jhenidah-picবঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য পাকিস্তানিদের সঙ্গে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছি। জীবনকে বাজিরেখে যুদ্ধ করে দেশের মাটিতে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করি। এই সরকারে আমলে মুক্তিযোদ্ধারা সরকারী ভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে সাথে জুটেছে সম্মানি ভাতা। আওয়ামী লীগ সরকার মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন ভাবে সম্মানিত এবং সুবিধা প্রদান করে যাচ্ছে। তবে অনেক মুক্তিযোদ্ধারা এখনো ন্যূনতম সরকারী স্বীকৃতি টুকু পায়নি। তাদের কাছে এখন সেগুলো শুধুই স্মৃতি। ১৯৭১ সালে জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে রনাঙ্গনে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছে এমনি একজন সফল মুক্তিযোদ্ধা নাম শরিফুল ইসলাম। যার গেজেট নং ৬৪ লাল মুক্তি বার্তা নং ০৪০৯০১০০৯১ ভারতিয় নংএবং কল্যান ট্রাস্ট নং ৪৮৫৭৭ এবং ইবিআরসি নং ১১১৬।

শরিফুল ইসলাম ঝিনাইদহ সদর উপজেলার উত্তর নারায়নপুর গ্রামের ১৯৫৫ সালে জন্ম গ্রহন করেন। তার পিতার নাম মৃত জিয়ারত বিশ্বাস। তিনি ৮নং সেক্টরে সেক্টর কমান্ডার মেজর মুঞ্জুরের অধিনে যুদ্ধ করেছেন। ১৯৭১ সালের এপ্রিল মাসের শেষের দিকে গ্রুপ কমান্ডার মশিউর রহমান এর নেতৃত্বে ঝিনাইদহ শৈলকুপা এবং হরিণাকু-ু প্রায় ১৫/২০জন যুবক ভারতের শিকারপুর ক্যাম্পে ট্রেনিং এর উদ্দেশ্যে রওনা দেন।

ঔখানে ১০দিন ট্রেনিং করার পর ডোমপুকুর ট্রেনিং ক্যাম্পে ১৫দিন ট্রেনিং করেন। এরপর বিহার চাকুলিয়া ক্যান্টনমেন্টে মেজর ভোলা ( সংক্ষিপ্ত নাম) এর অধিনে ৪১দিন ট্রেনিং শেষ করার পর বাংলাদেশে ফিরে আসার উদ্দেশ্যে ভারতের বনগাঁ ক্যাম্পে ১০দিন অবস্থান করেন। এই ক্যাম্পে মেজর বাজুয়া সিং তাদেরকে পুনরায় ট্রেনিং পরিদর্শন করেন এবং নতুন নতুন কৌশল শিখিয়ে দেন।

এভাবে প্রায় আড়াই মাস পর গ্রুপ কমান্ডারের নেতৃত্বে ঝিনাইদহের ১৫/১৬ জন মুক্তিযোদ্ধা একসাথে বাংলাদেশে ফিরে আসে এবং ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মহামায়া গ্রামে এক হিন্দুদের ফেলে যাওয়া বাড়ীতে অবস্থান করেন। সেখানে স্থানীয় রাজাকার বাহিনীর উপর হামলা চালাই। রাজাকারদের সাথে সস্মুখ যুদ্ধে ৭জন রাজাকার নিহত হয়। গ্রুপ কমান্ডার মশিউর রহমানের নেতৃত্বে এই যুদ্ধ চলে।

যুদ্ধশেষে একই উপজেলার গেড়ামারা গ্রামে এসে বিশ্রাম নিই। দিনশেষে ঐ রাতেই পার্শ্ববর্তী কাতলামারী ঘাট পার হয়ে হরিণাকু-ু উপজেলায় অবস্থান করি। ওখানে ১দিন অবস্থান করার পর শৈলকুপার ত্রিপাকান্দি গ্রামে এসে ক্যাম্প করেন। ক্যাম্পে ৪/৫দিন অবস্থান করার পর একই উপজেলার হাট ফাজিলপুর বাজারের পূর্বপাশে বিলের মধ্যে ক্যাম্প করে ৫দিন অবস্থান করে শৈলকুপা থানা আক্রমন করেন। কিন্তুু খবরটি আগে থেকেই জেনে যাওয়ার কারনে। ঐ আক্রমন তেমন সফল হয়নি।

থানা আক্রমন শেষে তারা স্বদলবলে আবার ওই ক্যাম্পে ফিরে জান। শৈলকুপায় মুক্তিযোদ্ধাদের বড় একটি গ্রুপ রেখে আমরা হরিণাকু-ু উপজেলার দিকে অগ্রসর হয়। শরিফুল আরো জানান, ১০/১১জন মুক্তিযোদ্ধা সাথে স্থানীয় আরও কিছু মুক্তিপাগল জনতা আমাদের সাথে হরিণাকু-ুর রসুনপুর গ্রামে অবস্থান নিই। রসুনপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধারা অবস্থান করছেন জেনে রাজাকাররা লুটপাট আরম্ভ করে।

এই অবস্থায় তাদের প্রতিরোধ করতে চাইলে পাকিস্থানী খানসেনা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে ভয়াবহ যুদ্ধ হয়। ঐ যুদ্ধে ৮জন পাকসেনা এবং ২জন মুক্তিযোদ্ধা নিহত হয়। একজনের নাম সদর উদ্দীন অন্যজনের নাম এই মূহূর্তে মনে নেই বলে তিনি জানান। ঐ যুদ্ধে অনেকে আহত হন। এর পরে আর বড় কোন যুদ্ধের মুখমুখি হয়নি।

জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি