সম্পদের তথ্য দাখিল না করায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা এই আদেশ দেন। গ্রেফতারি পরোয়ানা দাখিলের জন্য রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্তকর্তাকে (ওসি) আগামী ১৪ মে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১২ সালের ১৫ জানুয়ারি সম্পদের হিসাব চেয়ে আসামিকে নোটিশ পাঠায় দুদক। পরে নোটিশের বিরুদ্ধে আসামি রিট করলে প্রক্রিয়াটি স্থগিত করেন হাইকোর্ট। পরবর্তীতে দুদক রিটের বিরুদ্ধে আপিল করলে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করেন আপিল বিভাগ। পরে ২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক আরসি মজুমদার রমনা থানায় আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের উপ-পরিচালক আব্দুস সাত্তার সরকার গত বছরের ১৯ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমানকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সম্পদের তথ্য গোপন মামলা চলবে বলেও রায় দিয়েছেন।

মামলাটির রুলের রায়ে বুধবার (১২ এপ্রিল) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। রুলের শুনানি শেষে গত ১০ জানুয়ারি যেকোনো দিন দেওয়া হবে জানিয়ে রায় ঘোষণা অপেক্ষমান রাখেন হাইকোর্ট।

গত বছরের ০২ নভেম্বর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চের একজন বিচারপতি এ মামলা শুনতে বিব্রতবোধ করে মামলাটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন। আইন অনুসারে পরবর্তীতে তৃতীয় বেঞ্চ গঠন করে শুনানির জন্য পাঠান প্রধান বিচারপতি। আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ একেএম মনিরুজ্জামান কবির।

২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। পরে একই বছরে জোবায়দা রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল করা হলেও হাইকোর্টের আদেশ বহাল রাখেন আপিল বিভাগ। কিন্তু এ মামলায় আসামিপক্ষ দুদককে পক্ষভুক্ত করেননি।

২০১৫ সালের ০২ এপ্রিল দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ দুদককে পক্ষভুক্ত করার আবেদন মঞ্জুর করেন।