%e0%a6%a8%e0%a6%ac%e0%a7%80-%e0%a6%a4%e0%a6%be%e0%a6%b8%e0%a6%95%e0%a6%bf%e0%a6%a8%e0%a7%87-%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%ac%e0%a6%b8%e0%a7%8d%e0%a6%a4%e0%a6%bf%e0%a6%b0-%e0%a6%9c%e0%a7%9f-%e0%a6%a4

খুনে মেজাজে ব্যাটিং করে রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে মোহাম্মদ নবি খেললেন ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। পরে গতির ঝড় তুলে ক্যারিয়ার সেরা বোলিং করা তাসকিন আহমেদ নিলেন ৫ উইকেট। টানা চার হারের পর জয়ের দেখা পেল চিটাগং ভাইকিংস।

রাজশাহী কিংসকে ১৯ রানে হারিয়ে ৫ ম্যাচে দ্বিতীয় জয়ে পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে তামিম ইকবালের দল। চার ম্যাচে তৃতীয় হারে ছয় নম্বরে নেমে গেছে রাজশাহী।শুরুতে ঝড় তোলেন স্মিথ। মাঝখানে দৃঢ়তাভরা এক অর্ধশতক করেন এনামুল। শেষটায় রাজশাহীর বোলারদের ওপর তা-ব চালান নবি। তাতে ৫ উইকেটে ১৯০ রানের বড় সংগ্রহ গড়ে চিটাগং।

রাজশাহীর প্রথম চার ব্যাটসম্যানই দারুণ শুরু করেন কিন্তু অর্ধশতক পর্যন্ত যেতে পারেননি কেউই। অলরাউন্ডার মিলিয়ে ১১ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলা দলটির টেলএন্ড পারেনি পরিস্থিতির দাবি মেটাতে। তাসকিনের দারুণ বোলিংয়ে ৯ উইকেটে ১৭১ রানে থেমে যায় রাজশাহীর ইনিংস। বড় লক্ষ্য তাড়ায় রাজশাহীকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন মুমিনুল হক ও প্রথমবার খেলতে নামা জুনায়েদ সিদ্দিক। ৪.৩ ওভারে এই দুই জনে গড়েন ৪৪ রানের জুটি। মাহমুদুল হাসানের ওভারে টানা চারটি চার হাঁকানো মুমিনুল ১৪ বলে করেন ২২ রান। এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠা জুটি ভাঙেন দলে ফেরা পেসার তাসকিন।

ছক্কা হয়ে যাচ্ছিল বলটা। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় সেটাকে ক্যাচ বানিয়ে নিলেন মাহমুদুল হাসান। তবে রিপ্লেতে দেখা গেল, অসাধারণ নৈপুণ্যেও লাভ হয়নি, ক্যাচটি ধরার সময় তাঁর জুতা সীমানা ছুঁয়ে গেছে। বেঁচে গেলেন ফরহাদ রেজা। তবে এমন ঘটনা দর্শকের আনন্দের খোরাক জোগালো শুধু। ম্যাচ তো তার আগেই প্রায় শেষ। শেষ পর্যন্ত চিটাগং ভাইকিংস জিতল ১৯ রানে। রাজশাহী কিংসকে হারিয়ে টানা চার ম্যাচ পর জিতল চট্টগ্রাম।

