প্রবল বর্ষণ ও উজানের ঢলে দেশের বিভিন্ন জায়গায় আবার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।নতুন করে প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখো মানুষ। দুর্গত এলাকায় দেখা দিয়েছে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীয় জলের অভাব। এদিকে,দেশের ৬৫টি নদ-নদীর পানি বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত হ্রাস পেয়েছে, বাড়ছে ২১টি এবং ৪টি নদীর পানি অপরিবর্তিত রয়েছে।নদ-নদীর পরিস্থিতি সম্পর্কে বন্যা পূর্বভাস ও সতর্কীরণ কেন্দ্রের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ কথা জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, ৯০টি পানি সমতল স্টেশনের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী একটি নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।ব্রহ্মপুত্র, যমুনা. পদ্মা ও সুরমা-কুশিয়ারা নদীসমুহের পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। যেখানে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড়ী এলাকায় অধিকাংশ প্রধান নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। অপরদিকে গঙ্গা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে।ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল হ্রাস আগামী ৭২ ঘন্টায় অব্যাহত থাকতে পারে।এদিকে গঙ্গা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি আগামী ২৪ ঘন্টায় অব্যাহত থাকতে পারে। এ সময় সুরমা-কুশিয়ারা নদীসমুহের পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত থাকতে পারে।সকাল ৯টা থেকে আজ সকাল ৯ পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় সিলেটে ১০৪ মি.লি. ভাগ্যকুল ৮২ দশমিক ৫ মি.লি. ঢাকা ৭২ মি.লি. এবং কানাইঘাটে ৪৮ মি.লি. বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।টানা বৃষ্টি ও নদীতে জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় যশোরে বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে ভবদহ অঞ্চলসহ তিন উপজেলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন লাখো মানুষ। ঘরবাড়ি ছেড়ে অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্র ও অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। জলাবদ্ধতার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে এসব অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।বন্যার পানিতে নষ্ট হয়েছে ফসলের ক্ষেত। ভেসে গেছে মাছের ঘের ও পুকুর। দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সঙ্কট।

যশোরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মাজেদুর রহমান খান বলেন, দুর্গত এলাকায় ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে পানি নিষ্কাশনেরও উদ্যোগ নিয়েছে। ফেনীর দাগনভূঁঞায় বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। ছোট ফেনী নদী ও কাটাখালীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা কবলিতদের অনেকেই শেল্টারসেলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এসব অঞ্চলে খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানীয়ের অভাব দেখা দিয়েছে।এদিকে, মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ভারী বর্ষন ও বানের পানিতে কাউয়াদিঘীর পাড়ের ২০টি গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী।প্রায় তিন মাস ধরে দফায় দফায় পানি বাড়ায় অনেকেরই ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। রয়েছে খাদ্য ও পানীয় জলের সঙ্কট। ত্রাণ দেয়া হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। রয়েছে গো-খাদ্যের তীব্র সঙ্কট। অপরিবর্তিত রয়েছে বড়লেখা, জুড়ি ও কুলাউড়ার হাকালুকি হাওড়ের বন্যা পরিস্থিতি।আর বুধবার দুপুর থেকে বৃষ্টি না থাকায় কুমিল্লা পয়েন্টে ডাকাতিয়া নদীর পানি কমেছে। জেলার চারটি উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়ছে।