ভিকারুননিসার শিক্ষার্থীদের রাস্তা অবরোধ

নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় নিয়ে দিবা শাখার ক্লাস বাতিল করে প্রভাতী শাখায় দেয়ার দাবিতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সামনের রাস্তা অবরোধ করেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা।বুধবার দুপুর থেকে তারা অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে। এসময় বেইলী রোডজুড়ে তীব্র যনজাটের সৃষ্টি হয়।

ঘটনাস্থলে দায়িত্বে থাকা রমনা জোনের এসি শিবলি নোমান জানান, দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা দিবা শাখার ক্লাস পরিবর্তন করে প্রভাতী শাখায় নেয়ার দাবিতে এ অবরোধ করেছে। আমরা তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করেছি।স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আজ হুট করে স্কুলের গভার্নিং বডি একটি নোটিশ দিয়েছে যে আগামী ১০ তারিখ থেকে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ক্লাস হবে। কিন্তু যে সব শিক্ষার্থীরা দূর-দূরান্ত থেকে স্কুলে আসে, তাদের ক্লাস শেষ করে বাসায় ফিরতে সন্ধ্যাও পার হয়ে যাবে। এতে আমাদের নিরাপত্তা বিঘœ ঘটতে পারে। এছাড়াও ক্লাস দিবা শাখায় হওয়ায় বাসায় পড়াশোনাতেও সমস্যা হবে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা। ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে তনুর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে, আমাদের নিরাপত্তা কে দেবে?’ এমন লেখা প্ল্যাকাডও আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের হাতে দেখা যায়।

দুই শিফট চালু করার প্রতিবাদে রাজধানীর বেইলি রোডে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছে ভিকারুননিসা স্কুল ও কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা।বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কোনো ধরনের ঘোষণা বা নোটিস না দিয়ে আকস্মিকভাবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।এ বিষয়ে কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।তবে কলেজের একজন শিক্ষক জানিয়েছেন, শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটের কারণে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ (গভর্নিং বডি) এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার নামি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির তিন শতাধিক শিক্ষার্থী প্রধান ক্যাম্পাসের ১ নম্বর ফটকের বিপরীতে সড়কে অবস্থান নেয়।

এদের কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার ছিল কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক প্রথম বর্ষের ফলাফল প্রকাশের দিন। বেলা ১১টার দিকে ফল আনতে গিয়ে তারা জানতে পারেন, কলেজ কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১০ জুলাই থেকে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত দ্বিতীয় বর্ষের বিজ্ঞান শাখা এবং সকাল ৮টা থেকে ২টা পর্যন্ত প্রথম বর্ষের সব শাখা ও দ্বিতীয় বর্ষের মানবিক ও বাণিজ্য শাখার ক্লাস হবে।এর পর থেকেই বিক্ষোভ শুরু করেন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষার্থী বলেন, এখানে আমরা যারা পড়াশোনা করছি, তারা ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসি। কেউ খিলক্ষেত, কেউ কুড়িল এমনকি উত্তরা থেকেও আসে অনেকে। এখন শিফট চেঞ্জ করা হলে বাসায় যাব কখন, পড়ব কখন?আমাদের নিরাপত্তার বিষয়টি কে দেখবে, প্রশ্ন করেন আরেক শিক্ষার্থী। কলেজে বিজ্ঞান শাখার সেকশন রয়েছে ৯টি।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত এক অভিভাবক বলেন, আমরা প্রিন্সিপালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি, কিন্তু তাকে পাইনি। শিক্ষকরা বলেছেন, এটা গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত।কিন্তু অভিভাবক-শিক্ষার্থীর সঙ্গে কোনোরকম আলোচনা না করে তারা এরকম একটি সিদ্ধান্ত কী করে নিতে পারেন? সড়কে অবস্থানকারী শিক্ষার্থীরা মুখে স্কার্ফ বেঁধে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছেন। বিকালে ক্লাস শেষে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে প্ল্যাকার্ডও হাতে রয়েছে তাদের। এ বিষয়ে কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক বদরুল আলম ফারুক বলেন, ২০১৫ সালে গভর্নিং বডি সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুই শিফট চালু করার। স্টুডেন্টদের রুমের সঙ্কটের কারণেই দুই শিফট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।কিন্তু গতবছর এই শিক্ষার্থীরা যখন ভর্তি হয়েছিল, তখন এই সম্পর্কে তাদের কিছু বলা হয়নি।

অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে কলেজের নিরাপত্তা রক্ষী আবুল কালাম বলেন, এখানে একটি অস্বাভাবিক অবস্থা চলছে। আমি বলতে পারব না প্রিন্সিপাল কোথায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রমনা থানার ওসি মশিউর রহমান বলেন, স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করব বলে আশা করছি।