%e0%a6%a6%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%bf%e0%a6%a4%e0%a7%80%e0%a7%9f-%e0%a6%b8%e0%a6%be%e0%a6%ac%e0%a6%ae%e0%a7%87%e0%a6%b0%e0%a6%bf%e0%a6%a8-%e0%a6%b2%e0%a7%8d%e0%a6%af%e0%a6%be%e0%a6%a8%e0%a7%8d%e0%a6%a1

কলাপাড়ার আমখোলাপাড়ায় দেশের দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশনের সঙ্গে গভীর সমুদ্রপথে অপটিক ফাইবার কেবল বসানোর কাজ আগামী ৬/৭ দিনের মধ্যে শেষ হচ্ছে। এলক্ষ্যে শেষ ধাপে ল্যান্ডিং স্টেশনে অপটিক্যাল কেবল সংযুক্তির মহাকর্মযজ্ঞ চলছে। এখান থেকেই উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যান্ডউইডথ বিক্রি হবে দেশে বিদেশে। খবর নির্ভরযোগ্য সুত্রের।

জাপানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এনইসি বালাদেশের সমুদ্র সীমায় একাজটি করছে। সাবমেরিন কার্যক্রম চালু করতে ৬শ’ ৬০ কোটি টাকা ব্যয় ১০ একর জমির ওপর ল্যান্ডিং স্টেশনের মূল ভবনসহ ফাংশনাল বিল্ডিংয়ের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বৈদ্যুতিক উপ-কেন্দ্র, জেনারেটর, ট্রান্সফরমার, অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থাসহ সাবমেরিন কেবলের যন্ত্রপাতি স্থাপন ও ডেটা সেন্টারের কাজ শেষ হয়েছে। ইউরোপ থেকে সিঙ্গাপুর হয়ে সমুদ্র পথে আসা সঞ্চালন লাইন বীচ ম্যানহোল, হ্যানহোল, জয়েন্ট ম্যানহোল হয়ে কুয়াকাটা হয়ে গোরাআমখোলা পাড়ায় দ্বিতীয় ল্যাংন্ডিং স্টেশনে দ্রুত যুক্ত হতে প্রয়োজনীয় লোকবল দিনরাত কাজ করছে। বিদ্যুত লাইন সঞ্চালনের জন্য স্থাপিত ইলেকট্রিক্যাল পোস্টের কাজও শেষ হয়েছে। চলছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসন, ডরমেটরি, নিরাপত্তা কর্মীদের ব্যারাক, বিশ্রামাগার, ড্রেনেজ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য অবকাঠামোর কাজ।

উচ্চ গতি সম্পন্ন আন্তর্জাতিক এসএমডব্লুউ-৫ (সাউথইস্ট এশিয়া-মিডলইস্ট-ওয়েস্টার্ণ ইউরোপ) কনসোর্টিয়ামের দেড় হাজার ক্যাপাসিটি (জিবিপিএস) ব্যান্ডউডথ বিশ্বব্যাপী আগামি বছরের (২০১৭ সালের) মার্চ মাসে বিপনন শুরু হবে। বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল্ কোম্পানী লিমিটেড (বিএসসিসিএল)’র এসএমডব্লিউ-৫ এস্ট্রেট ম্যানেজার সুভ্রম কিশোর দাস এসব তথ্য জানিয়েছেন। এসএমডব্লিউ-৫ প্রকল্প পরিচালক পারভেজ মনন আরশাফ জানান, ১৯টি দেশের টেলিযোগাযোগ সংস্থার সম্মেলনে গঠিত সাউথইস্ট এশিয়া-মিডলইস্ট-ওয়েস্টার্ণ ইউরোপ (এসইএ-এমই-ডব্লিউই-৫) আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়ামের অধীন এই সাবেমেরিন কেবলটিতে ২০ হাজার কিলোমিটার ব্যাপী অত্যাধুনিক ১০০ জি আলোক তরঙ্গের ডিডব্লিউএম প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। জাপানের এনইসি এবং ফ্রান্সের অ্যালকাটেল লুসেন্ট যৌথভাবে সাবমেরিন কেবল প্রতিস্থাপনের কাজ করেছে।

কুয়াকাটা সৈকত থেকে একটি ব্রাঞ্চের মাধ্যমে ল্যান্ডিং স্টেশন হয়ে মূল কেবলে বাংলাদেশ যুক্ত হবে। মিয়ানামারের সঙ্গে ব্রাঞ্চ শেয়ারিংও হবে। এর বাইরে সিঙ্গাপুর, মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, ভারত, পাকিস্তান, সৌদিআরব, কাতার, ওমান, জিবুতি, মিশর, তুরস্ক, ইতালী, ফ্রান্সসহ বেশ কিছু দেশ এ কেবলে যুক্ত হচ্ছে। এর জন্য সাগরের তলদেশ দিয়ে ফ্রান্স থেকে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, শ্রীলংকা ও মিয়ানমার হয়ে বাংলাদেশ পর্যন্ত ২৫ হাজার কিমি. দীর্ঘ কেবল স্থাপন করা হয়েছে। প্রায় ৬৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটিতে বাংলাদেশ সরকার ১৬৬ কোটি টাকা ও বিএসসিসিএল ১৪২ কোটি টাকা ব্যয় করবে। ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) প্রকল্পের বাকী প্রায় ৩৫২ কোটি টাকার ঋণসহায়তা দেবে। ন্যাশন ওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) অপারেটর হিসেবে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী লিমিটেডের (বিটিসিএল) কুয়াকাটা থেকে ঢাকাসহ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগীয় ও জেলা শহরগুলোতে ব্যান্ডউডথ পৌঁছানোর জন্য অপটিক্যাল ফাইবার ব্যাকহোল তৈরির কাজ করছে।

এখন কুয়াকাটা সৈকতে অপটিক্যাল ফাইবার কেবল্ ল্যান্ডিংয়ের কাজ চলছে। অপটিক্যাল মেরিন সার্ভিসের প্রধান ক্যাপ্টেন ইজাজ বলেন, সাবমেরিন স্টেশনের অভ্যন্তরীণ কেবলের সাথে অপটিক্যাল ফাইবার কেবল সংযোগ দিতে আমরা কাজ শুরু করছি। এ কাজ সম্পন্ন হতে আরও সপ্তাহ খানেক লাগতে পারে।বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানী লিমিটেডের (বিএসসিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘কক্সবাজারের সাবমেরিন কেবল থেকে ২০০ জিবিপিএস (গিগাবিটস পার সেকেন্ড) পাওয়া যাচ্ছে। যেখান থেকে আমরা ভারতে ব্যান্ডউইটথ রপ্তানী করছি। ভারত আরও বাড়াতে চায়। নতুন রুট হিসেবে ঢাকা-সিলেট-তামাবিল-শিলং-গৌহাটি-ভূটান পর্যন্ত সংযোগ সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে কলাপাড়ায় নির্মিত দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল স্টেশনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হওয়ার কথা রয়েছে। এটি চালু হয়ে গেলে দেড় হাজার ব্যান্ডউডথ সরবরাহের সক্ষমতা অর্জন করবে। ক্রমবর্ধমান ব্যান্ডউইডথ এর অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানীর মাধ্যমে বাংলাদেশ বড় অংকের অর্থ উপার্জনের সুযোগ পাবে।