জমে উঠেছে শত বছরের প্রাচীণ গৌরনদীর কসবা গো-হাট

কোরবানির ঈদের এখনও দশদিন বাকি থাকলেও ইতোমধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার সাপ্তাহিক হাটের দিন থেকেই জমে উঠেছে দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহত ও শত বছরের প্রাচীণ বরিশালের গৌরনদী পৌর এলাকার কসবা গো-হাট।সরেজমিনে দেখা গেছে, এ অঞ্চলের অন্যতম বৃহৎ এ পশুর হাটে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। প্রতিবছর ঈদ-উল আযহায় এ হাটে সবচেয়ে বেশি পশু ক্রয়-বিক্রয় হয়। ইতোমধ্যে এ হাটে ভারতীয়, নেপালী, দেশী গরুতে সয়লাব হয়ে গেছে। তবে ক্রেতাদের কাছে দেশী গরুর চাহিদা বেশি লক্ষ্যকরা গেছে। এ গো-হাটকে কেন্দ্র করে কসবা, বানীয়াশুরি, চরদিয়াশুর, কালকিনির রমজানপুর, চরআইরকান্দি, সাহেবরামপুর, কয়ারিয়া, আগৈলঝাড়ার পয়সারহাট, বাশাইল, কোটালীপাড়া ও বান্ধাবাড়ি এলাকার কয়েক’শ মানুষের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে।

হাট ইজারাদার আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার জানান, আসন্ন কোরবানী উপলক্ষে সাপ্তাহিক হাটের পরিবর্ততে গত কয়েকদিন থেকেই প্রতিদিন ৫’শতাধিক গরু বিক্রি হয়। নোয়াখালী, লহ্মীপুর, ফেনী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্নস্থান থেকে বালামি নৌকায় (ট্রলার) গরু ব্যবসায়ীরা আসেন এ হাটে গরু ক্রয়ের জন্য। পাইকারী ব্যবসায়ীরাও দেশের সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে ট্রাক ভর্তি করে গরু আনেন বিক্রি করার জন্য। এছাড়া খুচরা পাইকাররা গ্রামঘুরে গৃহস্থের গরু ক্রয় করে আমদানি করেন এ হাটে বিক্রির জন্য।

স্থানীয় প্রবীণ ব্যক্তি কেতাব আলী হাওলাদার (৮০) জানান, প্রায় একশ বছর পূর্বে গোটা দঞ্চিণালের মধ্যে একমাত্র গো-হাট ছিলো বর্তমান মাদারীপুরের গোপালপুর এলাকায়। সেখানকার হাট পরিচালনা কমিটির নেতাদের সাথে বিরোধের জেরধরে কসবা গ্রামের জনৈক মোচন খান, পবন খান, গণি মুন্সী, জহুর আলী খান, কাসেম খানসহ ১০/১৫জন গরু ব্যবসায়ীরা কসবা এলাকার শাহ্ বংশের পরিত্যক্ত ভিটায় (বর্তমানে সরকারি সম্পত্তি) কসবা গো-হাট প্রতিষ্ঠিত করেন। হাটের সন্নিকটে মহাসড়ক ও আড়িয়াল খাঁর শাখা পালরদী নদীর অবস্থান হওয়ায় সড়ক ও নৌ-পথের সহজ যোগাযোগের কারণেই পর্যায়ক্রমে এ হাটের সুনাম গোটা দক্ষিণাঞ্চলে ছড়িয়ে পরে। ফলশ্রুতিতে দেশের বিভিন্ন এলাকার গরু ব্যবসায়ীরা এ হাটে আসতে শুরু করেন। তিনি আরও জানান, আগে এ হাটে গরু ক্রয়ের জন্য ব্যবসায়ীরা ১৫/২০টি বালামি নৌকা নিয়ে আসতো। প্রতিটি নৌকায় দেড় থেকে দুই’শ গরু ভর্তি করে ব্যবসায়ীরা নিয়ে যেতো। কালের বির্বতনে দেশের বিভিন্নস্থানে গরুর হাট প্রতিষ্ঠিত হওয়ায় কসবা গো-হাটের কিছুটা জৌলুস হারিয়ে গেছে। বর্তমানে প্রতিসপ্তাহে এ হাটের উদ্দেশ্যে ৫/৬টি বালামি নৌকা আসে।