বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে জেলে পাঠানো হলে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে নির্বাচন দেওয়া হলে দেশের মানুষ নির্বাচনে অংশ নেবে না।বুধবার বিকেলে ডিআরইউতে এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ড. ইউনূস আমাদের গর্ব। সারা পৃথিবী তাঁকে সম্মান দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনি তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে শত্র“ চিহ্নিত করেছেন। কারণ, লোকে বলে, নোবেল পুরস্কার নাকি আপনার প্রাপ্য ছিল।প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদাকে দলীয় ব্যক্তি আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, নুরুল হুদা ছাত্ররাজনীতি করেছেন। পরে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে সরকারি চাকরি হারিয়েছেন। ২০০৮ সালে নির্বাচনে তাঁকে আওয়ামী লীগের প্রচারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। এসবের সব প্রমাণ আছে বলে তিনি দাবি করেন।

এদিকে, কে এম নূরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করে গঠিত নির্বাচন কমিশন জনগণের আস্থা অর্জন করতে পারবে না বলে মনে করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।নতুন ইসির শপথের কয়েক ঘণ্টা আগে বুধবার নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সমাবেশে তিনি বলেন, এই সরকার চাচ্ছে, ভূতের মতো একজন ব্যক্তিকে রেখে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো নির্বাচন করেই আবার দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকার।এজন্যই হারিকেন দিয়ে খুঁজে বহু নাটক করে, বহু পদ্ধতি করে, বহু তামাশা করে, বহু প্রক্রিয়া করে নূরুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশন করে নিয়ে এসেছে তারা।”এই কমিশন দিয়ে ফেনী মার্কা নির্বাচন করবেন; প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কেন্দ্রে গেলে মানুষ রক্তাক্ত হবে অথবা লাশ হবে- এই ধরনের নির্বাচন করার মনোভাব নিয়ে, মনোবাসনা নিয়েই আজকে সিইসি নিয়োগ করা হয়েছে। এটি এদেশের মানুষ কখনও মেনে নেবে না, বলেন রিজভী।পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির ষড়যন্ত্র বিষয়ে কানাডার আদালতের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি নেতা বলেন, বিশ্ব ব্যাংক তাদের অভিযোগ থেকে সরে না আসায় ওই অভিযোগ এখনও প্রাসঙ্গিক।

অভিযোগটা তখন উঠেছিল কেন? অত্যন্ত নির্ভেজাল অভিযোগ- প্রকাশ্যে মন্ত্রীর নিজস্ব কনট্রাক্টরি ফার্মের প্যাডে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সেটা তো আর মিথ্যা নয়। দুর্নীতি, চুরি, জালিয়াতির যে নির্দশন আওয়ামী লীগ সরকার স্থাপন করেছে, সেটি আর কখনও হয়নি।রিজভী বলেন, তারা টেলিভিশনে ফাটিয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন-আরে বাপরে বাপ, তারা বিশাল সার্টিফিকেট পেয়ে গেছেন কানাডার আদালত থেকে। এই দেশটাকেই তারা মনে করছে লুটপাট করে ব্যাংক ডাকাতি করে দখল করে রাখবেন। এজন্যই গণতন্ত্রকে তারা অবরুদ্ধ করে রেখেছে।সরকারের চরিত্রের কারণেই’ সিলেটে জেলা প্রশাসকের কর্মচারীরা দুর্নীতি দমন বিভাগের কর্মকর্তাদের, পুলিশদের আটকে রাখে বলেও দাবি করেন তিনি।দুর্নীতি-লুটপাট, ব্যাংক ফাঁপা করে দেয়া- সবই সরকারের দুর্নীতির দৃষ্টান্ত। সেজন্যই সিলেটে জেলা প্রশাসকের কর্মচারিরা দুর্নীতি দমন বিভাগের কর্মকর্তাদের, পুলিশকে আটকে রাখে। এই দৃষ্টান্তের পরেও কী আপনারা নিজেদের পবিত্র ভাবছেন, দুর্নীতিমুক্ত ভাবছেন?

বিভিন্ন খাত থেকে অর্থ লোপাট করে আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রী ও তাদের স্ত্রীরা কানাডাতে বেগমগঞ্জ বানিয়েছেন বলেও অভিযোগ করেন রিজভী।