Jhenidha Photo-1

দৈনিকবার্তা-ঝিনাইদহ, ০৪ জানুয়ারি ২০১৬: বিদেশ থেকে পাঠানো ৪০ লাখ টাকা ফেরত না পেয়েই দুই ভাতিজা আর এক ভাগিনাকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন ঘাতক ইকবাল হোসেন। ঘটনার পর রোববার সন্ধ্যার দিকে পুলিশের হাতে আটক হন ইকবাল হোসেন। এরপর তাকে শৈলকুপা থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে হত্যার কারণ উল্লেখ করেন ঘাতক ইকবাল।শৈলকুপা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) এমদাদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।ইকবাল পুলিশকে জানান, বিদেশে থাকা অবস্থায় তিনি তার বাবা গোলাম নবী ও ছোট ভাই স্কুল শিক্ষক দেলোয়ার হোসনকে টাকা পাঠাতেন। কিন্তু সে টাকার কোনো হিসাব তারা দিতে পারেননি। তাই ভাইয়ের পরিবারকে নিঃবংশ করতেই দুই ভাতিজাকে ঘরে ঢুকিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। এসময় বোনের ছেলে ঘটনা দেখা ফেলায় তাকেও ঘরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শৈলকুপা পৌর এলাকার কবিরপুর গ্রামের ইকবাল হোসেন দীর্ঘ আট বছর সিঙ্গাপুরে ছিলেন। ছয় মাস আগে তিনি নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন। এরপর থেকেই ছোট ভাই দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে সিঙ্গাপুর থেকে পাঠানো টাকা নিয়ে পারিবারিক কোন্দল শুরু হয়। কিন্তু ছোট ভাই টাকার কোনো হিসাব দিতে পারছিলেন না। তাই ছোট ভাইয়ের ওপর ক্ষিপ্ত হন ইকবাল।

ওই ক্ষোভের কারণেই রোববার সন্ধ্যার দিকে ইকবাল হোসেন বাড়ি ফাঁকা পেয়ে ছোটভাই স্কুলশিক্ষক দেলোয়ারের তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মোস্তফা সাফিন মিম ও প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া মোস্তফা আমিন সেতুকে দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলে। এসময় ভাগিনা অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ফাহিম ঘটনা দেখে ফেলায় তাকেও দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। এরপর হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করেন তিন শিশুকে। পরে রান্নার সিলিন্ডারে গ্যাস দিয়ে আগুন ধরিয়ে ঘরে তালা লাগিয়ে দেন। আগুন দেখে প্রতিবেশীরা চিৎকার করলে তারা ছুটে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে বারান্দার গ্রিল ও দরজার তালা ভেঙে তাদের তিনজনকে উদ্ধার করে। প্রথমে তাদের শৈলকুপা হাসপাতালে নেয়া হলে দুই সহোদর মোস্তফা সাফিন ও মোস্তফা আমিনকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। মারাত্মক আহত ফাহিমকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হলে রাত ৮টার দিকে সেও মারা যায়।