আজ ০৭ জানুয়ারী ২০১৭ইং বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে কাজী বশির মিলনায়তন (মহানগর নাট্যমঞ্চে) সকাল ১০.০০টায় ১০ জানুয়ারী বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন- যদি গনতন্ত্র হত্যা বা হরণের প্রচেষ্টার অভিযোগ করা হয় তাহলে বিএনপি জামাতকে অভিযোগ করা যায়। কারণ ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনারা শুধু অংশ নেয়া থেকে বিরত থাকেন নি, আপনারা জনগণের ভোটাধিকারে বাধা দিয়েছিলেন। ভোট কেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছিলেন, প্রিজাইডিং অফিসারদের হত্যা করেছিলেন, সাধারণ ভোটারদের কুপিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করেছিলেন। এর মাধ্যমে আপনারা জনগণের ভোটাধিকারে বাধা দিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ভোটাধিকার হরণের প্রচেষ্টার জন্য যদি অভিযোগ করা যায় তাহলে বিএনপি জামাতকে অভিযোগ করা যায়। বর্তমান সরকার মানুষের ভোটাধিকার হরণ করেছে এর চেয়ে নির্লজ্জ মিথ্যাচার আর কিছু আছে বলে জনগণ মনে করে না। শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘৫ জানুয়ারির নির্বাচন: ইতিহাসের কলঙ্ক’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে মওদুদ আহমেদ বলেন ‘গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে ৫ জানুয়ারি প্রহসনের নির্বাচন করেছিল আওয়ামী লীগ। মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ওই দিনই তারা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে।’ বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, বিএনপি বিগত নির্বাচন শুধু বর্জনই করেনি, সংবিধানের ধারাবাহিকতা রক্ষার সেই নির্বাচনকে প্রতিহত করতে মানুষ হত্যা করেছে, ্্জ্বালাও-পোড়াও করেছে। এদেশের জনগণ আর সন্ত্রাস দেখতে চায় না। সন্ত্রাস পরিহার করুন তা না হলে আগামী নির্বাচনে এদেশের মানুষ আবারো আপনাদেরকে উচিত শিক্ষা দেবে। তিনি আরো বলেন- দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেয়ার সমালোচনা করে বলেন, বিএনপির ১০ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সবচেয়ে বড় কারণ ছিল জামায়েত ইসলামি। উচ্চতর আদালতের রায়ে যুদ্ধাপরাধিদের দল হিসেবে তারা নির্বাচনের অংশ নিতে পারেনি।

তিনি আরো বলেন, জামায়েত ইসলাম নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না সেই জন্য আপনারা নির্বাচনে অংশ নেন নি। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে আপনারা জনগণের ভোটাধিকারে বাধা দিয়েছিলেন। আপনারা নির্বাচনে অংশ না নিলে তো জনগণ দায়ী হতে পারে না, সরকার দায়ী হতে পারে না। নির্বাচনে অংশ না নিয়ে আপনারা জনগণের ভোটাধিকার বাধা দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের উন্নয়ন চিত্রের ব্যাবধান উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ নেতা বলেন, আজ উন্নয়নের সব দিক থেকে পকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে। বাংলাদেশের এই উন্নতি, এই উন্নয়ন পাকিস্তানের ভাল লাগছে না। তাই বিএনপি-জামায়াতকে দিয়ে তারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চায়। পাকিস্তানের হয়ে ধ্বংসাত্বক কাজ করছে বিএনপি-জামায়াত। বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ এর বক্তব্যের সমালোচনা করে হানিফ আরো বলেন, আমরা বার বার বলেছি ৫ জানুয়ারির নির্বচন সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার নির্বাচন। এই নির্বাচন না হলে এদেশে সাংবিধানিক শুন্যতা তৈরি হতো। সেই সাংবিধানিক শুন্যতার সুযোগ নিয়ে অশুভ শক্তি ক্ষমতা দখলের সুযোগ পেতো। মওদুদ সাহেব তাহলে কি আপনারা চেয়েছিলেন অশুভ শক্তি ক্ষমতা দখল করুক ?

আজকের আলোচনা সভার প্রধান বক্তা যুবলীগ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের সাজা কার্যকর করার প্রতিবাদে বিএনপি-জামাত দেশজুড়ে শুরু করেছিল ব্যাপক গণহত্যা, বোমাবাজী, অগ্নিকান্ড ও লুটতরাজ। বিএনপি-জামাত বোমাবাজী, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসত বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ, বাস-ট্রেনে আগুন দেয়া, বায়তুল মোকাররম মসজিদে পবিত্র কোরআন শরীফে আগুন, বৃক্ষনিধন, সড়ক কেটে ফেলার মত নাশকতা চালিয়ে একাত্তরের পাকিস্তানী হানাদারদের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছিল। পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে বিএনপি-জামাত প্রায় এক হাজার মানুষকে হত্যা করেছে। বিএনপি-জামাতের হামলায় আহত হন প্রায় ২২ হাজার মানুষ। ঐ সময় ১১৬২ টি গাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করে, ভাংচুর করে প্রায় ২৬ হাজার ৩ শত ৭৪ টি গাড়ী। অন্যদিকে আওয়ামী সরকার দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দিয়েছে, বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বিশ্বের ১০ জন চিন্তাবিদের একজন নির্বাচিত হয়েছে। কূটনৈতিকভাবে বাংলাদেশ সফল। চীন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনাকে সহযোগীতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। আজকে পদ্মা সেতু স্বপ্ন নয়-বাস্তবে রূপ নিয়েছে। তিনি আরো বলেন- রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উন্নয়ন বলে শেষ করা যাবে না। আওয়ামী লীগ সরকার হিসেবে সফল হলেও দল হিসেবে ব্যর্থ। কারণ এতো সন্ত্রাসের পরেও সম্প্রতি অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি ৯৬ হাজার ভোট পেয়েছে। যদি আওয়ামী লীগ প্রচার প্রচারণায় রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার উন্নয়নের চিত্র দেশবাসীর কাছে সঠিক ভাবে তুলে ধরতে পারতো তাহলে বিএনপি নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে জামানত হারাতো।

ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম রেজার পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন-যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য শহীদ সেরনিয়াবাত, আবদুস ছাত্তার মাসুদ, আতাউর রহমান, অধ্যাপক এবিএম আমজাদ হোসেন, আনোয়ারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাঃ বদিউল আলম, ফজলুল হক আতিক, আসাদুল হক আসাদ, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কাজী আনিসুর রহমান, মিজানুল ইসলাম মিজু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সহ-সভাপতি সোহরাব হোসেন স্বপন, আনোয়ার ইকবাল সান্টু, হারুন-অর-রশিদ, এনামুল হক আরমান, দ্বীন মোহাম্মদ খোকা, মোরসালিন আহমেদ, খোরশেদ আলম মাসুদ, যুগ্ম-সম্পাদক ওমর ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক মাকসুদুর রহমান, কাজী ইব্রাহিম খলিল মারুফ, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য আরমান হক বাবু, এমদাদুল হক এমদাদ, এ্যাড. শাহনাজ পারভীন হীরা, শহিদুল ইসলাম হৃদয়, মিল্টন আহমেদ বাদল, জাহাঙ্গীর আলম, আশরাফুল ইসলাম প্রমুখ।