গাজীপুরে মাস্টার্সের পরীক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে জেলা আওয়ামীলীগের পুর্ব ঘোষিত শনিবারের জনসভা স্থগিত করা হয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে জনসভাটি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ। সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হওয়ার পর সভা শুরুর মাত্র আড়াই ঘন্টা আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলীয় নেতাকর্মীরা জনসভা স্থগিতের বিষয়টি জানতে পারেন।

স্থানীয় নেতা কর্মীরা জানান, জনসভা অনুষ্ঠানের জন্য গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ মাঠে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছিল। শনিবার দুপুর দুইটায় এ জনসভা শুরু হওয়ার কথা ছিল। এ জনসভায় অংশ নিতে সকাল ১০টার পর থেকেই বিভিন্নস্থান হতে নেতা-কর্মীরা সভাস্থল ও আশেপাশের এলাকায় এসে জড়ো হতে শুরু করে। এসময় বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দলীয় নেতাকর্মীরা জনসভা স্থগিতের বিষয়টি জানতে পারেন এবং দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষার পর তারা এলাকা ত্যাগ করতে শুরু করেন।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ জাতীয় পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট হারিছ উদ্দিন আহমদ ও গাজীপুর মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান জানান, জাতীয় বিশ^বিদ্যালয়ের ¯œাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা অনুষ্ঠানের কথা রয়েছে ওই কলেজ কেন্দ্রে। বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ বিষয়টি জেনে পরীক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে জনসভাটি স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন। শনিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।

ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক জেরিনা সুলতানা বলেন, জনসভার কারণে ১ হাজার ৬’শ পরীক্ষার্থীর ভেন্যু পরিবর্তন করে চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার কয়েকটি কলেজে স্থানান্তর করা হয়েছে। জনসভা স্থগিত হলেও পরিবর্তিত ভেন্যুতেই শনিবারের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

এব্যাপারে গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন, জনসভা স্থগিতের সংবাদ জেলার সর্বত্র পৌছে দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করে স্থগিত হওয়া এ জনসভা আয়োজন করা হবে।

প্রসঙ্গত, গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে জনসভাটি শনিবার ভাওয়াল বদরে আলম সরকারী কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। এ সমাবেশকে সফল করতে প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে জেলাব্যাপী পোষ্টারিং, মাইকিং ও সভাসহ নানাভাবে প্রচার চালানো হয়েছিল। গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন সবুজেরর আবেদনের ভিত্তিতে ভাওয়াল বদরে আলম সরকারী কলেজ কর্তৃপক্ষ জনসভার অনুমতিও দিয়েছিলেন। আওয়ামীলীগের এ জনসভার কারণে কোন গণবিজ্ঞপ্তি ছাড়াই পরীক্ষার কেন্দ্র পরিবর্তন করে কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। এনিয়ে শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ বিভিন্ন মহলে প্রচন্ড ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

এ জনসভায় গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ্যাডভোকেট আ.ক.ম মোজাম্মেল হক এম.পি’র সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি’র উপস্থিত থাকার কথা ছিল। এছাড়াও সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট রহমত আলী ও দীপু মনি এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি এমপি, সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল ও সিমিন হোসেন রিমিসহ আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত থাকার কথা ছিল।