2ময়মনসিংহে পুলিশের তা-বে শিক্ষকসহ দুইজন হত্যার জন্য দায়ীদের বিচার কর, অবিলম্বে আন্দোলনের দাবি মেনে নাও, শিক্ষা নিয়ে সংসদসদস্যদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন, শিক্ষামন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উভয়েই এই হত্যার প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করেছেন- গণসংহতি আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তাগণ

আজ ৩০ নভেম্বর ২০১৬, বুধবার বিকাল ৪টায় গণসংহতি আন্দোলন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির উদ্যোগে ‘ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় কলেজ জাতীয়করণের দাবিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের গণ আন্দোলনে পুলিশী তা-ব ও শিক্ষকসহ দুজন মানুষ হত্যার প্রতিবাদে’ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল অনুষ্ঠিত হয় । সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং সমসাবেশে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, তাসলিমা আখ্তার এবং সমাবেশ সঞ্চালন করেন সম্পাদকম-লীর সদস্য জুলহাসনাইনবাবু।
¬¬¬
সভাপতির বক্তব্যে জোনায়েদ সাকি বলেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার যে কতটা নিপীড়ক ও গণবিরোধী হয়ে উঠছে, তার সর্বশেষ নজির ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় জাতীয়করণের দাবিতে করা সমাবেশে পুলিশের তা-ব, গুলিবর্ষণ ও লাঠিচার্জে দুই জনের মৃত্যু। এদের মাঝে একজন ফুলবাড়িয়া কলেজেরই শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ পুলিশের লাঠিচার্জে মারাত্মক আহত হবার পর অ্যাম্বুলেন্স এলেও পুলিশ সেটি আটকে রেখে আহত এই শিক্ষককে চিকিৎসাও নিতে দেয়নি। গণসংহতি আন্দোলন অবিলম্বে এই নৃশংহ হত্যাকা-ের নিন্দা জানায়।

জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, একই সাথে এই ঘটনা আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে দেশের সকল প্রতিষ্ঠান দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে ওঠারও ফলাফল। ১৯৭২ সালে প্রতিষ্ঠিত প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার অধিক শিক্ষার্থীর ফুলবাড়িয়া কলেজকে জাতীয়করণ না করে বেগম ফজিলাতুন্নেসা কলেজ নামের আরেকটি নতুন কলেজকে জাতীয়করণ করা হয়, যেখানে মাত্র কয়েকশত শিক্ষার্থী আছেন। সকল ঘটনার মতই স্থানীয় এমপির নামও আসছে, যিনি টাকার বিনিময়ে এই নতুন কলেজটিতে নিয়োগ দিয়ে বিপুল অর্থ আয় করেছেন। এই ঘুষের অর্থকে বৈধ করার জন্য পুরনো কলেজটিকে বাদ দিয়ে জাতীয়করণ করা হয় এমপির নতুন কলেজটিকে। দুটি কলেজেরই প্রায় সকল পদ দখল করে আছেন এই সংসদ সদস্য। শিক্ষা নিয়ে এই দুর্নীতি আর বেপরোয়া লুণ্ঠনেরই প্রতিবাদ জানাতে জড়ো হয়েছিল স্থানীয় জনসাধারণ ও শিক্ষার্থী সমাজ।

ন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, এই হত্যার প্রেক্ষাপট নির্মাণ করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তার আমলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সংসদ সদস্য নামের মাফিয়াদের দখলে চলে গিয়েছে, জাতীয়করণের নামে বিপুল দুর্নীতি হয়েছে, আর হয়েছে শিক্ষক নিয়োগের নামে নিয়োগ বাণিজ্য। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার পতনের ইতিহাসে তিনি সবচে বড় কুশীলব হিসেবে চিহ্নিত হবেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্র্ওী এই ঘটনার দায এড়াতে পারেন না। মুখ খুললেই গুলি, প্রতিবাদ করলেই গ্রেফতার বাংলাদেশে এখন নৈমত্যিক আইনে পরিণত হয়েছে। এই দুই জনের কারোই নিজের পদে থাকার কোন নৈতিক অধিকার নেই। আমরা এই দুই মন্ত্রীরই পদত্যাগ দাবি করছি। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বাংলাদেশ আজ এমন একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে যেখানে মানুষ কথা বলতে ভয় পায়। আর এরই সুযোগে চলছে রাষ্ট্রীয় সম্পদের বাধাহীন লুটপাট আর অপচয়। এই প্রবল স্বৈরাচারী শাসকদের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক আন্দোনকে শক্তিশালী করা ছাড়া বাংলাদেশকে রক্ষা করার আর কোন বিকল্প নেই। গণসংহতি আন্দোলন সকলের প্রতি সেই সংগ্রামেরই ডাক দিয়ে যায়।