পাঠ্যবইয়ে ভুলভ্রান্তি নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, মানুষের ভুলত্র“টি হতেই পারে। তবে কিছু ভুল হওয়া উচিত ছিল না। এই ভুলের জন্য বিচার হওয়া উচিত। যাঁরা ভুল করেছেন, তাঁরা রেহাই পাওয়ার যোগ্য নন। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের বিভিন্ন বইয়ে ভুলের কারণে সমালোচনার মধ্যে মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।

চলতি বছরের প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্যবইয়ে বিভিন্ন ধরনের ভুলভ্রান্তি ধরা পড়েছে। কিছু আলোচিত গল্প-কবিতা বাদ পড়েছে। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এমন প্রেক্ষাপটে সংবাদ সম্মেলনে এলেন শিক্ষামন্ত্রী।নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পাঠ্যবইয়ের ভুলগুলো শুদ্ধ করার এখনো সময় আছে। তবে ভুলের জন্য বিচার হওয়া উচিত। যাঁরা ভুল করেছেন, তাঁরা রেহাই পাওয়ার যোগ্য নন।

পাঠ্যপুস্তকের ভুলত্র“টি নির্ণয় ও দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে সুপারিশ দিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিষয়টি উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তদন্ত কমিটি হয়েছে। কমিটি প্রতিবেদন হাতে পাওয়া পর ভুল সংশোধনসহ অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, পাঠ্যবইয়ে ভুলের জন্য কে বেশি দায়ী, আর কে কম দায়ী, সেটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। তদন্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাঠ্যবইয়ে কিছু ভুল হওয়া কোনোভাবেই উচিত হয়নি স্বীকার করে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এই ভুলের অযোগ্যতা ক্ষমা করার মতো নয়।নুরুল ইসলাম নাহিদ জানান, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) দুই কর্মকর্তাকে ইতিমধ্যে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।নাহিদ বলেন, ভুলত্রুটির বিষয়ে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) একটি কমিটি করেছে। কেন হল, কারা দায়ী- তা বের করা হবে। প্রাথমিকভাবে দুইজনকে চিহ্নিত করে ওএসডি করা হয়েছে।তদন্ত প্রতিবদনের আলোকে দায়ী সবার বিরুদ্ধে পরিপূর্ণ শাস্তির দিকে’ যাওয়া হবে জানিয়ে তিনি বলেন, যারা ভুলত্রুটি করেছেন রেহাই পাওয়ার যোগ্য না।বিশ্ব ব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নের কারণে আন্তর্জাতিক টেন্ডারসহ নানা জটিলতায় প্রাথমিকের বই পরিমার্জন ও ছাপানোর ক্ষেত্রে এনসিটিবির সময় কম পাওয়ার কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী।

তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর ভুল-ত্র“টির সংশোধনী দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ভুল ত্র“টি হতেই পারে। তারপরও বই পাচ্ছে আনন্দ করছে, উৎসব করছে। কেবল ভুল তুলে ধরে এগুলোকে নিরুৎসাহিত করে ছাত্র-ছাত্রীদের হতাশ করে দেওয়া ঠিক না।

বছরের প্রথম দিন ৪ কোটি ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ২০১ জন শিক্ষার্থীর হাতে এবার ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার বই ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করে সরকার। সেসব বইয়ে এবার ভুলের ছড়াছড়ির কারণে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে।