়ে টাঙ্গাইলে বাস্তবায়ন করা হবে৷৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশ ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউটের সমন্বিত গবেষণা কার্যক্রম জোরদারকরণ’ প্রকল্পও সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়৷

এছাড়া বগুড়া জেলার সরিয়াকান্দি উপজেলাধীন কুর্নিবাড়ী হতে চন্দনবাইশা পর্যন্ত যমুনা নদীর ডান তীর সংরক্ষণ কাজসহ বিকল্প বাঁধ নির্মাণ’ প্রকল্পটির বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে সাড়ে ৩শ’ কোটি টাকা৷১ হাজার ৮শ’ ৪৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কর্ণফুলী পানি সরবরাহ প্রকল্পেরও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে৷ এর মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মানুষ ভূ-উপরিস্থ পানি পান করতে পারবেন৷ মেঘনা সেতুর স্কাউয়ার প্রটেকশন এবং মেঘনা সেতু ও গোমতী সেতুর রক্ষণাবেক্ষণ প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪১ কোটি টাকা৷চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকার রাস্তাগুলো এ্যাসফল্ট প্ল্যান্টের মাধ্যমে উন্নয়ন করা হবে৷ প্রকল্পটির বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২শ’ কোটি টাকা৷একনেক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলন আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থ পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, পরিকল্পনা কমিশনের সচিব সফিকুল আজম, আইএমইডি’র সচিব শহিদ উল্লা খন্দকার, বিবিএস’র সচিব কানিজ ফাতেমা, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য ড. শামসুল আলম, আরাস্তু খান, হুমায়ুন খালিদ ও গোলাম ফারুক প্রমুখ৷