চট্টগ্রামকে শুক্রবার জয় এনে দিয়েছেন মোহাম্মদ নবী ও তাসকিন আহমেদ। দলের ব্যাটিংটা ভালো হচ্ছে না বলে গতকালই দুঃখ করছিলেন জহুরুল হক। আজও সে পথেই যাচ্ছিল চট্টগ্রামের ইনিংস। ১০ ওভার শেষে রান ৪ উইকেট ৬৯। এক ডোয়াইন স্মিথ ছাড়া অন্য কোনো ব্যাটসম্যানকে দেখে মনে হয়নি স্বস্তিতে আছেন। কিন্তু সেটা বদলে গেল নবী নামার পরই।নবী যখন নেমেছেন, তখন অপর প্রান্তে থাকা এনামুল হক বিজয়ের রান ছিল ১৯। নবী কোনো বাউন্ডারি মারার আগে এনামুলের রান ২৯, ১টি চার ও ২টি ছক্কা। সেই নবী যখন আবুল হাসানকে ছক্কা মেরে ফিফটি করলেন, অপর প্রান্তে বিজয়ের রান ৪৬! ২৫ বলে ফিফটি করার পথে নবী মেরেছেন ৪টি ছয়, ছিল ২টি চারও।

ফিফটির পরেও ঝড় থামেনি নবীর। হাসানের পরের দুই বলেও মারলেন চার। পঞ্চম উইকেটে ৫৫ বলে ১০৫ রানের জুটিটা ভেঙে গেল পরের ওভারে এনামুল আউট হয়ে গেলে। তবে এর আগের বলেই এবারের বিপিএলে নিজের প্রথম ফিফটি পেয়ে গেছেন তিনি। ৪০ বলের ইনিংসে এনামুল মেরেছেন ৪টি চার ও ২টি ছক্কা।

নবী অবশ্য এর পরেও হাল ছাড়েননি। শেষ ওভারেও ১৭ রান তুলে দলের স্কোরটা নিয়ে গেছেন ১৯০-এ। শেষ ৫ ওভারে চট্টগ্রাম তুলেছে ৭৬ রান। নবী অপরাজিত ছিলেন ৮৭ রানে। ৬ ছক্কা ও ৬ চারের ইনিংসটি খেলতে তাঁর লেগেছে মাত্র ৩৭ বল! তবে ৬০ রানেই আউট হতে পারতেন, কিন্তু ফরহাদ রেজার বলে তাঁর ক্যাচ ড্যারেন স্যামি ধরতে পারেননি।তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু করেছিল রাজশাহী কিংস। দ্বিতীয় ওভারে মাহমুদুল হাসানকে টানা চারটি চারে মুগ্ধ করলেন মুমিনুল হক। তবে বিস্মিত করেছেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। শুরুতে কোনো দল না পাওয়া জুনায়েদ আজই প্রথম নামলেন মাঠে। চোটগ্রস্ত রনি তালুকদারের বদলি হিসেবে। চতুর্থ ওভারে ওই মাহমুদুলকে দুই ছক্কায় বুঝিয়ে দিলেন হঠাৎ নেমে পড়লেও ব্যাটে ঝড় তুলতে কোনো সমস্যা নেই। ঝড় তুলতে সমস্যা না হলেও রাজশাহীর ব্যাটসম্যানদের কেউ নবী হতে পারলেন না। অর্থাৎ এক প্রান্ত ধরে রেখে দ্রুত রান তোলার কাজটি করতে পারেননি কেউই। মুমিনুল (২২), জুনায়েদ (৩৮), সাব্বির রহমান (৪৬) ও উমর আকমল (২১)Ñসবাই ঝড়ের ইঙ্গিত দিয়েও পূর্ণতা দিলেন না ইনিংসের। ১২ ওভারে ২ উইকেটে ১০০ রান করে ফেলেও তাই শেষ পর্যন্ত হারতে হলো রাজশাহীকে। ১৫তম ওভারে সাব্বিরের আউটই ম্যাচের ভাগ্য বদলে দিল। তার আগে ৪ ছক্কা ও ১ চারে চট্টগ্রামকে কোণঠাসা করে ফেলেছিলেন সাব্বির।ব্যাটিংয়ের পর বল হাতেও দারুণ করেছেন মোহাম্মদ নবী। ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে পেয়েছেন ১ উইকেট। তবে ৩১ রানে ৫ উইকেট পেয়ে সবচেয়ে উজ্জ্বল তাসকিন আহমেদই।