জঙ্গিবাদ নিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে পশ্চিমারা অপপ্রচার চালাচ্ছে অভিযোগ করে তাতে বিভ্রান্ত না হতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।তিনি বলেছেন, যারা ধর্মের নামে জঙ্গি-সন্ত্রাস চালচ্ছেন তাদের বলতে চাই, এটা জিহাদ নয়, ধর্মীয় বিপ্লবী কর্মও নয়; এটা জঘন্য, অমানবিক ধর্মবিরোধী অপরাধ কর্ম। সাংবাদিকরা এই বিষয়টি খেয়াল করবেন। যে জঙ্গি সন্ত্রাস চলছে তার সঙ্গে ইসলাম শব্দটা লাগবেন না।

ট্রাম্প সাহেব ইউরোপের ঘটনা উল্লেখ করে বলেছে ইসলামী টেররিস্ট, অথবা আমরা বলে থাকি ইসলামি সন্ত্রাসী। সন্ত্রাসকে সন্ত্রাসের নামে ডাকুন। এর সঙ্গে ইসলামকে মেলাবেন না। বোকো হারাম, আল কায়েদা, জামায়াতে ইসলামী নামে ডাকুন। ইসলামি জিহাদিস্ট বা ইসলামি রাজনীতি করছে, এই কথা বলবেন না।বুধবার ঢাকায় ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে এক অনুষ্ঠানে এই আহ্বান জানান জাসদ সভাপতি ইনু।পশ্চিমাদের অপপ্রচার মোকাবেলা মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মনে করেন তিনি। ইসলাম ফোবিয়া বা ইসলামকে কেন্দ্র করে একটা আতঙ্ক তৈরি করা হচ্ছে। আসলে মুসলমান সমাজ জঙ্গি সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না। এই মিথ্যাচারটা পশ্চিমা বিশ্ব প্রচার চালাচ্ছে।

দ্বিতীয় প্রচার চালাচ্ছে- জঙ্গি সন্ত্রাস এবং ইসলাম ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তারা সন্ত্রাসের সঙ্গে ইসলামের একটা যোগসূত্র তৈরি করার চেষ্টা করছে। ইসলাম ফোবিয়ার একটা পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করছে। সুতরাং এই বিষয়টা আমাদের গণমাধ্যমের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ।এই মিথ্যাচারকে মোকাবেলা করাটা গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে একটা নৈতিক দায়িত্ব। ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং রাজনীতিবিদের এর বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে দাঁড়াতে হবে। ইসলাম ফোবিয়ার বিরুদ্ধে এবং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে, বলেন তথ্যমন্ত্রী।

জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের ক্ষমতা দখলের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহারের প্রবণতার বিষয়টির দিকেও নজর রাখার পরামর্শ দেন তিনি।যারা সরাসরি যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নেয়, জঙ্গিদের পক্ষে অবস্থান নেয়, তারা রাজনীতির জন্য বিপজ্জনক। তাদেরকে রাজনীতির দৃশ্যপট থেকে বিতাড়ন না করা পর্যন্ত ঝুঁকি কাটবে না। পত্রিকায় খবরে তাদের নাম লেখার আগে- যুদ্ধাপরাধীর পক্ষ নেওয়া খালেদা জিয়া, জঙ্গিদের পক্ষ নেওয়া খালেদা- এভাবে লিখলে মানুষ সচেতন হবে। আগুন সন্ত্রাসী খালেদা জিয়া- এভাবে যদি বলতে না পারেন, তাহলে কিন্তু বাংলাদেশ থেকে জঙ্গি সন্ত্রাস দূর করা যাবে না।অপরাধ দমনে অনুসন্ধানী কাজের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী।তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সাংবাদিকের বার্ষিক পুরস্কার দেওয়া যায় কি না, তা চিন্তা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।গণমাধ্যমকেও নির্মোহভাবে অপরাধীদের প্রশ্নে আপসহীন থাকার পরামর্শও দেন মন্ত্রী।

ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশনের বার্ষিক সাধারণ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ইনু। বিশেষ অতিথি ছিলেন র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ক্র্যাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান লাভলু, সভা পরিচালনা করেন মাহবুব আলম লাভলু।অনুষ্ঠানে ডিআরইউর সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশাসহ সাংবাদিক ও ক্র্যাবের জ্যেষ্ঠ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।