প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় নিয়ন্ত্রণহীনভাবে বাড়ছে হৃদরোগীর চিকিৎসায় ব্যবহৃত কার্ডিয়াক রিংয়ের দাম। শুল্কমুক্ত সুবিধায় আমদানি হলেও আন্তর্জাতিক বাজারের চেয়ে দেশে কয়েক গুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে কার্ডিয়াক রিং। দামের পাশাপাশি প্রশ্ন আছে এসব রিংয়ের মান নিয়েও। রোগীর রক্তনালি ৭০ শতাংশ কিংবা তার বেশি ব্লক হয়ে গেলে কার্ডিয়াক রিং বসানো হয়, চিকিৎসাবিজ্ঞানে যা করোনারি কার্ডিয়াক স্টেন্ট নামে পরিচিত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ ব্লক থাকলেও এ রিং বসানো হয়।

অনলাইন বিপণন প্লাটফর্ম আলিবাবার তথ্য অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিটি কার্ডিয়াক রিংয়ের মূল্য ৩৫০ থেকে ৩৯০ ডলার, বাংলাদেশি মুদ্রায় যার দাম পড়ে ২৮ থেকে ৩১ হাজার টাকা। অথচ ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনসহ সরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে এসব রিং বিক্রি হচ্ছে ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। আর বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় তা দেড় থেকে আড়াই লাখ টাকায়ও কিনতে হচ্ছে রোগীদের।ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক রুহুল আমিন এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথমেই আমদানিকারকদের নিবন্ধনের আওতায় আনার চেষ্টা হচ্ছে। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হলে ভ্যাট-ট্যাক্স অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রথম সচিব ফখরুল আলম বলেন, জনস্বাস্থ্য-সম্পর্কিত হওয়ায় কার্ডিয়াক রিং আমদানির ক্ষেত্রে সব ধরনের শুল্ক মওকুফ করেছে এনবিআর। শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে আমদানির পর অস্বাভাবিক মূল্যে কেউ এ ধরনের পণ্য বিক্রি করছে কিনা, সে ব্যাপারে এনবিআরের কাছে তথ্য নেই। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কেউ কম মূল্য ঘোষণায় পণ্য এনে বেশি দামে বিক্রি করলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে পারে এনবিআর।উল্লেখ্য, প্রতি বছরই দেশে বাড়ছে হৃদরোগীর সংখ্যা। ন্যাশনাল হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৫ সালে কেবল জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালের বহির্বিভাগে হৃদরোগের চিকিৎসা নিয়েছেন ২ লাখ ২২ হাজার ১৮৬ জন। এছাড়া ভর্তি ছিলেন ৬৩ হাজার ৩৯০ জন। তার আগের বছর হাসপাতালটির বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন ২ লাখ ৫৩৩ জন হৃদরোগী ও ভর্তি হন ৫৯ হাজার ২৮৩ জন। এছাড়া ২০১৩ সালে এ হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নেন ১ লাখ ৭২ হাজার ২৬৯ জন। ওই বছর ভর্তি ছিলেন ৪৩ হাজার ৩৪১ জন হৃদরোগী।