02-02-16-PM_ECNEC Meeting-3

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ : রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ মোড় শাহবাগে পথচারীদের রাস্তা পারাপারের দুর্ভোগ লাঘবে সেখানে অবিলম্বে দু’টি আন্ডারপাস (পাতালপথ) নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক (জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ) বৈঠকে এ নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী।প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বৈঠকে অংশ নেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য ও শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তারা। সড়ক পারাপারে ঝুঁকি এড়াতেই শাহবাগে দুটি আন্ডারপাস নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের জানান, শাহবাগে দু’টি আন্ডারপাস নির্মাণের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।এর একটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) থেকে বারডেমের দিকে এবং অপরটি বিএসএমএমইউ থেকে জাতীয় জাদুঘরের দিকে নির্মিত হবে।এদিকে মঙ্গলবারের একনেক সভায় তিতাস গ্যাসফিল্ডের নিয়ন্ত্রণ, মূল্যায়ন ও উন্নয়নসহ মোট ৯টি প্রকল্প চূড়ান্তভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রকল্পগুলোর মোট ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ৮শ’ ৫৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য দুই হাজার ২০৭ কোটি ৪৫ লাখ ও বাকি টাকা সরকারি খাত থেকে দেওয়া হবে।তিতাস গ্যাসফিল্ড প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এর মধ্যে ৬শ’ ৮৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)।এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে গ্যাসের সম্ভাবনা আছে সেখানেই প্রয়োজনে খনন করতে হবে। ভোলায় ফের গ্যাসের সন্ধান মিলেছে এখানেও খনন করতে হবে। এর মাধ্যমে দেশে গ্যাসের চাহিদা পূরণ করা হবে।’

এছাড়া বৈঠকে অনুমোদিত হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পও। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২৪৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের অহংকার। ঢাকায় জাতীয় কবি নজরুল ইনস্টিটিউট আছে এটাকে আরও ভালোভাবে ‘রান’ করাতে হবে। প্রয়োজনে নতুন প্রকল্পের আওতায় এনে এই প্রতিষ্ঠানকে ভালোভাবে উপস্থাপন করতে হবে। নজরুলের নানা সংগ্রহ আর্কাইভে সংগ্রহ করতে হবে।

’জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্প, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ^বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প এবং টাঙ্গাইলে মেডিকেল কলেজ স্থাপনসহ ৯টি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে।অনুমোদিত নতুন ও সংশোধিত প্রকল্পসমূহের জন্য প্রকল্প ব্যয় হবে ৪ হাজার ৮শ’ ৫৮ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ১৭৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ২০৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা ।একনেক বৈঠক শেষে পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সাংবাদিকদের একথা জানান ।

পরিকল্পনা মন্ত্রী প্রেসব্রিফিংকালে বলেন, স্বাস্থ্য সেবা বিশ^মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়নে সরকার মেডিকেল সার্ভিসের সক্ষমতা বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে পারলে চিকিৎসা সেবার ব্যয় হ্রাস পাবে, বিদেশ নির্ভরতা কমে আসবে।

তিনি জানান,দেশে চিকিৎসক তৈরির পাশাপাশি আধুনিক নার্সিং পেশার প্রসার আবশ্যক। নার্সিং ইনস্টিটিউটের পাশাপাশি চাহিদা নিরূপণ করে নার্সিং কলেজ প্রতিষ্ঠার ওপর বৈঠকে গুরুত্বারোপ করা হয়।তিনি জানান, আধুনিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে ১ হাজার ৩শ’ ৬৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয় সাপেক্ষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় স্পেশালাইজড হাসপাতাল প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। তিনি জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে দেশে বিশেষায়িত চিকিৎসা সেবার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে ।মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয় এবং বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করার জন্য আগত রোগীদের দুর্ভোগ লাঘব করতে একটি আন্ডারপাস নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে অনুশাসন দিয়েছেন বলে পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান।বৈঠকে মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীগণ, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রী জানান, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ^বিদ্যালয় উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে আসন সংখ্যা বর্তমান ৪ হাজার ২শ’ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে সাড়ে ৬ হাজার হবে। ভবিষ্যতে এ আসন ১৫ হাজারে উন্নীত করা হবে।একনেক বৈঠকে অনুমোদিত অন্য প্রকল্পসমূহ হচ্ছে- তিতাস গ্যাস ফিল্ডে গ্যাস উদগিরণ নিয়ন্ত্রণ এবং ফিল্ডের মূল্যায়ন ও উন্নয়ন (১ম সংশোধিত ) প্রকল্প, গোপালপুর জেলার গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, জলাশয় সংস্কারের মাধ্যমে মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্প, নগরাঞ্চলের ভবন সুরক্ষা প্রকল্প, জাতীয় স্যানিটেশন প্রকল্প (৩য় পর্যায়) প্রকল্প এবং ফরিদপুর (বদরপুর) সালথা-সোনাপুর-মকসুদপুর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প।