11-06-16-PM_AL Working Commitee Meeting at Gonobhaban-15গুপ্তহত্যার সঙ্গে জড়িতদের ‘খুঁজে খুঁজে’ বের করা হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, ‘এদের খুঁজে খুঁজে বের করব। যাবে কোথায়?’ শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে তিনি একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ ভূখণ্ডের দিক দিয়ে ছোট। এখানে সবাই সবাইকে চিনতে পারে বা জানতে পারে। এগুলো খুঁজে বের করা খুব কঠিন কাজ না। এর শাস্তি তারা পাবেই।’ গুপ্তহত্যা বন্ধ করা সময়ের ব্যাপার বলেও মনে করেন প্রধানমন্ত্রী।
এ হত্যাকাণ্ডগুলোর সূত্রও খুঁজে বের করা হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিছু সূত্র আমরা পাচ্ছি। সব এক সময় বের হবেই। দেশি-বিদেশি যারাই এর পেছনে থাক, বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেবে না। যারা উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে, তাদের কোনো ক্ষমা নেই। এই বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলবে না।’
২০০৭ সালে শায়খ আবদুর রহমান ও সিদ্দিকুল ইসলাম বাংলা ভাইসহ ছয় শীর্ষ জঙ্গির ফাঁসি কার্যকরের পর বেশ স্তিমিতই হয়েছিল জঙ্গি তৎপরতা। গেল একবছরে ফের শুরু হয়েছে নতুন মাত্রায়। গত পাঁচ মাসে পুরোহিত, সাধু, বৌদ্ধ ভিক্ষু, খ্রিস্টান ধর্মযাজক, শিয়া, লালনভক্ত, পীরের অনুসারী, সমকামীদের অধিকারকর্মী, ব্লগার, লেখক, প্রকাশক, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, পুলিশসহ খুন হয়েছেন ১৮ জন। এরমধ্যে গত পাঁচদিনে জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রমে যুক্ত পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীসহ চারজন খুন হয়েছেন।
এসব ঘটনার বেশির ভাগেরই দায় স্বীকার করেছে আইএস (ইসলামিক স্টেট) ও আল-কায়েদার কথিত বাংলাদেশ শাখা আনসার আল ইসলাম। তবে বরাবরই পুলিশ ও সরকারের পক্ষ থেকে তা নাকোচ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এসব হত্যাকাণ্ডে দেশীয় জঙ্গিগোষ্ঠী জেএমবি বা আনসার আল ইসলাম মূল সন্দেহভাজন। তবে এই হত্যাকারীরা কেউ পার পাবে না বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে প্রারম্ভিক বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘কেউ পার পাবে না। বাংলাদেশ ভূখণ্ডের দিক দিয়ে ছোট। এখানে সবাই সবাইকে চিনতে পারে বা জানতে পারে। এগুলো খুঁজে বের করা খুব কঠিন কাজ না। এর শাস্তি তারা পাবেই।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘সরকার যদি প্রকাশ্যে হত্যা বন্ধ করতে পারে, তাহলে এই গুপ্তহত্যাও আমরা বন্ধ করতে পারবে, ইনশাল্লাহ, সময়ের ব্যাপার।’
এসব হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের সূত্রকেও খুঁজে বের করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশি-বিদেশি যারাই এর পেছনে থাক, বাংলাদেশের মানুষ তা মেনে নেবে না। কিছু তথ্য এরই মধ্যে সরকারের কাছে এসেছে। সব এক সময় বের হবেই। যারা উন্নয়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে, তাদের কোনো ক্ষমা নেই। এই বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলবে না।’
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সব গুপ্তহত্যার জন্য ফের বিএনপিকে দায়ী করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যত হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশে হচ্ছে, প্রত্যেকটার মদদদাতা তারা। অস্বীকার করবে কীভাবে? জনগণ যদি একটু ভালোভাবে দেখে, তাহলে দেখবে কারা রক্তপাত ঘটায়, কারা মানুষ পুড়িয়ে মারে?’ আন্দোলনে প্রকাশ্যে ‘মানুষ হত্যা’ করে প্রতিরোধের মুখে পড়ে এখন বিএনপি-জামায়াত গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
গুপ্তহত্যার পেছনে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকানোর ষড়যন্ত্রও কাজ করছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের মন্ত্রী বানিয়েছিল, তাদের যুদ্ধাপরাধী হিসাবে তারা ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলছে। খালেদা জিয়া এই ব্যথা কী ভাবে ভুলবে বলেন? খালেদা জিয়া এই প্রতিশোধ নেবে না? সে প্রতিশোধ সে নিচ্ছে, এটা তো বাস্তব কথা।’