1878_322186

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৫: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি এডিট করে পাশাপাশি রেখে ফেইসবুক পেজে পোস্ট করার অভিযোগে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমানকে বহিষ্কার করেছে সংগঠনটি।শুক্রবার তাকে বহিস্কার করা হয়। একইসাথে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ চেয়ারম্যান বরাবর কারন দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হলঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক ইমদাদুল হক বলেন, দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ মাকসুদুর রহমানকে বহিস্কার করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি এডিট করে তার সঙ্গে পাশাপাশি রেখে ফেইসবুক পেইজে ছেড়েছেন।

মাকসুদুর রহমানকে কী কারণে বহিস্কার করা হয়েছে জানতে চাইলে আওয়ামী যুবলীগের গ্রন্থ ও প্রকাশনা সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ বাবলু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি এডিট করে তার সঙ্গে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছেন এমন ছবি ফেইসবুক পেইজে পোস্ট করেছেন। মূলত এ কারণেই তাকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক পদ থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।এ বিষয়ে আওয়ামী যুবলীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক বোরহান বাবু বলেন,এখন পর্যন্ত আমি কোনো ম্যাসেস পাইনি।তবে আমি শুনেছি তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।্রসঙ্গত, বৃহস্পতিব্র যুগান্তর পত্রিকার একটি অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রচার করে। যুগান্তরের রিপোর্টের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় যুবলীগ মহানগর যুবলীগের এই নেতাকে বহিষ্কার করেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়,মাকসুদার রহমান মাকসুদ ওই ছবি তার ফেসবুক পেজে আপলোড করেছেন।ফেসবুকে থাকা ওই ছবি ৪৩টি শেয়ার হয়েছে। লাইক এবং কমেন্টও রয়েছে অনেক। সুপার ইম্পোজিং করা ছবি দিয়ে পোস্টারিং করারও অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাও অবহিত।তারা এ নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছে।জানা যায়, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান মাকসুদ। তিনি আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ভোলায়। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী ও জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের সঙ্গে নিজের একটি ছবি সুপার ইম্পোজিং করে ফেসবুকে আপলোড করেন। ফেসবুকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী তিনি ছবিটি আপলোড করেন ২০১৩ সালের ২১ অক্টোবর সকাল ১০টা ১০ মিনিটে। ছবির বিবরণে লেখা হয়েছে ‘রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার সঙ্গে একান্তভাবে ঢাকা সিটি যুবলীগ সাউথের অর্গানাইজিং সেক. মাকসুদুর রহমান মাকসুদ।

ছবিতে দেখা যাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রীর ডান পাশে মতিয়া চৌধুরী ও বাম পাশে কালো সানগ্লাস পরিহিত মাকসুদ। ছবিতে প্রধানমন্ত্রীর পাশে তার পোজ ও ভঙ্গিমা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু ও প্রধানমন্ত্রীর জন্য সম্মানহানিকর। ছবিতে তার পেছনে বর্তমান চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ।আইটি বিশেষজ্ঞরাও ছবিটি দেখে নিশ্চিত করেছেন যে,এটি সুপার ইম্পোজিং করা ছবি। যে স্থানে মাকসুদের ছবি সেখানে সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত অন্য কোনো নেতার ছবি ছিল, সেটি সরিয়ে মাকসুদের ছবি বসানো হয়েছে। সিআইডি ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারাও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ছবিটি সুপার ইম্পোজিং করা বলে নিশ্চিত হয়েছেন।সিআইডির নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইমেজ বিশ্লেষক জানান, ছবিটিতে প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যদের ছবিতে এক ফ্ল্যাশ আর মাকসুদের ছবিতে আলাদা ফ্ল্যাশ রয়েছে। দুটি ছবি তুলতে ক্যামেরার দূরুত্বও ছিল ভিন্ন। প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যদের ছবিটি মাকসুদের ছবির চাইতে চার থেকে ৫ ফুট দূর থেকে তোলা। ছবির রেজুলেশনসহ অন্য আনুষঙ্গিক বিষয়েও পার্থক্য রয়েছে। সিআইডির অপর এক কর্মকর্তা জানান,সাধারণত প্রধানমন্ত্রীর ছবি পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমতি নিতে হয়।