image‘‘ভাইরা, যৌনদাসী কিনতে চাও? এই মেয়েটাকে বিক্রি করা হবে। ৮০০০ ডলার।’’ একটি একটি ফেসবুক পোস্ট। যে ছবির সঙ্গে এই লাইনগুলি লেখা হয়েছে, সেই ছবিটি এক মধ্য এশীয় তরুণীর। সুন্দরী না বললে মিথ্যা বলা হয়। মুখে স্বাভাবিক হাসি নেই। কাষ্ঠ হাসি ধরে রেখেছেন যেন। আসলে ছবি তোলার সময় হাসতে বলেছে মনিব। তাই জোর করে হাসতে হয়েছে বছর আঠেরোর তরুণীকে। কিন্তু ক্যামেরার দিকে তাকাননি একবারও। মুখটা নীচের দিকে।

তরুণী বুঝতে পারছিলেন, তাঁর ছবি কেন তোলা হচ্ছে। আইএস জঙ্গি তাঁকে যৌনদাসী বানিয়ে দীর্ঘ দিন ভোগ করেছে। রোজ দিনে, রাতে, যখনই সময় পেয়েছে ধর্ষণ করেছে। এখন টাকার দরকার খুব। তাই বিক্রি করে দিচ্ছে। বিক্রি করার জন্যই ছবি তোলা হচ্ছে। ফেসবুকে খুল্লমখুল্লা বিজ্ঞাপন দেওয়া হবে— যৌনদাসী বিক্রি আছে! এর কিছুক্ষণ পরেই আবার পোস্ট। এই ছবিও এক মধ্য এশীয় তরুণীর। কিন্তু ছবি তোলার আগে তাঁর মুখে হাসি ফোটানো যায়নি। কেঁদে কেঁদে চোখ টকটকে লাল। এঁর দামও নির্ধারিত হয়েছে ৮০০০ ডলার।

যৌনদাসী বিক্রির বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে ফেসবুকে, এমনটা বুঝতে পেরেই ফেসবুক কর্তৃপক্ষ সরিয়ে দিয়েছে বিজ্ঞাপনগুলি। কিন্তু তাতে ইরাক আর সিরিয়ায় শ’য়ে শ’য়ে আইএস তাঁবুতে বন্দি থাকা ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের তরুণীদের দুর্দশা খুব একটা কমছে না। খোলা বাজারে দর হাঁকার ঢঙে ইয়াজিদি যৌনদাসীদের বিক্রি করছে জঙ্গিরা। ইরাক এবং সিরিয়ার বিরাট অংশ যখন দখল করেছিল আইএস, তখনই সংখ্যালঘু ইয়াজিদি সম্প্রদায়ের উপর অকথ্য অত্যাচারের শুরুর। অল্পবয়সী মেয়েদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল আইএস শিবিরে। জঙ্গিরা নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নিয়েছিল ওই মেয়েদের। তাঁদের যৌনদাসী বানিয়ে রোজ ধর্ষণের শুরু তখন থেকেই। এখন পরিস্থিতি প্রতিকূল। যুদ্ধে রোজ পিছু হঠতে হচ্ছে আবু বকর আল-বাগদাদির বাহিনীকে। অস্ত্রশস্ত্রের ভাঁড়াতে টান। খাবারের জোগান কমেছে, ওষুধের অভাব চরমে। তেলের খনিগুলি একে একে হাতছাড়া। ফলে অর্থসঙ্কটও তীব্র। এখন হাতে পয়সা চাই জঙ্গিদের। যৌনদাসীদের খাইয়ে-পরিয়ে রাখার খরচও এড়াতে চাইছে তারা। অতএব বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে ইয়াজিদি তরুণীদের।