মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলমজঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং জঙ্গিবাদ মোকাবেলার ‘বড় বার্তা’ নিয়ে গেলেন জেলা প্রশাসকরা (ডিসি)। জেলা প্রশাসক সম্মেলনের চতুর্থ ও শেষ দিন শুক্রবার (২৯ জুলাই) সমাপনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম।

চার দিনব্যাপী এ সম্মেলনে জেলা প্রশাসকেরা সরকারের কাছে কী ম্যাসেজ নিয়ে গেলেন- প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব বলেন, ম্যাসেজ অনেকগুলো। ‘একটা বড় ম্যাসেজ হলো, এক নম্বর যদি বলেন- জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমাদের জেলা প্রশাসক যারা আছেন তাদেরকে নিজ নিজ অধিক্ষেত্রে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। অর্থাৎ সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে তাদেরকে সেনসেটাইজ করে জঙ্গিবাদ এবং সন্ত্রাসকে মোকাবেলা করতে হবে। এটা তাদের এক নম্বর শর্ত।’

জঙ্গিবাদ নির্মূলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগের কথা জানানো হয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের লিখিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে।
তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলা হয়, জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় নির্মিত ডকুমেন্টরিগুলো মাঠ পর্যায়ে বহুল প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রতিটি জেলায় কমিউনিটি রেডিও সম্প্রচারের অনুমোদন এবং জেলা তথ্য উপদেষ্টা কমিটির কার্যক্রম জোরদারের কথা বলা হয়। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে বলা হয়, সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে জঙ্গিবাদ দমনে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। জঙ্গিবাদ নির্মূলে শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় একযোগে কাজ করবে।

কুষ্টিয়া জেলার শিলাইদহে রবীন্দ্রনাথের কবিতা, গান ও নাটক/উপন্যাস সার্বক্ষণিক প্রচারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত লিখিত ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহ বিভাগে আন্তর্জাতিক মানের একটি স্টেডিয়াম, প্রতিটি জেলায় পর্যায়ক্রমে জেলা ক্রীড়া কমপ্লেক্স নির্মাণ এবং জেলা মহিলা ক্রীড়া সংস্থার বার্ষিক বরাদ্দ বৃদ্ধি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সাতক্ষীরা জেলাকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

চারদিনে ১৮টি অধিবেশনে ২৮৮টি প্রস্তাব ছাড়াও কার্যঅধিবেশনে আরও ৩৩৬টি প্রস্তাব উত্থাপন হয় বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব। তিনি বলেন, এগুলো পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে যেটা যার মন্ত্রণালয়ের তাদের পর্যালোচনার পরিপ্রেক্ষিতে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবো। মোবাইল কোর্ট সংশোধনের বিষয়ে কোনো বার্তা আছে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব বলেন, এটা আদালতে বিচারাধীন। এজন্য বিস্তারিত আলোচনা হয়নি। এ বিষয়ে তাদেরকে নিরুৎসাহিত করেছি, এ বিষয়ে আলাপ করা ঠিক হবে না।

ডিসিরা বড় ধরনের সমস্যা আলোচনায় আনেননি বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব। মাঠ পর্যায়ে সরকরের নীতি ও কর্মসূচি বাস্তবায়নের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে নীতি নির্ধারকদের অবহিতকরণের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রতিবছর ঢাকায় ডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এবার জেলা প্রশাসক সম্মেলনে আকর্ষণ ছিল ইনোভেশন সামিট, যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী গত ২৬ জুলাই সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে ডিসি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন। এরপর অধিবেশনগুলো সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপ-মন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ডিসিদের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

সম্প্রতি জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে সম্মেলনের বিভিন্ন অধিবেশনে জঙ্গি মোকাবেলায় সতর্ক থাকা এবং জঙ্গিবিরোধী কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন সরকারের নীতি নির্ধারকরা।