সিরিয়ায় ‘সন্ত্রাসবিরোধী’ লড়াইয়ে যুদ্ধবিমান পাঠাবে চীনপ্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের নেতৃত্বাধীন সিরিয়ার সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে যোগ দিতে যাচ্ছে চীনা বিমানবাহিনী। সিরিয়ার সন্ত্রাসীদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালাবে চীনা যুদ্ধ বিমান। চীনা সামরিক প্রতিনিধি দলের সাম্প্রতিক দামেস্ক সফরে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। সিরিয়ার সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধে বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিমান পাঠাতে। ইরানের ফার্স বার্তা সংস্থা এ খবর জানিয়েছে।

এক সামরিক বিশ্লেষকের বরাত দিয়ে দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, আচমকা সফরে চীনা সামরিক প্রতিনিধি দল দামেস্কতে সিরিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফাহাদ জসিমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাদের বৈঠকে সিরিয়ার বিশেষ করে আলেপ্পোতে বিমানহামলা চালাতে চীনের যুদ্ধবিমান ব্যবহার নিয়ে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা তথ্যের বরাত দিয়ে বলা হয়েছে, চীনা যুদ্ধবিমান জয়েশ আল-ইসলামি আল-তুর্কিস্তানির অবস্থানের ওপর বোমাবর্ষণ করবে। এতে ৩ হাজার উইগুর যোদ্ধা অংশ নেবে। এর আগে চলতি মাসের শুরুতে বেইজিং ও দামেস্ক সিরিয়ায় চীনা সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে মানবিক সহযোগিতা দিতে একমত হয়। এ সময় সিরীয় কর্মকর্তাদের চীনা বিশেষজ্ঞ দ্বারা প্রশিক্ষণের বিষয়টিও আলোচিত হয়।

উল্লেখ্য, চীনের কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের আন্তর্জাতিক সামরিক সহযোগিতা শাখার পরিচালক গুয়ান ইউফেই সম্প্রতি দামেস্কতে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী আল-ফ্রেইজের সঙ্গে বৈঠক করেন। আলোচনার সময় গুয়ান সিরিয়ার চলমান সংকট নিরসনে রাজনিতক সমাধানের ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি জানান, সিরিয়ার সঙ্গে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করতে আগ্রহী চীন। এর আগে গত বছর বেশ কয়েকজন সামরিক উপদেষ্টাকে সিরিয়ায় পাঠিয়েছিল চীন।

এদিকে, সিরিয়ার যুদ্ধ বন্ধে প্রতিপক্ষ রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে আলোচনায় সুস্পষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি। তিনি বলেন, তবে ছোটখাটো ইস্যু এখনও সমাধান করা বাকি রয়েছে।জেনেভায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠক চলাকালে জন কেরি শুক্রবার এ কথা বলেন। জন কেরি বলেন, আমরা দু’পক্ষই সিরিয়ার যুদ্ধবন্ধে আলোচনায় একটি সিদ্ধান্তের কাছাকাছি এসে পৌঁছেছি। তবে এখনই কোনও চুক্তিতে পৌঁছানো যায়নি।

জন কেরি ও সের্গেই লাভরভের আলোচনা তখনই শুরু হলো যখন সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাসের উপকণ্ঠ দারায়ার অবরোধ তুলে নিলো সিরিয়ার সরকারি বাহিনী। চার বছর ধরে চলে আসা গৃহযুদ্ধে দারায়ার নাগরিকরা আটকা পড়েন। অবরোধ শিথিল করায় রেডক্রস আটকা পড়াদের উদ্ধারে কাজ করছে। জন কেরি বলেন, আমরা আলোচনায় কয়েক ধাপ আগালেও সামনের দিনগুলোতে আরও আলোচনার সুযোগ রয়েছে।

অন্যদিকে, সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহীদের চুক্তির পর সিরিয়ার দামেস্কের দারায়া এলাকা ছাড়তে শুরু করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। তাদের সঙ্গে বিদ্রোহীরাও এলাকাটি ছাড়তে শুরু করেছেন। এরইমধ্যে স্থানীয় বাসিন্দা ও বিদ্রোহীদের বহনকারী বাসের প্রথম বহরটি দারায়া ছেড়েছে। চার বছর ধরে অবরুদ্ধ করে রাখার পর শুক্রবার থেকে দ্বিপাক্ষিক চুক্তির আওতায় দারায়া শহরটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবারই সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে অস্ত্র চুক্তি হয়। ওই চুক্তির আওতায় পুরো এলাকাটি ফাঁকা করে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। দারায়া উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর শুক্রবার সকালে সেখানে রেড ক্রিসেন্টের ত্রাণ বহরটি পৌঁছায়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ওই এলাকায় এখন পর্যন্ত একটি ত্রাণবহরই পৌঁছেছে। এলাকার বাসিন্দারা ত্রাণের অভাবে আছেন। তাদের কেউ কেউ অপুষ্টিতে ভুগছেন।