সশস্ত্র বাহিনীর কর্তৃত্ব নিজের হাতে নিতে চাইছেন এরদোয়ানতুরস্কে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কর্তৃত্ব নিজের হাতে নিতে চাইছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েপ এরদোয়ান। এদিকে অভ্যুত্থানের সময় জিম্মি অবস্থায় থাকা তুর্কি সেনাপ্রধান হুলুশি আকরকে স্বপদে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।

সরকার উৎখাতে ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর সশস্ত্র বাহিনী এবং সুপ্রিম মিলিটারি কাউন্সিলের কর্তৃত্ব নিজের হাতে নেয়ার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন এরদোয়ান। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম মিলিটারি কাউন্সিলের বৈঠকের কিছুক্ষণ পর দেয়া এরদোয়ানের বক্তব্য থেকে এরকমটাই ধারনা করা হচ্ছে। এরদোয়ান বলেছেন, সশস্ত্র বাহিনী ও জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রম প্রেসিডেন্টের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার বিষয়ে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করা হবে।

উল্লেখ্য, এ সিদ্ধান্ত নিতে হলে তুরস্কের বিদ্যমান সংবিধান সংশোধন করতে হবে, যার জন্য সংসদে বিরোধী দলের সমর্থন প্রয়োজন। বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তন করে প্রস্তাবিত সংবিধানে দেশটিতে শক্তিশালী নির্বাহী প্রেসিডেন্সি কাউন্সিল প্রবর্তনের যে কথা এতদিন এরদোয়ান বলে আসছিলেন, এ বক্তব্য তারই বহিঃপ্রকাশ। বর্তমান সংসদীয় ব্যবস্থায় ওই দুই প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা সংসদ নেতা ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে। অভ্যুত্থানে ওই রাতে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যাওয়া প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান গত সপ্তাহে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ন্যাটো সামরিক জোটের দ্বিতীয় বৃহত্তম সেনাবাহিনিটিতে নতুন রক্ত সঞ্চালন দরকার। অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগে সামরিক বাহিনী থেকে বরখাস্ত সদস্যদের প্রায় ৪০ শতাংশ বাহিনীটির শীর্ষ কর্মকর্তা বলেও জানিয়েছিলেন এরদোয়ান।

প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে অনুষ্ঠিত সুপ্রিম মিলিটারি কাউন্সিলের বৈঠকটিতে সশস্ত্র বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের মুখপাত্র ইব্রাহিম কালিন সংবাদ মাধ্যমকে জানান, সশস্ত্র বাহিনীর কিছু পদে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তবে অভ্যুত্থানের সময় জিম্মি অবস্থায় থাকা সেনাবাহিনী প্রধান হুলুশি আকরকসহ বিমান ও নৌবাহিনীর প্রধানকেও নিজ নিজ পদে বহাল রাখার প্রস্তাবটি অনুমোদন করা হয়। এছাড়া গত ১৫ ও ১৬ জুলাইয়ের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রায় ১৭শ সেনা সদস্যকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করে সুপ্রিম মিলিটারি কাউন্সিল।

উল্লেখ্য, তুর্কি সরকার ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের প্রধান পরিকল্পনাকারী ও মদতদাতা হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সেচ্ছানির্বাসিত ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লা গুলেনকে অভিযুক্ত করেছে। এরই মধ্যে গুলেনের সমর্থক হাজার হাজার সেনা কর্মকর্তা, বিচারক, শিক্ষকসহ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গ্রেফতার ও বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া অনেক সংবাদমাধ্যম ও শত শত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আল জাজিরা