আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি বলেছেন, জীবনে বড় হওয়ার জন্য কঠিন পরিশ্রমের কোন বিকল্প নেই। জীবনে বড় হতে হলে অসম্ভবকে সম্ভব করার প্রস্তুতি রাখতে হবে। জীবনে বড় হতে হলে কঠিন চ্যালেঞ্জ অতিক্রম করার সৎ সাহস অর্জন করতে হবে। চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নদীর ঢেউ। যে নদীর ঢেউ নেই সেই নদীর কোন মূল্য নেই। যে আকাশে মেঘ নেই সেই আকাশ আকাশ নয়। যে সাগরে ঢেই নেই সেটা কোন সাগর নেই। যে প্রকৃতিতে দূর্যোগ নেই সেটা কোন প্রকৃতি নয়।

তিনি তরুণদের উদ্দেশ্যে বলেন কোন অবস্থাতেই মনোবল হারাবেনা, নিজেকে দূর্বল ভাববে না। নিজে নিজের জীবনকে শেষ করে দিবে না। চেষ্টা করবে-লড়াই করবে, সাফল্য একদিন আসবেই। দারিদ্রকে- বেকারত্বকে পরাজিত করতে এরই নাম তারুণ্য।

তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন তোমরা পরীক্ষার্থী হবেনা, শিক্ষার্থী হবে। পরীক্ষার্থী হয়ে কোন রকমের সার্টিফিকেট নিয়ে কোন রকমে পরীক্ষায় পাশ করবে এ শিক্ষা কোন কাজে আসবে না। তাই শিক্ষার্থী হও। শিক্ষার্থীর মতো নিজেকে গড়ে তোল, পরীক্ষার্থী নয়। জীবরে জন্য শিক্ষাগ্রহণ কর, জীবিকার জন্য নয়।

তিনি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে তোমাদেরকে বলতে চাই ‘একজন মানুষের জীবনে সবচে বড় শক্তি হচ্ছে সততার শক্তি। তোমরা যারা শিক্ষাগ্রহণ করছো ডিসিপ্লিনটা মেনে চলবে, বড়দেরকে সম্মান করবে, মুরুব্বীদের সম্মান করবে, বাপ-মাকে যথাযথ সম্মান দেবে। তুমি যদি তোমার বাপ-মাকে সম্মান না দাও তুমি যখন বাপ-মা হবে তখন তোমার সন্তান তোমাকে সম্মান দেবে না। তিনি শিক্ষার্থীদের সৎ সাহস নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।

তিনি বলেন, একজন রাজনীতিকের জীবনে মানুষের ভালবাসার চেয়ে বড় সম্পদ আর কিছু নেই। বিল বোর্ডের ছবি একদিন মুছে যাবে, পোষ্টারের ছবি ছিড়ে যাবে, ব্যানারের ছবি ম্লান হয়ে যাবে, গেইটের ছবি ভেঙ্গে যাবে, বাগানের ফুল শুকিয়ে যাবে, পাথরের ছবি নাম খয়ে যাবে, হৃদয়ে লিখ নাম রয়ে যাবে। হৃদয়ে নাম-বেচে আছেন বঙ্গবন্ধু। হৃদয়ে নাম লিখেছেন বারে বারে- বেঁচে থাকবেন শেখ হাসিনা। ওই বিলবোর্ডের বড় বড় ছবি কাজে আসবে না।

নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা দয়া করে ছবি প্রদর্শনের চেয়ে একটু কাজে মনযোগী হোন। নেতাদের খুশি না করে, জনগণকে খুশি করার এজেন্ডা হাতে নিন। নেতাদের খুশি করে লাভ নেই। আপনি যাদের জন্য রাজনীতি করেন তাদের খুশি করেন। আপনার যারা ভোটার তাদেরকে আপনার খুশি করতে হবে। ভোটার যদি আপনাকে চায় আপনি আপনাকে অগ্রাহ্য করতে পারবো না। আমি যদি আমার পার্টিকে ভালবাসি জনপ্রিয় ব্যক্তিকে অগ্রাধিকার দিতেই হবে। আমার নেত্রীর নির্দেশে সেই ভাবে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

জাহাঙ্গীর আলম শিক্ষা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সেতুমন্ত্রী ওই সব কথা বলেন। গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আকম মোজাম্মেল হক, গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল, বঙ্গুবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. মোঃ মাহ্বুবর রহমান, গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান, গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন এলাকার তিন’শ মেধাবী শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা বৃত্তির দুই কোটি ২৫ লাখ টাকার চেক ও এক’শটি ল্যাপটপ প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত কয়েক হাজার শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর।