তালেয়া রেহমান

বিশিষ্ট সাংবাদিক শফিক রেহমানকে সম্পূর্ণ ‘মিথ্যা বানোয়াট’ অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে মন্তব্য করে তার স্ত্রী তালেয়া রেহমান বলেছেন, এতো বড় মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে যা আমি সহ্য করতে পারছি না। বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে শফিক রেহমান মুক্তি মঞ্চ’ আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় এ কথা বলেন তালেয়া। লেখক-সাংবাদিক শফিক রেহমানের রিমান্ড বাতিল ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে এ সভার আয়োজন করা হয়।তালেয়া রেহমান বলেন, শফিক রেহমানকে হঠাৎ করে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ দেখিয়ে বাসা থেকে নিয়ে যাওয়া হলো। গ্রেফতারের দুই ঘণ্টা আগেও এসব কোনো অভিযোগ সম্পর্কে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি।

তিনি বলেন, যে লোক বিদেশের অনেক বড় সুযোগ ছেড়ে দেশের টানে এসে মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন, নিজের কথা চিন্তা না করে দেশের কথা চিন্তা করেন, সেই লোক কারো হত্যার ষড়যন্ত্রকারী হতে পারেন না।গত ৫৯ বছর ধরে শফিক রেহমানের সঙ্গে আছেন জানিয়ে তার স্ত্রী তালেয়া বলেন, অনেক কিছু লিখেছেন, পশ্চিমের ভালো দিকগুলো এদেশে এনেছেন, দেশে ভালোবাসা দিবসের প্রবর্তক, এই ধরনের মানুষের বিরুদ্ধে এমন ফৌজদারি অভিযোগ হতে পারে না।প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় অপহরণ ও হত্যা প্রচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার বিএনপি ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ আনার আশঙ্কা করন স্ত্রী তালেয়া রহমান। তিনি বলেন, শুনেছি, তার (শফিক রেহমান) বিরুদ্ধে আরো কিছু অভিযোগ আনা হবে। আরো শুনেছি, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের মতো তাকে আরো রিমান্ডে নেয়া হবে। এসবের কোনো কিছুই আমি চাই না।

তালেয়া রহমান বলেন, আপনারা (আালোচক) বলছেন, শফিক রেহমান জেলে আরো বেশি শক্তিশালী হয়েছেন। তারপরও আমি চাই না, উনি (শফিক রেহমান) জেলে থাকুক। কারণ, তার বয়স হয়েছে। তিনি অসুস্থ। তাছাড়া তার ডায়াবেটিসও আছে। এই রকম একজন মানুষকে যদি এইভাবে বিনাবিচারে আরো কিছুদিন জেলে রাখা হয় সেটি হবে আমানবিক।তিনি বলেন, আজকে দেশ কী রকম রূপ ধারণ করেছে, আলোচকরা তা বলেছেন। দেশের এই রকম রূপ আমি চাই না।এইজন্য আমরা সংগ্রাম-মুক্তিযুদ্ধ করিনি।

শফিক রেহমানের সহধর্মিণী দাবি করেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় শফিক রেহমান দেশের জন্য অনেক কিছু করেছেন। বাংলাদেশে তখন কী অবস্থা, সেটা বিদেশে সব মিডিয়াকে জানিয়েছিলেন তিনি। এইসব কাজের ফলেই আজকের বাংলাদেশ। যিনি এসব করেছেন তার বিরুদ্ধে এই ধরনের (প্রধানমন্ত্রীপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে অপহরণ ও হত্যা প্রচেষ্টা) অভিযোগ আনা হয়েছে। অথচ উনি (শফিক রেহমান) এতোটুকু রক্তও দেখতে পারতেন না। রক্তকে ভয় পেতেন। এজন্য ইনজেকশনও নিতে পারতেন না।

তালেয়া রহমান বলেন, তিনি (শফিক রেহমান) সবকিছু থেকে বাইরে থাকতে চাইতেন, শুধু চাইতেন ভালোবাসা ও গান নিয়ে থাকতে। তিনি কাউকে হত্যার প্রচেষ্টা করতে পারেন- এটি অসম্ভব, আমি বিশ্বাস করি না। এর বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে জেগে উঠতে হবে। আমরা সবাই যদি জেগে না উঠি, তাহলে সামনে আমাদের সকলের মরণ আছে।শফিক রেহমান মুক্তি মঞ্চের কার্যক্রম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকে আমরা এটি শুরু করলাম। আশা করি, এটি (কার্যক্রম) চলবে। তবে তার আগেই আমি শফিক রেহমানের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। তালেয়া রহমানের সভাপতিত্বে এবং জি-৯ এর সাধারণ সম্পাদক ডা. সাখাওয়াৎ সায়ন্তের সঞ্চালনায় এতে অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন- গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. দিলারা চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শিশু সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাইফুল ইসলাম, ইউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. সাইফুল ইসলাম সেলিম, ব্যারিস্টার পারভেজ আহমেদ, এনডিপির প্রেসিডিয়াম সদস্য মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ।