সাভারের পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) প্রায় তিন মাসের চিকিৎসা শেষে সিলেটের বাড়িতে ফিরেছেন কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম।শুক্রবার বেলা একটার দিকে বিমানে করে সিলেটের এম এ জি ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান খাদিজা। পরে বিমানবন্দর থেকে গাড়িতে করে সিলেট সদর উপজেলার আউশা গ্রামে নিজ বাড়িতে পৌঁছান তিনি।খাদিজার চাচা আবদুল কুদ্দুস জানান, খাদিজা বাড়িতে এসেছেন। বাড়িতে ফিরে আসায় সবাই খুশি। আর কোনো খাদিজা যেন নৃশংসতার শিকার না হন, এমনটাই চাও পরিবারের। খাদিজার ওপর হামলাকারী বদরুল আলমের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন আবদুল কুদ্দুস। শুক্রবার দুপুর ১টায় বিমানযোগে ঢাকা থেকে তাকে সিলেটে নিয়ে আসা হয়।বিমানবন্দরে নেমেই খাদিজা সাংবাদিকদের বলেন, আমি চাই দ্রুত বদরুলের বিচার হোক। তার শাস্তি হোক’।খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় ছাত্রলীগ ক্যাডার বদররুল কারাগারে রয়েছে।

খাদিজার পিতা মাসুক মিয়া শুক্রবার বিকালে জানান, সিলেটে ফেরার পর বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছে খাদিজা। তিনি জানান, আগামী রোববার হত্যাচেষ্টা মামলার ভিকটিম হিসেবে সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে সাক্ষ্য দেবেন খাদিজা। এর আগে সাক্ষ্য দেয়ার কথা থাকলেও চিকিৎসকের ছাড়পত্র না পাওয়ায় আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি খাদিজা। এদিকে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, খাদিজা এখন অনেকটা সুস্থ। তিনি নিজের কাজ নিজেই করতে পারছেন এবং তার স্মৃতিশক্তিও ফিরে এসেছে।সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা গত বছরের ৩ অক্টোবর বিকেলে এমসি কলেজ পরীক্ষাকেন্দ্রে বিএ (পাস) পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়ার সময় হামলার শিকার হন। তাঁকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেন ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম। ঘটনার পর জনতা ধাওয়া করে বদরুলকে ধরে পুলিশে দেয়।

সংকটাপন্ন অবস্থায় খাদিজাকে প্রথমে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর খাদিজার অবস্থার উন্নতি হলে গত ২৮ নভেম্বর তাঁকে সিআরপিতে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে ১ ফেব্র“য়ারি এক সপ্তাহের জন্য বাড়ি গিয়েছিলেন খাদিজা।বৃহস্পতিবার সিআরপি কর্তৃপক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, খাদিজা এখন প্রায় সুস্থ। তিনি দু-এক দিনের মধ্যে বাড়ি ফিরতে পারবেন। তবে পূর্ণ স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে তাঁকে আরও কয়েক বছর চিকিৎসা নিতে হবে।খাদিজার ওপর হামলার ঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলাটি সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বদরুল এই মামলার একমাত্র আসামি।