জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান

দৈনিকবার্তা-ঢাকা, ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: অধ্যাপক মিজানুর রহমান কোনো অভিবাসনই অবৈধ নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মিজানুর রহমান। তিনি বলেছেন, ‘অভিবাসন কখনই অবৈধ নয়। সব অভিবাসনই বৈধ। রাষ্ট্রই মানুষের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা যাওয়া কঠিন করে তোলে।মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে মানবপাচার ও নিরাপদ অভিবাসন বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আয়োজিত এক সেমিনারে মিজানুর রহমান এসব কথা বলেন।মিজানুর রহমান বলেন, পুঁজি এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাঠাতে কোনো বাধা নেই। বরং সেটা কত দ্রুত সময়ে সেটা পাঠানো যায়, সেটাই করা হয়। কিন্তু মানবসম্পদের সহজ প্রবাহ নিশ্চিত করা হয়নি। তিনি বলেন, আমাদের মূলধন হলো মানবসম্পদ। এ মূলধন যদি না রপ্তানি করতে পারি, সে জন্য নানা ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। তিনি বলেন, রাষ্ট্রকেই মানুষের স্বাভাবিক চলাচলকে সহজ ও মানবিক করে তুলতে হবে। অভিবাসী শ্রমিকদের স্বার্থ কীভাবে রক্ষা করা যায়, সেটা আমাদের ভাবতে হবে।

অধ্যাপক মিজান বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী সম্পূর্ণভাবে গরিববান্ধব। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমলাতন্ত্র হচ্ছে ধনীবান্ধব। তাহলে কী ঘটছে। আপনি বিমানবন্দর যান। কী অভিবাসী শ্রমিকদের সঙ্গে কী আচরণ করা হচ্ছে? তারা দেশের বাইরে যাওয়া এবং আসার সময় কী হেনস্তার শিকার হচ্ছেন! কতভাবে তাদের হেনস্তা করা হয়। তাদের আলাদাভাবে সরিয়ে রাখা হয়। পাসপোর্ট আটকে রাখা হয়। বলা হয় কীভাবে তুমি ভিসা পেলে, আমাদের সন্তুষ্ট কর না হলে, পাসপোর্ট পাবে না। আর আপনি কোট-টাই পরে মিজানুর রহমানের মতো হাজির হন, আপনাকে ইমিগ্রেশন পার করিয়ে দেবে। দয়া করে এটা বন্ধ করুন।’ ভারত-বাংলাদেশে সীমান্ত হত্যা এখনো বন্ধ হয়নি উল্লেখ করে তিনি দেশটিকে আরও মানবিক হওয়ার আহ্ধসঢ়;বান জানান।সেমিনারে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইএমও) এ দেশীয় মিশন প্রধান শরৎ দাস বলেন, বর্তমান যুগে অভিবাসন কখনোই বন্ধ করা যাবে না। এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু এটাকে কীভাবে নিরাপদ করা যায়, সেটাই সব দেশকে ভাবতে হবে। বিদেশে শ্রমিক পাঠাতে হলে, তাদের দক্ষ করে পাঠালে রেমিট্যান্স আরও বাড়বে।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা উন্নতি করেছি। নিরাপদ অভিবাসনের ক্ষেত্রে কেন পারব না। বিদেশে দক্ষ শ্রমিক পাঠতে এফবিসিসিআইয় বা ব্যবসায়ীদের পক্ষ কোনো সহযোগিতা প্রয়োজন হলে, তা দেওয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।মানবাধিকার কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য কাজী রিয়াজুল হকের সভাপতিত্বে সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন খান, জাতীয় মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়েশা খানম প্রমুখ। পরে প্যানেল আলোচনায় বক্তব্য দেন মানবাধিকার কমিশনের সদস্য ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, জাতীয় তরুণ সংঘের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ফজলুল হক, রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক, বায়রার সহসভাপতি আলী হায়দার চৌধুরী, প্ল্যান বাংলাদেশের প্রকল্প পরিচালক জিয়াউল আলম প্রমুখ।