gurudaspur-pic-03-12-2016নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার নারী শ্রমিকরা জীবিকা নির্বাহের তাগিদে শ্রম বিক্রি করতে গিয়ে উপযুক্ত পারিশ্রমিক থেকে বঞ্চিত হয়ে অবহেলা ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। পরনির্ভরশীল হয়ে বেঁচে না থেকে স্বাবলম্বী হয়ে বাঁচার জন্য নারী শ্রমিকরা কৃষি কাজের পাশাপাশি গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়ন, ধানের চাতাল, হোটেল রেস্তোরা, ইট ভাটা, এমনকি নির্মাণ কাজের সাথেও জড়িয়ে আছে। এখানকার নারী শ্রমিকদের কর্ম পরিধি দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। তবুও সারাদিন কঠোর পরিশ্রম করে নারীরা মজুরী পায় দেড়শত টাকা। অথচ একই কাজ করে পুরুষ শ্রমিকরা মজুরী পায় সাড়ে তিনশত টাকা।

gurudaspur-pic-03-12-2016সরেজমিনে দেখা যায়, গুরুদাসপুর পৌর শহরের সাড়ে তিনশত মিল চাতালে কর্মরত প্রায় অর্ধেকই নারী শ্রমিক। এখানেও তাদের অবহেলার পাত্র হিসেবে দেখা হয়। দিনরাত কাজ করে মজুরী বৈষম্যের শিকার হচ্ছে তারা। ইট ভাটার নারী শ্রমিকদেরও একই বৈষম্যের শিকার হতে হচ্ছে। মিল চাতালে কর্মরত হালিমা বলেন, সমান কাজ করলেও কেবল নারী বলে আমাদের কম পারিশ্রমিক দেয়া হয়। যখন শ্রমিক সংকট হয় তখন নারী শ্রমিকের কদর বাড়ে। কদর বাড়লেও বাড়েনা পারিশ্রমিক। এছাড়াও বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের নয়াবাজার বিশ্বরোড মোড়ে প্রতিদিন সকালে নারী-পুরুষ শ্রমিকের হাট বসে। সেখানে শ্রম বিক্রি করতে আসা সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার রাহেলা খাতুন ও মাজেদা খাতুন জানান, সংসারে বাড়তি স্বচ্ছলতার আশায় ভোরে বাড়ির রান্নাবান্না শেষ করে সাড়ে ৫টার মধ্যে নয়াবাজার বিশ্বরোড মোড়ে আসতে হয়। সারাদিন কাজ করে আবার সন্ধ্যায় বাড়ী ফিরতে হয়।

মজুরী বৈষম্য নিয়ে কথা বলার সময় বেশকিছু নারী শ্রমিকের চোখে মুখে ক্ষোভের ছাপ লক্ষ্য করা যায়। তখন ঘুরে ফিরে একই প্রশ্ন বার বার আসে, পুরুষ শ্রমিকদের সাথে সমান তালে কাজ করলেও নারী শ্রমিকদের সমান মজুরী দেয়া হয় না কেন?

অধ্যাপক আত্হার হোসেন, গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.