01-02-16-PM_Amar Ekushe Boi Mela-17

দৈনিকবার্তা-ঢাকা,১ফেব্র“য়ারি,২০১৬ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে পর্দা উঠল মাসব্যাপী একুশের বইমেলার।প্রতি বছরের মতো এবারও ১ফেব্র“য়ারি সোমবার বিকালে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এ গ্রন্থমেলাকে কেন্দ্র করে দেশের নানাপ্রান্তের মানুষ এবং প্রবাসী বাঙালিদের বিপুল সমাগম ঘটে। এই মেলা এখন পরিণত হয়েছে বৃহত্তর বাঙালির মিলনমেলায়। বাংলা ধ্র“পদী ও সাম্প্রতিক সাহিত্যের সুনির্বাচিত সম্ভার বিশ্বপাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে আরও ব্যাপকভিত্তিক ও মানসম্পন্ন অনুবাদের আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে তৃণমূলের গণমানুষের জীবন ও সংগ্রাম সাহিত্যকর্মে ফুটিয়ে তোলারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।সোমবার বিকেলে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অমর একুশে গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. শামসুজ্জামান খান, প্রকাশকদের পক্ষে অন্যপ্রকাশের প্রধান নির্বাহী মাজহারুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি প্রতিবছর গ্রন্থমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলা সাহিত্যের অনুবাদের ওপর জোর দিয়ে আসছি। এ বছর বাংলা একাডেমি থেকে বাংলা সাহিত্যের মীর মশাররফ হোসেনের অমর উপন্যাস ‘বিষাদ সিন্ধু’র ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। আমি আমাদের ধ্র“পদী ও সাম্প্রতিক সাহিত্যের সুনির্বাচিত সম্ভার বিশ্বপাঠকের কাছে পৌঁছে দিতে আরও ব্যাপকভিত্তিক ও মানসম্পন্ন অনুবাদের আহ্বান জানাই। সেই সঙ্গে আমাদের কবি- লেখকদের কাছে অনুরোধ- তৃণমূলের গণমানুষের জীবন ও সংগ্রাম আপনাদের সাহিত্যকর্মে ফুটিয়ে তুলুন। দেশের সকল নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর ভাষা-সংরক্ষণ ও বিকাশেও আপনাদের সবাইকে আরও মনোযোগী হওয়ার অনুরোধ জানাই।

বক্তৃতার শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বাংলা একাডেমি নিয়ে তার স্মৃতিচারণ করেন। তিনি জানান, বাংলা একাডেমিতে তার অনেক সময় কেটেছে। তার প্রয়াত বন্ধু বেবী মওদুদকে নিয়ে এখানকার লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করতেন। অনেক সময় কাটাতেন।শেখ হাসিনা বলেন, এখানে আসতে আমার খুব ভালো লাগে। তবে অনেক নিয়মে বন্দি থাকতে হয় এখন। সরকারি কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। আবার কবে বইমেলায় আগের মতো ঘুরে বেড়াতে পারবো! মুক্ত হয়ে বইমেলায় ঘুরে বেড়ানোর প্রত্যাশায় থাকলাম।তিনি আরও বলেন, সারা বছরই এখন অনেক আকাঙ্খা নিয়ে বসে থাকি বইমেলা কখন আসবে। ফেব্র“য়ারি আমাদের প্রেরণা দেয়। প্রতিবাদের ভাষা শেখায় এই মাস। বিজয়ের পথ দেখায় এই মাস।

প্রধানমন্ত্রী এ সময় বাংলা ভাষার অধিকার আদায়ের সংগ্রাম এবং এতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বাঙালি জাতি কোনোদিন মাথা নত করেনি। আন্দোলন-সংগ্রাম করে আর বুকের রক্ত দিয়ে বাঙালি যুগে যুগে তার ন্যায্য দাবি আদায় করেছে। এরই মহত্তম প্রকাশ ঘটেছিল ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্র“য়ারি।প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন, শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ছাত্র-জনতার প্রতিবাদ বিক্ষোভের কথা। ২১ ফেব্র“য়ারি পুলিশের গুলিতে রফিক, জব্বার, বরকত, সালামসহ অনেক নাম না জানা ছাত্র-জনতার আত্মদানের কথা।

তিনি বলেন, ২১ ফেব্র“য়ারির আঘাত শুধু আন্দোলনকারীদের উপরই ছিল না, এটা ছিল বাংলা ভাষা এবং বাঙালি জাতিসত্তার উপর আঘাত। ভাষা আন্দোলনের পথ বেয়ে শিক্ষা আন্দোলন, ছয়-দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের ঐতিহাসিক নির্বাচন ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।ভাষা আন্দোলনের ফসল হিসেবেই তৎকালীন যুক্তফ্রণ্ট সরকারের ২১ দফার ১৬ নম্বর দফার বাস্তবায়ন হিসেবে ১৯৫৫ সালের ৩ ডিসেম্বর গড়ে ওঠে বাঙালি জাতিসত্তা ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের বাতিঘর-বাংলা একাডেমি। গত ডিসেম্বরে বাংলা একাডেমি তার প্রতিষ্ঠার ষাট বছর পূর্তি উৎসব উদ্যাপন করেছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছরই বঙ্গবন্ধু উত্থাপিত ঐতিহাসিক ছয়-দফার পঞ্চাশ বছর অর্থাৎ সুবর্ণজয়ন্তী। যে ছয়-দফা ছিল প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুর এক দফা অর্থাৎ স্বাধীনতা ঘোষণার প্রথম ধাপ। আমি জেনে অত্যন্ত আনন্দিত যে, বাংলা একাডেমি এবারের একুশের মাসব্যাপী আলোচনায় ছয়-দফাকে একটি আলোচ্য বিষয় হিসেবে নির্ধারণ করেছে।

তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বাংলা একাডেমি আমাদের সবার অত্যন্ত প্রিয় ও পবিত্র অঙ্গন। ১৯৭১ সালের ১৫ ফেব্র“য়ারি বাংলা একাডেমির একুশের অনুষ্ঠান উদ্বোধন করতে এসে এই প্রাঙ্গণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন- আমাদের হাতে যেদিন ক্ষমতা আসবে, সেদিন থেকেই দেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালু হবে। বাংলা ভাষার পণ্ডিতেরা পরিভাষা তৈরি করবেন, তারপরে বাংলা ভাষা চালু হবে, সে হবে না’।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর দর্শনে আমরা যেমন রাষ্ট্রপরিচালনা-ভাবনার কেন্দ্রে রেখেছি সাধারণ মানুষের সার্বিক মুক্তির বিষয়টি, তেমনি বাংলা একাডেমির সার্বিক উন্নয়নেও আমরা বিশেষ মনোযোগ প্রদান করেছি।প্রধানমন্ত্রী এসময় বাংলা একাডেমির অবকাঠামোগত এবং গবেষণাখাতে বিপুল অগ্রগতি-উন্নয়নের কথা উল্লেখ করেন। একইসঙ্গে বাংলা ভাষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে একাডেমির জাতীয় দায়িত্ব পালনের কথাও তুলে ধরেন।গ্রন্থমেলাকে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান পর্যন্ত বিস্তৃত করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থাপিত বিজয়ের অনির্বাণ আলোকস্তম্ভের মতই অমর একুশে গ্রন্থমেলা আমাদের মনকে জ্ঞানের আলোয় আলোকিত করবে।তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দিয়ে বিশ্বের দরবারে এ ভাষার গৌরব ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আমি নিজেও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে নিয়মিত বাংলায় ভাষণ দিয়ে আসছি।

১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর রফিকুল ইসলাম, আবদুস সালামের মত প্রবাসী বাঙালিদের প্রচেষ্টায় এবং আওয়ামী লীগ সরকারের আন্তরিক উদ্যোগে ২১ ফেব্র“য়ারি ইউনেস্কো কর্তৃক ‘আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণার নেপথ্য-তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত প্রয়াত রফিকুল ইসলাম এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রী প্রয়াত এএসএইচকে সাদেককেও এসময় স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি বলেন, গত কয়েক বছর ধরে একুশে গ্রন্থমেলার মঞ্চে দেশের বাইরের বিদেশি লেখক-পণ্ডিতদেরও সমাগম হচ্ছে। তাদের উপস্থিতির মধ্য দিয়ে বাংলার সমৃদ্ধ ভাষা-সাহিত্যের বার্তা যেমন বহির্বিশ্বে পৌঁছে যাবে, তেমনি বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতির আলোয় আমরা নিজেদের সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হবো।প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বঙ্গবন্ধুর একটি জীবনীগ্রন্থ দিয়ে বাংলা একাডেমির ব্রেইল প্রকাশনার শুভযাত্রা হলো। যে মানুষটি বাংলার সকল শ্রেণির মানুষের মুক্তির জন্য তার জীবন উৎসর্গ করেছেন, আমরা তারই প্রদর্শিত পথে দেশের সুবিধাবঞ্চিত শারীরিক প্রতিবন্দ্বী ভাইবোনদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছি।

বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্তদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি ক্ষেত্রে আমরা সুদূরপ্রসারী নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বছরের শুরুতে ১০ম শ্যেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যবই সরবরাহ করছি। চলতি বছর ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ৬২ হাজার ৭৭২টি বই বিতরণ করা হয়েছে। বিনামূল্যে এতো বিপুলসংখ্যক বই বিতরণের উদ্যোগ গোটা বিশ্বেই বিরল। আমরা সৃজনশীল প্রকাশনা-ক্ষেত্রে যেমন প্রণোদনা দিয়ে আসছি, তেমনি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে পরিবর্তনশীল বিশ্বের প্রকাশনাধারায় প্রবেশের জন্য ই-বুক কার্যক্রম দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিচ্ছি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত বছরের অক্টোবরে জার্মানির বিশ্বখ্যাত ফ্রাঙ্কফুর্ট বইমেলায় বাংলাদেশের আনুষ্ঠানিক সংযোগ ঘটেছে। যার মধ্য দিয়ে বিশ্বমানের প্রকাশনা সম্পর্কে অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এখানে উপস্থিত ইন্টারন্যাশনাল পাবলিশার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আমি শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।এসময় অর্থ-বাণিজ্য-শিক্ষা-শিল্প-সংস্কৃতিসহ সকলক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভাবনীয় সাফল্য অর্জনের কথা উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি এসময় বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজ সম্পন্ন ও একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কার্যক্রমের বিষয়েও কতা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, সারাবিশ্বে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠেছে। কিন্তু আমাদের সাহসী ও সময়োপযোগী পদক্ষেপের ফলে সব ধরণের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের মূলোৎপাটন করা হয়েছে। বিভিন্নস্তরের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানসমূহ শক্তিশালী হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব কাটিয়ে আমরা ধারাবাহিকভাবে ঈর্ষণীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করে চলেছি। সামাজিক-অর্থনৈতিক সকল ক্ষেত্রে টেকসই ও মানবিক উন্নয়নে বাংলাদেশের বিপুল অগ্রগতি এখন আর শুধু আমাদের বক্তব্য নয় বরং বিশ্বের নামকরা অর্থনীতিবিদ, রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরাও এই স্বীকৃতি দিতে বাধ্য হচ্ছেন।

২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সময়ের মধ্যে আমরা ক্ষুধা-দারিদ্র্য-অশিক্ষা-ধর্মান্ধতা-সাম্প্রদায়িকতা-জঙ্গিবাদ- শোষণ-বৈষম্য দূর করে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাই।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকার দিনগুলোতে সেই ক্যাম্পাস জীবনের আনন্দের কথা শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন। সেইসঙ্গে সরকারের সর্বোচ্চ পদে থাকায় নিয়মের কড়াকড়িতে এখন আর সেই তরুণ দিনের মতো বইমেলায় ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ হয় না বলে আক্ষেপ করেন। তিনি বলেন, আবার কবে মুক্ত হতে পারব, বইমেলায় ঘুরে বেড়াতে পারব, সেই আশায় আছি।প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশের গ্রন্থমেলা ঘিরে দেশি-বিদেশি লেখকদের আগমনে সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়। গ্রন্থমেলা উপলক্ষে বাংলা একাডেমি আয়োজিত মাসব্যাপী সেমিনার ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সৃষ্টি করে নবতর চাঞ্চল্য।

তিনি বাংলা সাহিত্যের অনুবাদ প্রকাশের ওপর গুরুত্ব দেন এবং এ দেশের ধ্র“পদী ও সাম্প্রতিক সাহিত্যের নির্বাচিত সম্ভার বিশ্বপাঠকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ নিতে তাগিদ দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ভাষার জন্য যেভাবে ত্যাগ স্বীকার করেছি, সেভাবে ভাষার মর্যাদা রক্ষার কাজও আমরা করেছি।এই অনুষ্ঠানেই এবারের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারপ্রাপ্ত ১১ জনের হাতে সম্মাননা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী।বাংলা একাডেমির উন্নয়নে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, প্রাঙ্গণটা এতই প্রিয় ছিল যে, যখনই ক্ষমতায় এসেছি তখনই চেষ্টা করেছি কীভাবে এই জায়গাটাকে উন্নত করা যেতে পারে। এখানে যে পুকুরটা ছিল সেটাকেও আমরা সংরক্ষণ করেছি। তারই পাশে নতুন নতুন ভবন নির্মাণ করেছি।

শহীদুল্লাহ ভবন, এনামুল হক ভবন, নভেরা আহমেদের নামে একটি প্রদর্শনী কক্ষ করার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।এবারের বইমেলায় বঙ্গবন্ধুর একটি জীবনীগ্রন্থকে ব্রেইল মাধ্যমে প্রকাশ করায় বাংলা একাডেমিকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।পরিসর বাড়ার পাশাপাশি মেলার সাজ-সজ্জায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। আগে শিশুকর্নার বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে থাকলেও এবার তা মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।জায়গার সঙ্গে সঙ্গে স্টলও বেড়েছে এবার। গত বছর যেখানে ৩৫১টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান মেলায় অংশ নিয়েছিল, এবার অনুমতি পেয়েছে সাড়ে চারশ প্রকাশনা সংস্থা।এর মধ্যে একাডেমি প্রাঙ্গণে ৮২টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩২০টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানকে স্টল দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমিসহ ১৪টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের থাকছে ১৫টি প্যাভিলিয়ন। এছাড়া রয়েছে ৯২টি লিটল ম্যাগাজিন।এবারও একাডেমির নজরুল মঞ্চে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা হয়েছে। মেলার দুই অংশেই ওয়াই-ফাই সুবিধা থাকবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রকাশিত বই ৩০ শতাংশ কমিশনে এবং মেলায় অংশগ্রহণকারী অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বই ২৫ শতাংশ কমিশনে বিক্রি করার নির্দেশনা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। ফেব্র“য়ারির ২৯ তারিখ পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বইপ্রেমীদের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে। ছুটির দিনগুলোতে বেলা ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মেলা চলবে।