Rajibpur pictur 07.09.2015 (2)

দৈনিকবার্তা-রাজীবপুর (কুড়িগ্রাম), ৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৫: কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক না থাকা এবং বিনা চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় তুলকালাম কান্ডের খবর পাওয়া গেছে। এসময় রোগীর স্বজন ও স্থানীয় জনতা বিক্ষুদ্ধ হয়ে চিকিৎসক-নার্সকে মারধোর, জানালা দরজা ভাংচুর এবং হাসপাতাল ঘেরাও করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। বিক্ষুদ্ধ জনতার মারমুখীতে হাসপাতালের কর্মকর্তা, নার্স ও কর্মচারীরা আত্মগোপন করে। পরিস্থিতি চরম উত্তেজনার হলে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান থানা পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা আর জড়িত নার্সদের প্রত্যাহারের আশ্বাস এবং প্রয়োজনীয় সার্বক্ষনিক চিকিৎসক থাকবে এমন নিশ্চয়তা দেয়ার পর বিক্ষুদ্ধ শান্ত হয়। আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে ওই ঘটনা ঘটে।

চিকিৎসকের অবহেলায় নিহত রোগীর স্বজন জয়নাল হক অভিযোগ করে জানান, গতকাল রবিবার সন্ধা ৭টায় আশংকাজনক অবস্থায় রোগীটাকে হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসা সহকারী (মেডিকেল এস্ট্যিান্ট) আব্দুল কুদ্দুস ভর্তি করায়। কিন্তু সারা রাত গেলেও হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা বা মেডিকেল অফিসার রোগীর কাছে আসেনি। একজন নার্স ঘুমের ইনজেকশন পুশ করার পর রোগীর আর জ্ঞান ফেরেনি। ভোর ৬টার দিকে মরার খবর পেলে রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসি বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিক্ষুদ্ধ জনতা হাসপাতালের কয়েকটি জানালা, দরজা ভাংচুর করে। ফাতেমা বেগম নামের এক নার্সকে ধাওয়া করে। এসময় চিকিৎসা সহকারী আব্দুল কুদ্দুসকে মারধোর করে জনতা। তবে স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাবুদ আলীকে খুঁজে পায়নি তারা।
নিহত রোগীর নাম আব্দুল আলীম (৩৫)। উপজেলার টাঙ্গালিয়া পাড়া গ্রামের সূর্য স্বর্নকারের পুত্র। নিহতের স্ত্রী জানান, রবিবার সন্ধায় হঠাৎ করেই অসুস্থ্য হয়ে পড়ে তার স্বামী। তবে কি ধরণের অসুস্থ্য তিনি তা জানাতে পারেননি। তিনি অভিযোগ করেন, হাসপাতালে কোনো ডাক্তার তার স্বামীকে দেখতে আসেনি। চিকিৎসা পাইলে আমার স্বামী বাইচা থাকত।

Rajibpur pictur 07.09.2015 (3)

হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা মাবুদ আলী জানান, ওই রোগীকে হাসপাতালে আনার পরই আমরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বাইরে নেয়ার কথা বলেছি। স্টক করায় রোগীর অবস্থা এমনিতেই খারাব ছিল। আমরা দ্রুত বাইরে নিতে বলেছি কিন্তু তারা নেয়নি। যার ফলে মারা গেছে। এলাকাবাসি না বুঝে আমার বাসভবনের গেট ও জানালা ভাংচুর করেছে। আমার লোকদের মারধোর করেছে। রোগীর কাছে কোনো চিকিৎসক যায়নি-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি নিজেই রোগীর কাছে গিয়ে রোগীর স্বজন বাইরে নেয়ার কথা বলেছি। তাছাড়া আমারদের হাসপাতালে আমি ছাড়া কোনো চিকিৎসক নেই। চিকিৎসা কার্যক্রম চালাচ্ছে নার্স আর মেডিকেল এস্টিট্যান্টরা।’রাজীবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিউল আলম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল লতিফ খান জানান, আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। তবে চিকিৎসায় অবহেলা ছিল হাসপাতালের। বিষয়টি জেলা সিভিল সার্জনকে অবহিত করা হয়েছে রাজীবপুর প্রয়োজনীয় চিকিৎসক দেয়ার জন্য। নিহত ব্যক্তির জানাযা দাফনের জন্য উপজেলা ফান্ড থেকে টাকা দেয়া হয়েছে নিহতের পরিবারকে